চকরিয়া প্রতিনিধি:

কক্সবাজারের চকরিয়ায় রাতের আঁধারে একদল দুর্বৃত্ত জিয়াবুল ইসলাম (৩২) নামের এক কাঠ ব্যবসায়ীকে ধারালো অস্ত্রদিয়ে কুপিয়ে ও মারধরে গুরুতর জখম করে ২ লাখ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় মামলা করায় বাদীকে প্রাণনাশের হুমকির অভিযোগ উঠেছে। এনিয়ে আক্রান্ত ব্যবসায়ী চরম আতঙ্কে ভুগছে বলে দাবী করেন। ছিনতাইয়ের শিকার ব্যবসায়ী জিয়াবুল ইসলাম উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডস্থ ষোলহিচ্ছা গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে। এ ঘটনায় আক্রান্ত ব্যবসায়ী বাদী হয়ে ৩ জনকে আসামী করে আরো তিনজনকে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে।

সূত্রে জানাগেছে, ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ষোলহিচ্ছা গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে কাঠ ব্যবসায়ী জিয়াবুল গত ৩০মে রাত্রে দুই লাখ টাকা নিয়ে তার বাড়িতে থেকে মোটরসাইকেল যোগে ডুলাহাজারা ইউপি সদস্য সোনামিয়ার কাছে যাচ্ছিল। ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৭টার দিকে জিয়াবুল ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডস্থ বালুরচর নজির হোছনের বাড়ির চলাচল রাস্তা মাথায় পৌছলে পূর্বথেকে উৎপেতে থাকা স্বশস্ত্র একদল দূর্বৃত্ত অতর্কিতভাবে পথ গতিরোধ করে আক্রমণ চালিয়ে ওই কাঠ ব্যবসায়ীকে ধারালো অস্ত্রদিয়ে কুপিয়ে ও মারধরে গুরুতর জখম করে ২ লাখ টাকা, মোবাইলসহ বিভিন্ন মালামাল ছিনিয়ে নেয়। এসময় তাদের সাথে প্রতিবাদ করলে চিনতাইকারীরা দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্রের আঘাতে হাতে ও শরীরে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে ব্যবসায়ী জিয়াবুলকে। ওই সময় ছিনতাইয়ের কবল থেকে বাঁচতে ব্যবসায়ী জিয়াবুল শোর চিৎকার করলে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসার সাথে সাথে ঘটনাস্থল থেকে ছিনতাইকারীরা পালিয়ে যায়। এসময় আহতকে স্থানীরা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করে। ছিনতাইয়ের এ ঘটনা নিয়ে আক্রান্ত ব্যবসা বাদী হয়ে ৩ জনকে আসামী করে আরো ২/৩ জনকে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে চকরিয়া থানায় গত ১ জুন মামলা দায়ের করেছে। মামলা হওয়ার পর থেকে অভিযুক্তরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। প্রতিনিয়ত মামলার বাদীকে প্রাণে হত্যা করার হুমকি দিচ্ছে বলে ভুক্তভোগী দাবী করেছেন। থানায় দায়েরকৃত মামলার আসামীরা হলেন, ডুলাহাজারা ইউনিয়নের ষোলহিচ্ছা এলাকার মনজুর আলমের ছেলে মো. ছাদেক, একই এলাকার জাহেদুল ইসলামের ছেলে আবদুল মজিদ ও মনজুর আলমের ছেলে রবিউল আলমসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩জনকে আসামী করা হয়েছে।

মামলার বাদী জিয়াবুল বলেন, অভিযুক্তরা এলাকায় ইয়াবা ব্যবসাসহ নানা ধরণের অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত। তাদের নিজস্ব একটি অপরাধ কর্মকান্ডের গ্রুপ রয়েছে। তারা ষোলহিচ্ছা ও বালুরচর এলাকায় প্রতিনিয়ত অপরাধ কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের অপরাধের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খুললেই হামলা চালানো হয়। টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা নিয়ে মামলা করায় তারা প্রতিনিয়ত আমাকে প্রাণে হত্যা করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে তাদের হুমকি ও ভয়ভীতিতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। এনিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

ডুলাহাজারা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ নুরুল আমিন বলেন, কুপিয়ে ও মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নেয়ার ঘটনা নিয়ে থানায় মামলা করার পর থেকে ওই ব্যবসায়ীকে প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হচ্ছে বলে সে আমাকে অবহিত করেছে। বিষয়টি পুলিশ প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। মামলার অভিযুক্ত আসামীরা এলাকার মাদক ব্যবসার সাথে শতভাগ জড়িত। তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় ও পরিষদের মধ্যে বিভিন্ন সালিশ বিচারও করা হয়েছে। তাদের অত্যচারে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে এলাকাবাসী। এসব আসামীর বিরুদ্ধে কেউ সাহস করে প্রতিবাদ করলে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করা হয়। এলাকার মাদক নির্মূল বিষয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় উত্থাপন করা হয়েছে বলে তিনি জানান।