ডেস্ক নিউজ:

মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মেদিনিমন্ডল ইউনিয়নের যশলদিয়া এলাকায় সাবেক প্রেমিকাকে দেখতে গিয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে মা ও মেয়েকে চাপা দেন মেদেনিমন্ডল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন খানের ছেলে ফাহাত খান।

চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন খানের ছেলে ফাহাত খানের প্রাইভেটকারের নিচে চাপা পড়ে স্থানীয় অটোরিকশার চালক মিজান হাওলাদারের স্ত্রী পারভীন বেগম (৩৫) ও শিশু কন্যা সামিয়া বেগম (৩) নিহত হয়েছেন।

স্থানীয় সূত্র জানায়, স্থানীয় মো. করিম মিয়ার মেয়ে নিশির (১৮) সঙ্গে চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন খানের ছেলে ফাহাত খানের দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তবে তাদের প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেননি চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন খান। এ নিয়ে পরবর্তীতে ছেলে ফাহাত খান বেপরোয়া হয়ে যান। পাশাপাশি প্রেমিকা নিশিকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করেন ফাহাত খান। এ অবস্থায় নিশিকে তার পরিবার ছয় মাস আগে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দেয়।

স্থানীয়রা জানান, প্রেমিকা নিশি সপ্তাহখানেক আগে শ্বশুরবাড়ি থেকে বাবার বাড়ি যশলদিয়ায় বেড়াতে আসেন। সংবাদ পেয়ে প্রতিদিন চেয়ারম্যানের ছেলে ফাহাত খান ও তার বন্ধুরা মোটরসাইকেলযোগে এখানে এসে মহড়া দেন। সোমবার সকাল ১০টার দিকে মহড়ার অংশ হিসেবে বাবার প্রাইভেটকার নিয়ে মাওয়া-কবুতরখোলা সড়কে পদ্মা সেতুর যশলদিয়া পুনর্বাসন কেন্দ্রের সামনে আসেন ফাহাত। এ সময় বেপরোয়া গতিতে প্রাইভেটকার চালালে রাস্তা পারাপারের সময় শিশু সামিয়া চাপা পড়ে নিহত হয়। মা পারভীন বেগম সন্তানকে উদ্ধার করতে গেলে তাকেও চাপা দিয়ে পালিয়ে যান ফাহাত খান।

লৌহজং থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মা ও মেয়েকে প্রাইভেটকার চাপা দিয়ে মেরে ফেলার পর মেদেনিমন্ডল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন খানের সঙ্গে কথা বলেছি আমরা। তিনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তিনি বলেছেন যদি নিহতের পরিবার আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে তাহলে আমার দিক থেকে কোনো সমস্যা নেই।

ওসি আরও বলেন, নিহতদের পরিবার মামলা করতে চাচ্ছে না। মরদেহের ময়নাতদন্ত করতেও নারাজ তারা। তাই হয়তো ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাদের মরদেহ দাফন করা হবে।

ওসি মনির হোসেন আরও বলেন, উপজেলার মাওয়া-কবুতরখোলা সড়কে দ্রুতগতিতে প্রাইভেটকার চালিয়ে মা ও মেয়েকে চাপা দিয়ে চলে যায় ফাহাত খান। স্থানীয়রা আহত অবস্থায় মা-মেয়েকে উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মেয়ে সামিয়াকে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মা পারভীনকে ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান।