বার্তা পরিবেশক :

শওকত ওসমান আমাদের কথাসাহিত্যের ইতিহাসের সঙ্গে অন্বিষ্ট একটি পরিচিত নাম। বিভাগপূর্বকাল থেকেই আমাদের কথাসাহিত্যের যাত্রা শুরু এবং শওকত ওসমান ছিলেন প্রথম থেকেই। সে বিবেচনায় তিনি এ শাখার উৎস, বিকাশ ও সমৃদ্ধির সঙ্গে যুক্ত। ইতিহাস পরম্পরায় এই সুদীর্ঘ সমযে রাজনৈতিক, সামাজিক, আর্থনীতিক ও সাংস্কৃতিক ঘটনাবর্তের এক নির্মম স্বাক্ষী ও অংশীদার তিনি। ক্রমঅগ্রসরমান ক্রমবিবর্ধিত বাঙালি মুসলিম জীবন-সংস্কৃতির অনুধ্যানের সবটা তাঁর চোখের সামনেই ছিলো সব সময়। একজন সচেতন প্রাগ্রসর জীবনবাদী মানুষ হিসেবে তাঁর অংশগ্রহণও আমরা লক্ষ করেছি। সুতরাং স্বাভাবিক এ সময়কার সকল আকীর্ণ ঘটনাপ্রপাত তাকে সংশ্লেষিত করেছে, এবং তাঁর লেখায় আমরা তা পেয়েছি। কথাসাহিত্যের বাইরে নাটকে, প্রবন্ধে, আত্মচরিতে, শেখের সম্বরাতেও তাঁর কমিটমেন্ট লক্ষ করা যায় বরাবরই। সে-নিরিখে তাঁর সাহিত্যে আমাদের জাতীয় ও সাংস্কৃতিক জীবনের গভীর মর্মবেদনার উৎসরণ লক্ষ করার কথা। সময়ের ব্যাপ্তিতে তিনি আজো মহীরূহের মতো। সুতরাং, তাঁর কাছে আমাদের দাবি সবচেয়ে বেশি। এই দাবি মূলত তাঁর অভিজ্ঞতার কাছে সত্যলব্ধ অভিজ্ঞতা, ঐতিহাসিক সত্য বাঙালি জীবনের টানাপড়েন এবং সর্বোপরি আমদের মূল চেতনারকাছে। আমরা লক্ষ্য করেছি, এই মানুষটি আমাদের জাতীয় জীবনের বিভিন্ন বিপন্ন সময়ে আমাদেরকে সঠিকভাবে এগিয়ে যাবার মন্ত্রণা দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের প্রত্যাশা বোধ করি ছিলো অন্যখানে। সাহিত্যে নিয়ে জীবন শুরু করেছিলেন তিনি, আমরা তাঁর কাছে চেয়েছিলাম সম্ভবত গভীর চেতনা শৈলী সমন্বিত সাহিত্য যেটা তাঁর মৌলক্ষেত্র।

কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর ৪৪৮তম পাক্ষিক সাহিত্য সভায় কথাসাহিত্যক শওকত ওসমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তাগণ এসব কথা বলেন।

১৭ মে ২০১৯ শুক্রবার সকালে কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে সাহিত্য সভা অনুষ্ঠিত হয়।

একাডেমীর সাধারণ কবি রুহুল কাদের বাবুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন একাডেমীর স্থায়ী পরিষদের চেয়ারম্যান কবি সুলতান আহমেদ। আলোচনা করেন স্থায়ী পরিষদের সদস্য গবেষক নূরুল আজিজ চৌধুরী, সদস্য সিনিয়র আইনজীবী শামসুল আলম কুতুবী, মূল্যায়ন সম্পাদক কবি অমিত চৌধুরী, সহ-সভাপতি ও কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছড়াকার মো. নাসির উদ্দিন ও নির্বাহী সদস্য কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক গল্পকার সোহেল ইকবাল।

পরে কবিতা আবৃত্তি ও পাঠ করেন নির্বাহী সদস্য সুলতান আহমেদ, মো. নাছিন উদ্দিন, সোহেল ইকবাল, কল্লোল দে চৌধুরী ও গুলশান আরা বেগম।

এছাড়া অন্যান্য বিষয়ে আলোচনা করেন মিজান সিকদার, কল্লোল দে চৌধুরী ও নির্বান পাল।