চকরিয়া সংবাদদাতা:
চকরিয়ায় মাতামুহুরী নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট ও ছড়া খাল থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দিনরাত লাখ লাখ ঘনফুট বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এসব বালু শত শত ডাম্পার ও ১০ চাকার ট্রাক ভর্তি করে বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করে প্রভাবশালী সিন্ডেকেট।
মাতামুুহুরী নদীর দক্ষিণ পাশ ও ১নং ওয়ার্ডের আমান্ন্যারচর এলাকা এসব বালু ভর্তি ট্রাক যাচ্ছে নির্মাণ প্রকল্পের ঠিকাদারদের কাজে। এতে সরকার রাজস্ব না পেলেও ক্ষমতাধর ব্যক্তির পকেটে যাচ্ছে লাখ লাখ টাকা। অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করায় বর্তমানে ওই এলাকা মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। অপরদিকে খুটাখালীতে ইজারার নাম দিয়ে চালাচ্ছে অবৈধ বালু উত্তোলন।
উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে বালু খেকোরা গিলে খাচ্ছে খুটাখালীর ৩নং পয়েন্টের মধুশিঁয়ায় শতশত একর বনভুমির ছড়া খাল। সাইফুল, মিন্টু, আবদুল্লাহ, শামসু, সালাহউদ্দিন, ফারুক, লুৎফর, লিটন, শাহ জালাল, রফিক, শুক্কুর, নজরুল, তারেক, ওবায়দুল, বেলাল, বশির, আবদুর রহমান, পেঠান, আবদুল হামিদসহ বিশ জনের অধিক ব্যক্তি জড়িত রয়েছে এ ধ্বংসযজ্ঞে। ইতিপূর্বে বিজিবি’র সহায়তায় বন বিভাগের অভিযান চললে কিছুদিন নিরব থেকে সম্প্রতি ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে বালু দস্যুরা।
বন বিভাগের খুটাখালী বিট কর্মকর্তা রেজাউল করিম এসব বিষয় শিকার করলেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছে না এবং কারো বিরুদ্ধে কোন মামলা দেয়নি বলে জানান। এভাবে রহস্যজনক নিরব ভুমিকায় থাকে বন বিভাগ। গেল দু’এক সপ্তাহ আগে ডুলাহাজারা রংমহল এলাকায় বগাছড়ির ছড়াখালে বালু ও মাটি দস্যুদের সৃষ্ট গর্তের পানিতে পড়ে ২ শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে।
এলাকাবাসী অভিযোগ করেছেন ওই বগাছড়ি খালে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করা ছড়াখালের বিভিন্ন স্থানে সৃষ্টি হয়েছে ছোট বড় অসংখ্য গর্ত। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুরো উপজেলায় একজন ক্ষমতাধর জনপ্রতিনিধির ছত্র ছায়ায় অবৈধ বালু উৎসব চললেও পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং পুলিশ এতে বাঁধা দিচ্ছেনা।
ফলে বালু উত্তোলনকারীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে গ্রামীণ অবকাঠামো ভেঙে চুরমার হয়ে যাচ্ছে। ছড়াখাল ও নদীর উভয় পার্শ্বে ঘরবাড়ি ভেঙে পাড়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী জানায়, পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ড দিগরপানখালী, পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের হালকাকারা, পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের আমান্ন্যারচ, ৮নং ওয়ার্ড মাতামুহুরী ব্রিজের দক্ষিণ পাশসহ উপজেলার খুটাখালী, ডুলাহাজারা, ফাঁসিয়াখালী, কাকারা, লক্ষ্যারচর, কৈয়ারবিল, বরইতলী, হারবাং, চিরিঙ্গা, সাহারবিল, পূর্ব ও পশ্চিম বড় ভেওলাসহ অর্ধশত পয়েন্টে ড্রেজার মিশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন অব্যাহত রয়েছে।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, উপজেলার বিভিন্ন স্থানে নদী ও ছড়া খালে নিষিদ্ধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে দিবারাত্রি বালু উত্তোলন করে যাচ্ছে।
ইতিপূর্বে এসব স্থানে বালু উত্তোলনের কারণে শতাধিক বাড়ি নদী ও ছড়াখালে বিলিন হওয়ার উপক্রম হয়ে পড়েছে। এছাড়া গ্রামীণ অভ্যন্তরীণ সড়ক গুলো ভেঙে চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানা খন্দক ও গর্তের।
এ ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালককে স্ব স্ব এলাকার লোকজন অভিযোগ করলেও অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে এখনও কোন কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণকরা হয়নি।