মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

মাঝারী মাত্রার ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে কক্সবাজার অন্ঞ্চল। আবহাওয়া অধিদপ্তরের বিশ্বস্ত একটি সুত্র সিবিএনকে এতথ্য দিয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর বাংলাদেশকে ৩টি পৃথক ভূকম্পন জোনে বিভক্ত করেছে। তারমধ্যে-উচ্চমাত্রার অতি ভূকম্পন ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা গুলো হচ্ছে-সিলেট, ময়মনসিংহ, ঢাকা, কুমিল্লা, রংপুর ও পার্বত্য ৩ টি জেলার কিছু অন্ঞ্চল এবং ভারতের উত্তর-পূর্বান্ঞ্চলীয় রাজ্য মেঘালয় ও আসাম। এরমধ্যে সিলেট বিভাগের ৪ টি জেলা, ময়মনসিংহ বিভাগের ৫ টি জেলা এবং ঢাকা বিভাগের পুরো কিশোরগঞ্জ জেলা, টাঙ্গাইল, গাজীপুর, নরসিংদী জেলার আংশিক ও কুমিল্লা বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা, খাগড়াছড়ি ও রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলার উত্তরাংশ উচ্চমাত্রার ভূকম্পন ঝুঁকিতে রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূমিকম্প নিয়ে গবেষনা করা তথ্য মতে, মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকির এক নম্বরে রয়েছে কক্সবাজার অন্ঞ্চল। এছাড়া ঢাকা, মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী, নোয়াখালী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, রাজশাহী, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জের অংশ বিশেষ, চট্টগ্রাম ও বান্দরবান অন্ঞ্চলও মাঝারি মাত্রার ভূকম্পন ঝুঁকিতে রয়েছে। ভূমিকম্পের অপেক্ষকৃত কম ঝুঁকিতে রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলের পুরো খুলনা ও বরিশাল বিভাগ।
বাংলাদেশের কোন এলাকাগুলো কতটা ভূমিকম্প ঝুঁকিতে রয়েছে-আবহাওয়া অধিদপ্তর তার একটি ম্যাপ অংকন করে দিয়েছে। তারমধ্য লাল রং চিহ্নিত অংশ হচ্ছে-বেশী ভূকম্পন ঝু্ঁকিপূর্ণ, গোলাপি রং চিহ্নিত অংশ হচ্ছে-মাঝারি ভূকম্পন ঝুঁকিপূর্ণ ও হলুদ রং চিহ্নিত অংশ হচ্ছে-অপেক্ষকৃত কম ভূকম্পন ঝুঁকিপূর্ণ অন্ঞ্চল।
কোনো স্থানে ভূকম্পনের জন্য ফল্ট লাইন এবং টেকনিক স্ট্রেস ফিল্ড গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। আবহাওয়া অধিদপ্তরের গবেষকদের মতে, সাধারণত বড় ধরনের ভূকম্পন হয়ে থাকে প্লেট বাউন্ডারির মধ্যে। যদিও বাংলাদেশ প্লেট বাউন্ডারি এলাকার মধ্যে নয়, তারপরও ভূপ্রাকৃতিক অবস্থান ও বিন্যাসের স্বকীয়তা বাংলাদেশকে ভূমিকম্প মন্ডলের আশপাশেই ফেলেছে। বাংলাদেশকে ভূকম্পনের যে তিনটি জোনে ভাগ করা হয়েছে-সেদিক থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জোন হিসেবে উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ১৯৭৬ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত যতবার রিক্টরস্কেলে পাঁচ বা তার বেশি মাত্রায় ভূকম্পন অনুভূত হয়েছে, তার প্রায় সবক’টির উৎপত্তিস্থল সিলেট, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও কক্সবাজার এলাকা থেকে হয়েছে। গবেষকদের ধারণা অনুযায়ী, এসব অঞ্চলে ভবিষ্যতে আরও বেশি মাত্রার ভূকম্পনের পূর্বাভাস উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী-আসাম-বাংলা অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল ১৮৯৭ সালের ১২ জুন। এজন্য ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম, মেঘালয়ের সীমান্তসংলগ্ন সিলেট, ময়মনসিংহ অঞ্চলে উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকি খুব বেশী।