জিএএম আশেক উল্লাহঃ
ফেতনা সৃষ্টি করা যাবে না। ঈদের নামাজ রাষ্ট্রীয় নামাজ। রাষ্ট্রের সিদ্ধান্ত মেনে এটা আদায় করতে হবে। আমরাও তাই করে আসছি। তবে, চাঁদ দেখা নিয়ে বিতর্কের অবসান হওয়া জরুরী।
মঙ্গলবার মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই ঈদ পালিত হয়েছে। বুধবার ভারত ও পাকিস্তানেও পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশে বৃহস্পতিবার পালিত হবে বলে প্রথমে রাষ্ট্রীয় ঘোষণা হয়। দেশের অনেক স্থানে মাকিং করে বুধবার ঈদের ঘোষণা দেয়ায় অনেকে তারাবিহ ও এতেকাফ ছেড়ে বাসায় চলে গেছেন। কি যে অবস্থা!
অবশেষে রাত ১১ টার দিকে সরকারের ঘোষণা আসে, ঈদুল ফিতর বুধবার।
তাই স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে রমজান মাস কয়টি? সম্ভবত ‘রমজান মাস সারা পৃথিবীর জন্য একটি। এমন নয় যে সৌদির জন্য একটি, বাংলাদেশের জন্য অন্যটি অর্থাৎ একদিন পর শুরু হওয়া মাসটি’। ‘দিন সারা পৃথিবীর জন্য ঠিক থাকবে কিন্তু সেহেরী এবং ইফতারের সময় পরিবর্তন হবে’ ‘মোদ্দা কথা হচ্ছে রমজান মাস একেক দেশের জন্য এক একটি নয়’ সব মুসলিমদের জন্য একটি রমজান মাস একসাথে শুরু হয়’। নতুন চাঁদ দেখা নিযে শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বব্যাপী বির্তক চলছে। এ বিষয়ে ও আই সি এর উদ্যোগে ইতিপূর্বে ধর্মীয় পন্ডিত ও নামকরা আলেমগণ পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন একটা মুসলিম দেশে চাঁদ দেখা গেলে অন্য দেশেও সেটা মানা হবে। কিন্তু তাতে বিভক্তির অবসান হয়নি।
২০১৬ সালের মে মাসে ইস্তা্ম্বুলে অনুষ্ঠিত ইন্টারন্যাশনাল হিজরী ক্যালেন্ডার ইউনিয়ন কংগ্রেস শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে এই বিভক্তি নিরসনের উদ্যোগ নেয়া হয়। সম্মেলনে অধিকাংশ দেশের প্রতিনিধি এবং বিশেষজ্ঞ একক হিজরি বর্ষপঞ্জির পক্ষে মতামত ব্যক্ত করেছেন।
আমাদের নবী (সঃ) শুধু আরব দেশের জন্য নন। তিনি বিশ্বনবী অর্থাৎ সারা বিশ্বের। ১৪০০ বছর পূর্বে পুরো বিশ্ব আজকের মত তাৎক্ষণিক এবং দ্রুত যোগাযোগের আওতায় ছিল না। তাই বিশ্বের কোন দেশে চাঁদ দেখা গেলে তা অন্য দেশের মানুষের জানার সুযোগ ছিলনা। জ্যোতির্বিজ্ঞান,ডিজিটাল প্রযুক্তিসহ বিজ্ঞান আজ অনেক উন্নত এবং বিকশিত। তাই বিশ্বব্যাপী চাঁদ দেখা নিয়ে বিতর্কের অবসান কল্পে বিজ্ঞানের সাহায্য নেয়া যেতে পারে। বাংলাদেশের পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত দেশ সমুহ যেমন ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া সৌদির সাথে মিল রেখে রোজা এবং ঈদ উদযাপন করেন। তাহলে বাংলাদেশে কেন একদিন পর রোজা ঈদ করবে ? বাংলাদেশ এখন স্যাটেলাইট প্রযুক্তির যুগে প্রবেশ করেছে। এই প্রযুক্তি দিয়েই তো এর অবসান করা যায়।
একসময় পশ্চিম পাকিস্তানে চাঁদ দেখা গেলে তৎকালিন পূর্ব পাকিস্তান তথা বাংলাদেশে চাঁদ দেখা না গেলেও ঈদ রোজা পালন করত বাংলাদেশের মুসলিমরা।
এই বিভক্তি আর কত দিন থাকবে মুসলিমদের মধ্যে ?

-ফেসবুক থেকে নেয়া।