মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান)
লামার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের হায়দারনাশী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারকারীকে নিয়োগ না দিয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকারকারীকে নিয়োগ দেওয়ায় পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে এবং অভিযোগ তুলেছেন বিভিন্ন মহল।
বান্দরবান জেলা শিক্ষা অফিসার সোমা রানী বড়ুয়া জিজ্ঞাসায় জানিয়েছেন, নিয়ম মোতাবেক দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার এমপিও হবে। এখন অভিযোগ তুলে কোন লাভ নাই। অভিযোগকারীদেরকে পুলিশে দেওয়া উচিত !
জানা গেছে, হায়দারনাশী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারি করলে ২৬ জন প্রার্থী আবেদন জমা দেন। মো. আমিনুল হক নামে এক প্রার্থী জানান, যোগ্য প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও তার কাছে ইন্টারভিউ কার্ড প্রেরণ করা হয়নি। একই অভিযোগ করেছেন আরও অনেক চাকরি প্রার্থী।
নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ও বিদ্যালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. সাইফুল ইসলাম বলেছেন, ২২ জনের কাছে নিয়োগ পরীক্ষার ইন্টারভিউ কার্ড প্রেরণ করা হলেও ৯ জন প্রার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছেন। নিয়োগ পরীক্ষার যাবতীয় ফাইল ও কাগজপত্র বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির সংরক্ষণে এবং নিয়ন্ত্রণে ছিল।
নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকারকারী রফিকুল ইসলাম জানান, নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করার পরেও অজ্ঞাত কারণে তার কাছে নিয়োগপত্র প্রেরণ করা হয়নি এবং তিনি কোন নিয়োগপত্র পাননি।
নিয়োগ কমিটির সদস্য ও লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মোজাম্মেল হোসেন সাংবাদিককে জানান, প্রথম স্থান অধিকারকারীকে নিয়োগ প্রদান করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও নিয়োগ কমিটির সভাপতি ওয়াহিদুল ইসলাম বলেছেন, আমি প্রথম স্থান অধিকারকারীকে মোবাইল করেছি। তিনি কোন ধরণের রেসপন্স করেনি ও যোগাযোগ করে নাই। এই জন্য তাকে নিয়োগ দেওয়া হয় নাই।
২য় স্থান অধিকারকারী ও নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির জানান, বিদ্যালয় সভাপতি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমি চাকরি করব কি না জিজ্ঞাসা করেন। আমি সম্মতি জানালে তিনি নিয়োগপত্র পাঠান। আমি একটি চাকরি ছেড়ে এই চাকরিতে যোগদান করেছে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ও নিয়োগ কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূইয়া জানান, প্রথম স্থান অধিকারকারী রফিকুল ইসলামকে উপস্থিত করার জন্য বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে বার বার বলার পরও তিনি তাকে উপস্থিত করেন নাই এবং তার মোবাইল নম্বরও আমাকে দেয় নাই। যে কারণে প্রথম স্থান অর্জনকারী কর্তৃক তিনি চাকরি করবেন না মর্মে দাখিলকৃত কাগজপত্র যাচাই বাছাই করা সম্ভব হয় নাই।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক প্রফেসর প্রদীপ চক্রবর্তী জানান, নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জনকারী যোগদান না করলে পুনরায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারীকে নিয়োগ দেওয়ায় এখানে কিছু একটা অনিয়মের প্রমাণ করে।