এম বশির উল্লাহ , মহেশখালী :

মহেশখালী থানা পুলিশের  অভিযানে  দুই অপহরণকারীকে অস্ত্র ও গুলি সহ আটক হয়েছে। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে তাদের আটক করা হয় কালারমারছড়ার পাহাড়ি এলাকা থেকে ।

মহেশখালী থানার সুত্রে জানা যায়, গত ৬ এপ্রিল সন্ধায় মহেশখালী থানাধীন হোয়ানক ইউনিয়নের পানিরছড়া গ্রামের মোঃ ইউসুফ, তার ছেলে আব্দুল মোনাফ ও তার মেয়ের জামাই শাহাদাত উল্লাহ সহ বদরখালী থেকে সিএনজি যোগে আসার সময় মহেশখালী থানাধীন শাপলাপুর ইউনিয়নস্থ বালুর ডেইল নামক স্থানে এলে ৮/৯ জন অপহরণকারী তাদের সিএনজির গতিরোধ করে সিএনজি থেকে তাদেরকে নামিয়ে ফেলে। একপর্যায়ে তাদের ৩ জনকে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে অপহরণ করতে চাইলে তখন ইউসুফ ও তার মেয়ে জামাই বাঁচাও বাঁচাও বলে দৌড়ে পালিয়ে গেলেও অপহরণকারীরা আব্দুল মোনাফকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পাশের পাহাড়ের ভিতরে অপহরণ করে নিয়ে যায়।  আব্দুল মোনাফ এর মায়ের নিকট মুক্তি পণ হিসাবে ৫ লক্ষ টাকা দাবী করে এবং মুক্তি পনের টাকা নিয়ে কালারমারছড়া ইউনিয়নের ফকিরজোম পাড়ার পাহাড়ের ভিতরে নিয়া যাওয়ার জন্য বলে।

ঘটনাটি আব্দুল মোনাফ এর মা ও বাবা মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জকে জানালে মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ প্রভাষ চন্দ্র ধর, পুলিশ পরিদর্শক(তদন্ত) একেএম সফিকুল আলম চৌধুরী এর নেতৃত্বে এসআই লিটন চন্দ্র সিংহ এবং এএসআই জুয়েল দে ও সঙ্গীয় ফোর্স সহ ভিকটিমের আত্মীয়স্বজন এর ছদ্মবেশে মুক্তি পণের টাকা নিয়ে কালারমারছড়া ইউনিয়নের ফকিরজোম পাড়ার পাহাড়ের ভিতরে ঢুকে পড়ে এবং সেই পাহাড়ের নিচে চারদিকে পুলিশ কৌশলে কমান্ডো ষ্টাইলে ঘেরাও করে ও্ত পেতে থাকে এবং মাঝখানে একটি ফাঁদ পাতে। পুলিশ ছদ্মবেশে ফাঁদের মধ্যে দাঁড়িয়ে অপহরণকারীদেরকে মুক্তি পণের টাকা নিয়ে যাওয়ার জন্য ফোন করলে অপহরণকারীদের মধ্যে রুহুল কাদের প্রঃ রুহুইল্যা ও আজিজ পার্শ্ববর্তী পাহাড়ের জঙ্গলের ভিতর থেকে বের হয়ে আসে। একপর্যায়ে মুক্তি পণের টাকা পাহাড়ের উপরে রেখে যাওয়ার জন্য অপহরণকরীরা বলে। তখন উপরে ও নিচে এক হাজার টাকার নোট দিয়ে ও ভিতরে ভাঁজ করা কাগজ দিয়ে টাকার বান্ডেল তৈরী করে ঐ স্থানে দুই জন পুলিশ মুক্তি পণের টাকা রেখে অনুমান ৪০/৫০ হাত পিছনে অবস্থানকালে অপহরণকারী রুহুল কাদের প্রঃ রুহুইল্যা ও আজিজ মুক্তি পণের টাকা নেওয়ার জন্য দৌঁড়ে সেখানে যাওয়ার সাথে সাথে পুলিশ চারদিক থেকে ঘেরাও করে ফেললে অপহরণকারীরা অবস্থা বেগতিক দেখে তাদের কোমড় থেকে এলজি বাহির করে এলোপাতাড়ী গুলি বর্ষণ করতে করতে পালানোর চেষ্টা করে। ইতিমধ্যে অপহরণকারীদের সহযোগীরা পার্শ্ববর্তী পাহাড় থেকে গুলি বর্ষণ করতে থাকে। পুলিশও আত্মরক্ষার্থে ২৭ রাউন্ড ফাঁকা গুলি বর্ষণ করে। একপর্যায়ে অপহরণকারীদের হেফাজত হতে ০১টি এলজি, ০৬ রাউন্ড কার্তুজ ও ০১টি গুলি রাখার ব্যাগ সহ এবং অপহরণকারী হইতে ০১টি এলজি ও ০২ রাউন্ড কার্তুজ সহ হাতেনাতে গ্রেফতার করা হয়। রুহুল কাদের রুহুইল্যা(৩০), পিতা-মোঃ আমিন, সাং-মোহাম্মদ শাহঘোনা, কালারমারছড়া, ২। আজিজ(২৮), পিতা-ওসমান, সাং-অফিস পাড়া, কালারমারছড়া বাসিন্দা।

উল্লেখ্য যে, থানার রেকর্ডপত্র যাচাই করে দেখা যায়  রুহুল কাদের রুহুইল্যা এর বিরুদ্ধে ০১টি ডাকাতি প্রস্তুতি সহ ২টি মামলা এবং অপর আসামী আজিজ এর বিরুদ্ধে ০১টি মামলা রয়েছে।

মহেশখালী থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধর জানান, গ্রেফতারকৃত আসামী রুহুল কাদের রুহুইল্যা এবং আজিজ দ্বয় কালারমারছড়া, হোয়ানক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অপহরণ, ডাকাতি, ছিনতাই এবং এলাকায় অবৈধ অস্ত্র বিক্রয় করে আসছিল বলে সাধারণ লোকজন জানায়। এলাকার নিরীহ লোকজন ভয়ে তাহাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পায় না। তাদের গ্রেফতারের সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সাধারণ মানুষ স্বস্তির নি:শ্বাস ফেলে। তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা রুজু করা হয়েছে।