আহমাদুল কবির, মালয়েশিয়া:

মালয়েশিয়ায় অবৈধ শ্রমিকদের আর বৈধতার সুযোগ দেওয়া হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন ইয়াসিন। দেশটিতে নতুন করে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেওয়ার আশ্বাসের সংবাদের মধ্যে এ সংবাদ এলো।

মঙ্গলবার (১৪ মে) মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার বিষয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তানশ্রি দাতো সেরি উতামা মহিউদ্দিন ইয়াসিন ও মানবসম্পদমন্ত্রী তান কুলাসেগারানের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করেন বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী ইমরান আহমেদ। বৈঠকে প্রতিমন্ত্রী বাংলাদেশি অবৈধ কর্মীদের বৈধতার সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তা নাকচ করে দেন।

বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা জানান, প্রতিমন্ত্রীর অনুরোধ সরাসরি না করে দিয়েছেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমরা আড়াই বছর (২০১৬ থেকে ২০১৮ আগস্ট) রিহায়ারিং কর্মসূচি চালিয়েছি। এত দীর্ঘ সময়েও যারা সুযোগ নিতে পারেননি, তাদের জন্য আর সুযোগ দেওয়া হবে না।’

দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, তবে যারা রিহায়ারিংয়ের সময় নিবন্ধিত হয়েছেন বা টাকা জমা দিয়েছেন কিন্তু ভিসা পাননি, তাদের আরেকটি বিশেষ সুযোগ দেওয়া হবে। এ বিষয়ে মালয়েশিয়া সরকার কাজ করছে বলেও জানান তিনি।

একই সঙ্গে দেশটিতে যারা একেবারেই অবৈধভাবে রয়েছে তাদেরকে দেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়ে সুযোগ দেওয়ার কথা জানান মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

এদিকে অবৈধদের বৈধ হওয়ার সুযোগ না দিলেও দেশটিতে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা শ্রমবাজার খুলে দেওয়ার বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে মালয়েশিয়া সরকার। বিষয়টি খুব শিগগিরই মালয়েশিয়ার মন্ত্রিপরিষদে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির মানবসম্পদমন্ত্রী কুলাসেগারান।

মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খুলতে চলতি মে মাসের শেষের দিকে দুই দেশের মধ্যে আরও একটি জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে। শ্রমবাজারের স্থিতিশীলতা আনতে এই যৌথ গ্রুপ করণীয় ঠিক করবে। ধারণা করা হচ্ছে, ওই বৈঠকের পর বাজার খোলার বিষয়ে ঘোষণা আসতে পারে।

বৈঠকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহ. শহীদুল ইসলাম, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মুনিরুস সালেহীন এবং উপ-সচিব আবুল হোসেন, দূতাবাসের শ্রম কাউন্সিলর মো. জহিরুল ইসলাম, প্রথম সচিব (শ্রম) মো. হেদায়েতুল ইসলাম মন্ডলসহ মালয়েশিয়ার দুই মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক শেষে মঙ্গলবার রাত ৯টায় (স্থায়ী সময়) কুয়ালালামপুর হোটেল রয়েল চোলানে সাংবাদিকদের প্রবাসী কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, নানা উপায়ে কর্মীরা অবৈধ হয়েছে। তার অধিকাংশই বেশি বেতনের আশায় বা কারো দেখানো লোভে কোম্পানি পরিবর্তন করেছে। বেশি বেতনের আশায় কোম্পানি পরিবর্তন করা কর্মী মালয়েশিয়ার আইনে অপরাধী। কোনো দেশের নিজস্ব আইনে অন্য দেশের প্রভাব খাটানোর সুযোগ নেই।