সিবিএন ডেস্ক:
বঙ্গোপসাগরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশসহ তিনটি দেশের সেনাকে অর্থায়নের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের কাছে ৩০ মিলিয়ন ডলার চেয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। অপর দুই দেশ হলো শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপ। বুধবার (১২ জুন) দেশটির দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক স্টেট ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র কর্মকর্তা এলিস জি ওয়েলস এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর সম্পর্কিত বিদেশ বিষয়ক সাবকমিটিতে এই কথা জানিয়েছেন।

অবকাঠামো, প্রবৃদ্ধি ও আঞ্চলিক যোগাযোগ বৃদ্ধিতে ট্রাম্প প্রশাসন ইতোমধ্যে ৬৪ মিলিয়ন ডলারের ঘোষণা দিয়েছে। ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ’ নামে এই ৩০ মিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত চাওয়া হয়েছে।

উভয় উদ্যোগই নেওয়া হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায় তিন দেশে চীনের প্রভাব কমানোর লক্ষ্যে।

এলিস জি ওয়েলস বলেছেন, ‘অটেকসই অবকাঠামো প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা আমাদের সহযোগী রাষ্ট্রকে চীন অথবা অন্য রাষ্ট্রের ঋণের বোঝায় নিমজ্জিত হতে দিতে পারি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভের ব্যাপারে সমর্থনের জন্য আমরা কংগ্রেসকে অনুরোধ করেছি। এই অর্থ খরচের মাধ্যমে জলাভূমি ও জলসীমান্তে শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের সক্ষমতা বাড়ানো হবে।’

‘দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ এবং বাজেট ২০২০’ বিষয়ে বৃহস্পতিবার বিদেশ বিষয়ক কমিটির সাব কমিটিতে এই বিষয়ে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে।

ওয়েলস সংসদ আইনপ্রণেতাদের বলেছেন, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে বাংলাদেশের জন্য সর্ববৃহৎ সহযোহিতার প্রস্তাব দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। ১৭ কোটি জনসংখ্যা ও ৬ এর বেশি টেকসই প্রবৃদ্ধির বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর জন্য বড় বাজার হিসেবে অভিহিত করেছেন তিনি।

তিনি আরও বলেছেন, ‘বাংলাদেশের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন এবং নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক বিরোধীদের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চর্চার পথ রুদ্ধ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আমরা প্রকাশ্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছি। প্রত্যেক বৈঠকেই আমরা এ ব্যাপারে কথা বলেছি।’

মিয়ানমারে সহিংসতার শিকার হওয়া ১০ রাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভূমিকার কথাও উল্লেখ করেছেন ওয়েলস। তিনি জানান, ২০১৭ সাল থেকে সৃষ্ট রোহিঙ্গা সমস্যা নিরসনসহ বিভিন্ন কারণে স্টেট ডিপার্টমেন্ট ও ইউএসএএইড ৪৯৪ মিলিয়ন ডরারের বেশি মানবিক সাহায্য দিয়েছে বাংলাদেশে, এরমধ্যে শুধু রোহিঙ্গাদের জন্যই দিয়েছে ৪৫১ মিলিয়ন ডলার।

বিভিন্ন কারণে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে একটি নিয়মতান্ত্রিক সিস্টেমের কথা ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন, যেখানে উন্মুক্ত বাণিজ্য ও চলাফেরার ব্যবস্থা থাকবে। গণতন্ত্র থাকবে। দ্বন্দ্ব নিরসনে শান্তিপূর্ণ ব্যবস্থা থাকবে। এসব ব্যবস্থা নিশ্চিত করা গেলে এই অঞ্চলে বসবাসকারী পৃথিবীর প্রায় অর্ধেক মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে বলে জানিয়েছেন ওয়েলস।