মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি গত শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিলে এর নামকরণের জন্য এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের আটটি দেশের আবহাওয়া দপ্তর ও বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্যানেলে ‘ফণি’ নামটি প্রস্তাব করে বাংলাদেশ। যার অর্থ হচ্ছে-সাপ অথবা সর্প। ইংরেজিতে যার অর্থ হচ্ছে-Snake, Serpent, Viper ইত্যাদি। নিম্নচাপটি দেখতে অনেকটা হিংস্র সাপের ফণা’র মতো। এটি ভয়াবহ আকারে আঘাত হানার আশংকা রয়েছে। তাই বাংলাদেশ ‘ফণি’ নামকরণের স্বপক্ষে প্যানেলে এগুলো সহ আরো কিছু যুক্তি তুলে ধরে। প্যানেলের সকল সদস্য একমত হয়ে তখন ঘূর্ণিঝড়টির ‘ফণি’ নামকরণ চুড়ান্ত করে। বাংলাদেশ আবাহাওয়া অধিদপ্তরের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সিবিএন-কে ‘ফণি’ নামকরণ সংক্রান্ত এই তথ্য জানিয়েছেন।
ফণি নিম্নচাপটি বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদদের আশংকা সত্য প্রমাণ করে বুধবার সকাল হতে ভয়াবহ ভেরী সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্ট্রমে রূপ নিয়েছে। আবাহাওয়া অভিধানের ভাষায় ‘ভেরী সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্ট্রম’ হচ্ছে সামুদ্রিক সাইক্লোনের সর্বোচ্চ ভয়ংকর রূপের নাম। যে কারণে আবহাওয়া অধিদপ্তরের বুধবার ১ মে’র আবহাওয়া পর্যালোচনায় কক্সবাজার সহ দেশের উপকূলীয় সকল সমুদ্র ও নৌবন্দরকে ৪ নম্বর হুশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। ভেরী সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্ট্রমটির আয়তন ২ লক্ষাধিক বর্গ কিলোমিটার। আর বাংলাদেশেরর ভৌগলিক আয়তন ১৪৭৫৭০ বর্গকিলোমিটার। বাংলাদেশের ভৌগলিক আয়তনের চেয়ে অনেক এটি অনেক বেশী বড় এই ভেরী সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্ট্রমটি আগামী শনিবার দিবাগত রাত থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘন্টার মধ্যে সমগ্র বাংলাদেশ উপকূলে তীব্রভাবে আঘাত হানার আশংকা রয়েছে। ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানলে বাতাসের গতিবেগ ঘন্টায় ১৬০ কি:মি: থেকে সর্বোচ্চ ২৩০ কি:মি: পর্যন্ত উঠতে পারে। বর্তমানে এটির মুখ অধিকাংশই পুরো বাংলাদেশ উপকূলের দিকে রয়েছে এবং আংশিক ভারতের সমুদ্র উপকূলের দিকে। এই ভয়াবহ সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্ট্রমটি দুর্বল নাহয়ে উপকূলে আঘাত হানলে ১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ঘূর্ণিঝড় এবং সিডরের চেয়েও অনেক বেশী প্রবল বেগে আঘাত হানার আশংকা রয়েছে।