আমাদের সময় : আনসার বাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে চাকরি করেন মীর কাশেম। কিন্তু তার জীবনযাত্রা দেখে তা বোঝার উপায় নেই। প্রতিসপ্তাহে বিমানে কক্সবাজার-ঢাকা যাতায়াত করেন তিনি। ঢাকায় এসে থাকেন বিভিন্ন বিলাসবহুল তারকা মানের হোটেলে।

স্বাভাবিকভাবেই তার এই বিলাসী জীবনযাপনের পেছনে অর্থের জোগান কোথা থেকে আসত, তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছিল অনেকের মনে। তবে শেষ পর্যন্ত নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি কাশেম। ইয়াবা ব্যবসার অভিযোগে সম্প্রতি তিনি ধরা পড়েছেন র‌্যাবের জালে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে মিলেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য।

র‌্যাবের সূত্র জানায়, মীর কাশেম কক্সবাজার জেলা আনসারে কর্মরত। প্রতিসপ্তাহে এসএ পরিবহনের কুরিয়ারে ইয়াবার চালান ঢাকায় পাঠালেও নিজে আসতেন বিমানে। গত রবিবার দুপুরে উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের আলাওল অ্যাভিনিউয়ের ২০ নম্বর বাড়ির এসএ পরিবহনের অফিসে অভিযান চালায় র‌্যাব। এ সময় এক লাখ পিস ইয়াবাসহ কাশেম ও তার আরেক সহযোগী মোরশেদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা দুজনই কক্সবাজার থেকে পাঠানো ইয়াবার চালান খালাস করতে উত্তরার ওই এসএ পরিবহনের কাউন্টারে এসেছিলেন। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য র‌্যাব এসএ পরিবহনের নির্বাহী পরিচালক, উত্তরা শাখার ম্যানেজার ও সহকারী ম্যানেজারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।

র‌্যাব জানায়, এসএ পরিবহনের মাধ্যমে নিয়মিত ইয়াবা আসার তথ্য পেয়েছেন তারা। প্রতিষ্ঠানটির কর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ ইয়াবা কারবারে যুক্ত থাকতে পারেন। এ ছাড়া এসএ পরিবহনে পণ্য স্ক্যানিংয়ের কোনো যন্ত্রপাতি নেই। ফলে অস্ত্র-বিস্ফোরকসহ যে কোনো ধরনের জিনিস অনায়াসে আনা-নেওয়ার মতো ঝুঁকি রয়েছে।

র‌্যাব জানায়, এর আগেও আনসার সদস্য মীর কাশেমকে ২০১৫ সালে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকা থেকে ১৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করেছিল পুলিশ। কিন্তু জামিনে বেরিয়ে তিনি ফের একই কাজে যুক্ত হন। তার এই ইয়াবা সিন্ডিকেটের নেটওয়ার্ক অনেক বিস্তৃত।

এ বিষয়ে র‌্যাব ৩-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এমরানুল হাসান বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য এসএ পরিবহনের তিন কর্মকর্তাকে আনা হয়েছিল। তদন্তের পর বিস্তারিত বলা যাবে এই ঘটনার সঙ্গে আর কারা জড়িত।