সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি :

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা বীরেন্দ্রনগর সীমান্ত দিয়ে সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে প্রায় ৪কোটি টাকা মূল্যের ২হাজার মেঃ টন চুনাপাথর পাচাঁরের খবর পাওয়া গেছে। সেই সাথে চোরাচালানীরা সিন্ডিকেডের মাধ্যমে স্থানীয় এলাকার রাস্তা মেরামতের নাম করে চুনাপাথর পাঁচার করার পর পুলিশ,বিজিবি,র‌্যাব ও সাংবাদিকদের নাম ভাংগিয়ে লক্ষলক্ষ টাকা চাঁদা উত্তোলন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এব্যাপারে বাগলী শুল্কস্টেশনের ব্যবসায়ী ও রংঙ্গাছড়া এলাকার লোকজন জানায়,জেলার তাহিরপুর উপজেলার বীরেন্দ্রনগর সীমান্তের রংঙ্গাছড়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে চিহ্নিত চোরাচালানী মস্তোফা মিয়া মস্তো,একই গ্রামের মৃত আব্দুল মান্নান ছেলে আলী হোসেন,বীরেন্দ্রনগর গ্রামের মৃত লাল মিয়ার ছেলে হযরত আলী ও মৃত জামাল মিয়ার ছেলে মঞ্জুল মিয়া,মজিবুর মিয়া নিজেদেরকে সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের অধিনায়কের সোর্স ও সংরক্ষিত আসনের মহিলা এমপি শামীমা শাহরিয়ারের কর্মী পরিচয় দিয়ে রংঙ্গাছড়া এলাকা দিয়ে প্রতিদিন ১০টি ট্রলি দিয়ে ভারত থেকে অবৈধভাবে চুনাপাথর পাচাঁর শুরু করে। প্রথমে তারা বাগলী শুল্কস্টেশন ও স্থানীয় এলাকার রাস্তা মেরামতের কথা বলে ১৫-২০ট্রলি চুনাপাথর ভারত থেকে পাচাঁর করে এলাকার বিভিন্ন জায়গাতে নিয়ে মজুত করে রাখে। এসময় বাগলী এলসি পয়েন্টের মাঝের কান্দা নামক এলাকার আফসার আলী নিজেকে সীমান্তের ১১৯৩নং পিলার সংলগ্ন জিরো পয়েন্টের খাস জায়গার মালিক দাবী করে। পরে চোরাচালান সিন্ডিকেডের সদস্য বিজিবি সোর্স আলী হোসেন ও পল্লী চিকিৎসক মনির সরকারী খাস জায়গার মালিক দাবীদার আফসার আলীর সাথে ৩০হাজার টাকার বিনিময়ে চুক্তি করে তাকে ১৫হাজার টাকা দেয়। এবং অবাধে ভারত থেকে অবৈধ ভাবে চুনাপাথর পাচাঁর করে ১ ট্রলি চুনাপাথর থেকে বিজিবির নামে ২০টাকা,থানার নামে ২০টাকা,স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকদের নামে ১০টাকা,বাগলী কয়লা ও চুনাপাথর আমদানী কারক সমিতির নামে ১০টাকা,বিজিবি অধিনায়কের নামে ২০টাকা,সোর্সদের নিজের নামে ১০টাকাসহ মোট ১২০টাকা করে চাঁদা উত্তোলন করে সোর্স পরিচয়ধারী চোরাচালানী মস্তোফা মিয়া মস্তো ও বাগলী কয়লা-চুনাপাথর আমদানী কারক সমিতির সচিব আকবর মিয়া। আর প্রতিদিন পাচাঁরকৃত অবৈধ চুনাপাথরের হিসাব বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের জিরো পয়েন্টে বসে খাতায় লিখে রাখে চোরাচালান সিন্ডিকেডের সদস্য আলমগীর,সেলিম ও মিন্টু। বড়ছড়া ও চারাগাঁও শুল্কস্টেশনের ব্যবসায়ী রহিম উদ্দিন,আব্বাস আলী,দিন ইসলাম,রহমত আলী,সবুজ মিয়া,নিয়ামত উল্লাহসহ আরো অনেকেই বলেন,বিজিবির সহযোগীতায় গত ২৭.০৪.১৯ইং হতে আজ ২৪.০৫.১৯ইং শুক্রবার পর্যন্ত গত ২৭দিনে প্রায় ২হাজার মেঃ টন চুনাপাথর অবৈধভাবে পাচাঁর করে সোর্স মস্তোফা মিয়া মস্তো ও পারুল খাসহ তাদের সিন্ডেকেডের অন্যান্য সদস্যরা নিজেরাই নৌকা বোঝাই করে নদী পথে এলাকার বাহিরে নিয়ে বিক্রি করে। উপরের উল্লেখিত চোরাচালানীরা সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে গত কয়েক বছরে হয়েছে কোটিপতি। কিন্তু সরকারের এই রাজস্ব উদ্ধার করাসহ চোরাচালানীদের অবৈধ কর্মকান্ড বন্ধ করার জন্য আজ পর্যন্ত নেওয়া হয়নি আইনগত কোন পদক্ষেপ। এব্যাপারে বাগলী শুল্কস্টেশনের কয়লা ও চুনাপাথর আমদানী কারক সমিতির সভাপতি খালেক মাস্টার বলেন,সিন্ডিকেডের মাধ্যমে অনেক কিছুই হয় কিন্তু আমি এসব অবৈধ কাজের সাথে জড়িত না,আমাকে ২দিনের সময় দিন এব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়ে আপনাকে সব জানাব। বীরেন্দ্রনগর বিজিবি কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার ফরিদ বলেন,রাস্তা মেরামতের জন্য কিছু চুনাপাথর সংগ্রহ করা হয়েছে এবং বিজিবি দাড়িয়ে থেকে এসব চুনাপাথর ভারত থেকে আনা হয়েছে। সুনামগঞ্জ ২৮ব্যাটালিয়নের বিজিবি অধিনায়ক মাকসুদুর আলম বলেন,সীমান্ত এলাকায় আমার কোন সোর্স নেই,সীমান্ত চোরাচালান বন্ধের জন্য প্রয়োজনী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

উল্লেখ্য,এর আগে গত বছর সোর্স মস্তোফা মিয়া মস্তো,আলী হোসেন,হযরত আলী,লিটন মিয়া,নজরুল মিয়া ও মঞ্জুল মিয়াগং প্রায় ১০কোটি টাকার কয়লা ও চুনাপাথর পাচাঁর করেছে। সরকারের লক্ষলক্ষ টাকা রাজস্ব উদ্ধার করাসহ উপরের উল্লেখিত চোরাচালানীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানিয়েছেন সুনামগঞ্জ জেলাবাসী।