নিজস্ব প্রতিবেদক:

২৮ মে মঙ্গলবার দেশে পালিত হয়েছে ‘নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস ২০১৯।  এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ‘মর্যাদা ও অধিকার – স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসূতি সেবার অঙ্গীকার’। এই স্লোগানকে ধারণ করে  হোপ ফাউন্ডেশন, চেইন্দায় পালিত হয়েছে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস ২০১৯। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৭ সালে ২৮ মে-কে নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস ঘোষণা করেন।

দুপুরে হোপ কনফারেন্স রুমে হোপ ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডাইরেক্টর কে এম জাহিদুজ্জামানের সভাপতিত্বে এক বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মিডওয়াইফারি কোর্সের ছাত্রীরা, শিক্ষক-শিক্ষিকা, হোপ হসপিটালের চীফ মেডিকেল অফিসার, সিনিয়র কনসালটেন্টসহ অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারী।

উক্ত অনুষ্ঠানে মিডওয়াইফারি অধ্যয়নরত ছাত্রীদের অংশগ্রহনে ‘মর্যাদা ও অধিকার- স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রসূতি সেবার অঙ্গীকার’ বিষয়ের উপর এক বির্তক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।

উল্লেখ্য, বিট্রিশ সরকারের অর্থায়নে ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিগরি সহায়তায় হোপ ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত ‘ডেভলপিং মিডওয়াইভ প্রজেক্ট’ এর আওতায় ২০১২ সাল থেকে ‘ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি’ কোর্সটি চালু আছে।

হোপ ফাউন্ডেশন মাতৃত্বকে নিরাপদ করার জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিষয়ক কার্যক্রমসমুহ ১৯৯৯ সাল থেকে কক্সবাজারের বিভিন্ন প্রান্তে পরিচালনা করে আসছে। হোপ ফাউন্ডেশন প্রত্যন্ত এলাকার মায়েদের সেবা দিতে স্থাপন করেছে হোপ বার্থ/ডেলিভারী সেন্টার, হোপ মেডিকেল সেন্টার, এসআরএইচ সেন্টারসমুহ আর এই সকল স্বাস্থ্যকেন্দ্র্রসমুহ নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে হোপ ফাউন্ডেশন এবং সরকারী প্রতিষ্ঠান থেকে পাশকৃত মিডওয়াইফরা। মিডওয়াইফরা আমাদের সমাজের প্রচলিত কোন ধাত্রী নয়। তারা তাদের অর্জিত জ্ঞান, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতার নিয়ে মা ও শিশু স্বাস্থ্য সুরক্ষায় তাদের পাশে গিয়ে দাড়ায়।

নিরাপদ মাতৃদিবসের আালোচনাকালে হোপ হাসপিটালের সার্জারি বিভাগের প্রধান ও সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. নিন্ময় বিশ্বাস বলেন, আজ আমরা এইখানে সমবেত হয়েছি মাতৃত্বকে নিরাপদ করার প্রত্যয় নিয়ে আর সেই লক্ষ্যে হোপ ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ সরকারের পাশাপাশি কাজ করে চলেছে এবং সফলতার সাথেই কক্সবাজারের প্রত্যন্ত এলাকাতে প্রশিক্ষিত মিডওয়াইফদেরকে সঙ্গে নিয়ে মাতৃ ও শিশু মৃত্যুহার রোধে গুরুত্বপূর্ন অবদান রাখছে। হোপ হাসপাতালের চীফ মেডিকেল অফিসার ডা. মোহাম্মদ ইসমাইল বলেন, মাতৃত্বকে নিরাপদ করতে তথা মাতৃ ও শিশু মৃত্যুর হার কমাতে আরো বেশী মিডওয়াইফ প্রয়োজন। একজন মায়ের সব থেকে গুরুত্বপূর্ন সময়ে পাশে থেকে সেবা দিতে পারে মিডওয়াইফ।

সমাপনি বক্তব্যে হোপ ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডিরেক্টর কে এম জাহিদুজ্জামান বলেন, নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে পারলেই মাতৃমৃত্যু এবং নবজাতকের মৃত্যু হার কমানো সম্ভব আর এর জন্য দরকার দক্ষ মিডওয়াইফারি সেবা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১০ সালের জাতিসংঘে মিডওয়াইফ তৈরির অঙ্গীকার করেন আর এজন্যই হোপ ফাউন্ডেশন ২০১২ সালে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহায়তায় মিডওয়াইফারি শিক্ষা কার্যক্রম চালু করে। আর এই মিডওয়াইফরাই রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মায়েদের নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করতে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছে। উক্ত অনুষ্ঠান শেষে বির্তকে বিজয়ী দলকে পুরস্কার প্রদান করা হয়।