সিবিএন ডেস্ক:
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো দিনদিন অরক্ষিত হয়ে পড়ছে। কমে যাচ্ছে তদারকি। সুযোগ বুঝে ক্যাম্প থেকে দলবেঁধে পালাচ্ছে। মাঝে মাঝে ধরাও পড়ছে।

পুলিশ এবং কোস্ট গার্ড সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার প্রস্তুতি নেয়ার সময় শুক্রবার রাতে ৮৪ জন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে।

এদের মধ্যে ৬৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ এবং ১৭ জনকে আটক করেছে কোস্ট গার্ড।

কক্সবাজারের টেকনাফ এবং পেকুয়া থেকে আটক করা হয়।

সমুদ্র পথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করলে গত ছয় মাসে দুশ’রও বেশি রোহিঙ্গাকে আটক করেছে নিরাপত্তাবাহিনী।

এক সপ্তাহ আগে ঢাকা থেকে ২৬ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছিল।

ক্যাম্প থেকে বিভিন্ন উপায়ে বের হয়ে মালয়েশিয়া যেতে উদগ্রীব রোহিঙ্গারা।

তারা যাতে ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে অন্য জায়গায় যেতে পারে সেজন্য উখিয়া এবং টেকনাফের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তা বাহিনীর চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে।

কিন্তু তারপরেও নানা উপায়ে রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে আসছে।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন বলেন, রোহিঙ্গারা নিরাপত্তা বাহিনীর চেকপোস্ট এড়িয়ে পাহাড়-জঙ্গলের ভেতর দিয়ে এলাকা থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, “তারা এখন লোকাল ভাষা শিখে গেছে। পোশাক লোকালদের মতো পড়ছে। চেকপোস্ট দিয়ে দুই-চারজন যারা আসছে তারা স্পষ্টভাবে বলছে যে ঐ জায়গায় যাব। এটা আমাদের জন্য ডিফিকাল্ট হয়ে গেছে।”

মালয়েশিয়া যাবার চেষ্টা কালে বিভিন্ন সময় যেসব রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে বেশিরভাগ নারী।

শুক্রবার যে ৮৪ জন রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়েছে তাদের মধ্যে নারীর সংখ্যা ৩৮।

উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নারীদের নিয়ে কাজ করেন একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মী শিউলি শর্মা।

তিনি বলেন, রোহিঙ্গা নারীদের অনেকেই মালয়েশিয়া গিয়ে বিয়ে করার স্বপ্নে বিভোর। তাঁরা মনে করে যে মালয়েশিয়া যেতে পারলে তাদের ভালো বিয়ে হবে। এ ধারণা থেকেই তাদের অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র পথে মালয়েশিয়ায় যেতে আগ্রহী।

“রোহিঙ্গা নারীরা মনে করে বিয়েটাই সবকিছু। তারা মনে করে ক্যাম্প থেকে বের হয়ে নিজেদের মতো করে একটা লাইফ তৈরি করবে,” বলছিলেন মিজ শর্মা।

মালয়েশিয়া যেতে উদগ্রীব রোহিঙ্গাদের এমন মানসিকতাকে পুঁজি করছে মানব পাচারকারীরা।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে কেন্দ্র করে এখন মানব পাচারকারীদের তৎপরতাও বেড়েছে।

তাছাড়া কিছু রোহিঙ্গা আছে যাদের স্বজন মালয়েশিয়ায় অবস্থান করেছ।

তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বসবাসরত স্বজনদের মালয়েশিয়া নেয়ার জন্য যোগাযোগ করে। এক্ষেত্রেও মানব পাচারকারীদের সহায়তা নেয়া হয়।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাসুদ হোসেন বলেন, বিভিন্ন সময় পুলিশ মানব পাচারকারীকেও আটক করেছে।

শুক্রবার রাতেও পাঁচজন মানবপাচারকারীকে আটক করা হয়েছে।

পুলিশ মনে করছে, রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে ঘিরে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করা হলে সেখান থেকে রোহিঙ্গারা অনায়াসে বের হতে পারবে না।