বার্তা পরিবেশক:

শহরের বাজারঘাটায় বিনা নোটিশে কক্সবাজার পৌরসভা থেকে লীজ নেয়া ও ব্যক্তি মালিকানাধীন বৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অভিযোগ উঠেছে। এতে প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে। সরকারকে ভ্যাট-টেক্স দেয়া সাধারণ জনগনের ক্ষতি সাধন করে কউক চেয়ারম্যানের এমন রহস্যজনক উচ্ছেদ অভিযান নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে পর্যটন নগরীর উন্নয়নকে। তাছাড়া যেখানে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কখনো মানুষের ক্ষতি করে দেশের উন্নয়নে বিশ^াসী নয়, সেখানে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় বৈধ স্থাপনায় বুলডোজার চালিয়েছে কউক। এতে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি হলো বলে মনে করছেন সচেতন মহল।

এ ব্যাপারে ব্যাখ্যা এবং সুবিচারের আশায় সরকারের গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন হাজী হাফেজ আহমদ চৌধুরীর কন্যা বর্তমানে ওই জায়গার প্রকৃত মালিক খোদেজা আক্তার সাকেরুন্নেছা সাকী। তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন, কক্সবাজার মৌজার জে.এল নং-১৬, বি.এস দাগ নং-৭০১৩ এবং বিএস খতিয়ান নং-১২৬০ বসতঘর ও নিজস্ব পারিবারিক পুরোনো ৭০/৮০ বছরের রাস্তাসহ মোট ৬৬০০ শতাংশ জায়গা হয়। যা হাজী হাফেজ আহমদ চৌধুরী তার পিতা মোহাম্মদ ইলিয়াছ চৌধুরীর পূর্ব পৈত্রিক সম্পত্তি হিসেবে বংশ পরম্পরায় ভোগ দখল করে আসছে। হাজী হাফেজ আহমদ চৌধুরী মারা গেলে তার সম্পত্তি কন্যা ও পুত্ররা পান। উক্ত জায়গা নাপিতা পুকুর সংলগ্ন । পরবর্তীতে ২০১১ সালে নাপিতা পুকুরের পশ্চিম পার্শে¦র জমি, অর্থাত পুকুর পাড়ের একটি অংশ কক্সবাজার পৌরসভা থেকে লীজের জন্য আবেদন করা হলে কক্সবাজার মৌজার আর,এস দাগ নং-১৮৮৯, পি,এস দাগ নং-৩০১৫, বি, এস দাগ নং-৭০১৪-৭০১৫ জমির পরিমাণ ৪০ ফুট *২৫ ফুট=১০০০ বর্গফুট ৫০ হাজার টাকা লীজ মানি দিয়ে লিজ নেয়া হয়। ওইসময় ওই জমিতে দুইতলা ভবন করার জন্য কক্সবাজার পৌরসভা লে-আউট নকশাও প্রদান করে। যার আলোকে অনেক টাকা ব্যয় করে সেখানে দ্বিতলা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। এই জমির পাশ দিয়ে ৫০/৬০ পরিবারও বসবাস করেন। এসব পরিবারের মানুষ সেই রাস্তা দিয়ে প্রতিদিন চলাচল করে আসছিলো। কিন্তু সম্প্রতি কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ নাপিতা পুকুরসহ ৩টি পুকুর সংস্কার উন্নয়ন করার সিদ্ধান্ত নেন। তার মধ্যে বাজারঘাটা এলাকায় ওই জমির পূর্ব পাশের্^ নাপিতা পুকুর অবস্থিত। কিন্তু কোন রকম নোটিশ না দিয়ে কক্সবাজার পৌরসভা থেকে লিজ পাওয়া জমিতে স্থাপিত দ্বিতলা ভবনটি গত ১২ মে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ জোরপূর্বক ক্ষমতার প্রভাব কাটিয়ে রহস্যজনকভাবে গুড়িয়ে দেয়। ফলে প্রায় অর্ধকোটি টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়। সেই পুকুরের পশ্চিম পাশের্^ ৭০-৮০ বছরের চলাচলের রাস্তা পুকুর উন্নয়নে ঢুকিয়ে নেয়। যা একটি স্বাধীনদেশে কোনভাবেই কাম্য নয়। উচ্ছেদকৃত দ্বিতলা ভবনে নিচতলায় ফুলবাড়ি এন্ড ইভেন্টস, শাহী বিরিয়ানী হাউজ ও মাবুদ সুজ নামে তিনটি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানও ছিল। এছাড়া সেখানে সরকার ও বঙ্গবন্ধু ট্রাস্ট অনুমোদিত শেখ রাসেল মেমোরিয়াল সমাজ কল্যাণ সংস্থার আলাদা দু’টি কার্যালয়ও ছিল। পেছনে ছিলো-কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ নেতা আবদুর রহমান বদির ব্যক্তিগত অফিস। হঠাৎ করে দ্বিতলা ভবনটি ভেঙ্গে দেয়ায় মালিকের পাশাপাশি ব্যবসায়ী ও ওই সংস্থাগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানান হাজী হাফেজ আহমদ চৌধুরীর কন্যা বর্তমানে ওই জায়গার প্রকৃত মালিক খোদেজা আক্তার সাকেরুন্নেছা সাকী। তিনি বলেন, কউক চেয়ারম্যান বিনানোটিশে যেভাবে বুলডোজার চালাচ্ছেন তাতে মনে হচ্ছে দেশে কোন আইনের শাসন নেই। পুরাটাই মগের মুল্লুকে পরিনত হয়েছে। এটি স্বাধীন দেশের আইন হতে পারেনা।

অন্যদিকে গত ১৩ মে বিভিন্ন পত্রিকা ও অনলাইনে কউক কর্তৃক যে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে তাও প্রশ্নবিদ্ধ। সেখানে বৈধ স্থাপনাকে অবৈধ উল্লেখ করে সমাজে চরমভাবে নিজের মানহানী করা হয়েছে বলে দাবী করেন হাজী হাফেজ আহমদ চৌধুরীর কন্যা খোদেজা আক্তার সাকেরুন্নেছা সাকী। তিনি বলেন-আমার জায়গায় উচ্ছেদের নামে যেভাবে ভাংচুর চালানো হয়েছে তাতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।

পাশাপাশি কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (কউক) এই অভিযানে যে তিনটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেরও লাখ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবী করেছে স্ব-স্ব দোকানের ভাড়াটিয়াগণ। সবমিলিয়ে পত্রিকা ও অনলাইন গণমাধ্যমে প্রকাশিত কউকের ভিত্তিহীন সংবাদ নিয়েও কাউকে বিভ্রান্ত না হওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।