আলমগীর মানিক,রাঙামাটি :

গত ২রা মে থেকে কাপ্তাইয়ে নিখোঁজ হওয়া ছাত্রলীগ নেতা প্রান্ত ঘোষকে ডাবল মার্ডার মামলার সন্দেহভাজন আসামী দেখিয়ে আদালতে চালান দিয়েছে চন্দ্রঘোনা থানা পুলিশ। যৌথবাহিনী কর্তৃক রোববার রাতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে নিশ্চিত করে চন্দ্রঘোনা থানার অফিসার ইনচার্জ আশরাফ উদ্দিন জানিয়েছেন আমাদের তদন্তে উক্ত যুবকসহ আরো কয়েকজনের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তাই যৌথ অভিযানের মধ্যদিয়ে রোববার রাতে চন্দ্রঘোণা জংলাছড়ি এলাকা থেকে প্রান্ত ঘোষসহ জেএসএস এর সদস্য অর্জুন তংচঙ্গ্যাকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। সোমবার তাদেরকে রাঙামাটিস্থ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে জানিয়ে ওসি জানান আমরা পরবর্তীতে আরো ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ করার লক্ষ্যে আদালতে রিমান্ডের আবেদন জানাবো।

চলতি বছরের বিগত ফেব্র“য়ারী মাসের চার তারিখ (সোমবার) দুপুরে কাপ্তাইয়ের রাইখালীর কারিগর পাড়া এলাকায় চায়ের দোকানের সামনে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করা হয় দুই যুবককে। নিহত যুবকদ্বয় হলো মংশিনু মারমা (২৫) ও জাহিদুল ইসলাম জাহিদ (২৬)।

প্রথমজন আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল সংস্কারপন্থী জেএসএস এর সক্রিয় কর্মী এবং অপরজন জাহিদুল রাইখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের কর্মী বলে জানাগেছে। এই হত্যাকান্ডের বিরুদ্ধে সেসময় রাইখালী ইউনিয়নে হরতাল পালন করেছিলো সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা। এই ডাবল মার্ডার ঘটনাটিকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে তদন্তে নামে যৌথ বাহিনীর একাধিক টিমের সদস্যরা। এই ঘটনায় সংশ্লিষ্ট্য চন্দ্রঘোনা থানায় দায়েরকৃত মামলায় গত ৭ই ফেব্র“য়ারি (বৃহস্পতিবার) বিকেলে অভিযান চালিয়ে খোংসাইতুই মারমা (৫২) ও তপন তালুকদার (৪২)নামে দু’জনকে আটক করা হয়েছিলো। সর্বশেষ রোববার (৫ই মে) রাইখালী সদর থেকে ছাত্রলীগ নেতা প্রান্ত ঘোষ ও জেএসএস সদস্য অর্জূন তংচঙ্গ্যাকে এই জোড়া খুনের মামলা গ্রেফতার করা হয়েছে। আটককৃত দুইজনে ডাবল মার্ডার মামলার আসামী বলে প্রতিবেদককে নিশ্চিত করেছেন চন্দ্রঘোণা থানার অফিসার ইনচার্জ আশরাফ উদ্দিন।

এদিকে, গত ৩রা মে সংবাদ মাধ্যমকে প্রান্ত’র মা জানিয়েছিলেন, তার ছেলে ২ মে বৃহস্পতিবার বিকাল পৌনে চারটার সময় বাসা থেকে বের হন। যাওয়ার সময় বলে যান, অজ্ঞাতনামা কেউ তাকে বাঙ্গালহালিয়া ক্যাম্পের সামনে আসতে বলেছে, তাদের সাথেই দেখা করতে যাচ্ছেন। এরপর প্রায় অনেকক্ষণ হয়ে গেলেও ছেলের কোন হদিস না পেয়ে সন্ধ্যা ৬টা ৪২ মিনিটে প্রান্ত’র মোবাইল নাম্বারে কল করেন তার মা। এসময় ফোন রিসিভ হলে অপর পাশ থেকে পাহাড়ী ভাষায় বাকবিতন্ডা শুনতে পান তিনি। এসময় তিনি অজ্ঞাতনামা বেশ কয়েকজন পাহাড়ী যুবককে প্রান্তকে বেঁধে রাখার কথা বলতে শুনেন। বাকবিতন্ডার এক পর্যায়ে কলটি কেটে গেলে পরবর্তীতে বেশ কয়েকবার কল করলেও মোবাইল সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়। এই ঘটনার পরবর্তী ৫ই মে রাতে প্রান্তকে হত্যা মামলার আসামী হিসেবে আটক করে চন্দ্রঘোনা থানা পুলিশ। প্রান্ত রাইখালী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সহ-সাধারণ সম্পাদক বলে জানাগেছে।