অনলাইন ডেস্ক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানিয়েছেন, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তেই দলের চারজন এমপি হিসেবে আজ (সোমবার) শপথগ্রহণ করেছেন।

সোমবার রাতে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন। এ সময় তাকেও ফুরফুরে মেজাজে দেখা যায়।

সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি শপথ নেবেন কি না এবং জাহিদুর রহমান জাহিদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হবে কি না -এমন প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, সময় হলেই আপনারা সব জানতে পারবেন।

দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা, মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনুরুদ্ধারের সংগ্রামের অংশ হিসাবে সংসদে অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে : মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’র মহাসচিব
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, জাতীয় রাজনীতির এই সংকটময় জটিল প্রেক্ষিতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা, মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনুরুদ্ধারের সংগ্রামের অংশ হিসাবে আমাদের দল সংসদে অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আজ ২৯ এপ্রিল ২০১৯,সোমবার, বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বিএনপি মহাসচিব ।

সংবাদ সম্মেলনে পঠিত লিখিত বক্তব্য-

“ বাংলাদেশের নির্বাচনে ইতিহাসে গত ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন ছিল একটি কলঙ্কজনক প্রহসনের নির্বাচন। যা ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক মহলও প্রহসনের নির্বাচন হিসাবে চিহ্নত করেছে। এই নির্বাচনের ফলাফল ছিল সম্পূর্ণ সাজানো এবং দেশের দল মত নির্বিশেষে সকল ভোটারাই এই নির্বাচনে তাদের ভোটাধিকার থেকে জোর পূর্বক বঞ্ছিত হয়েছেন। যা ক্ষমতাসীন মহলের কারো কারো মুখ থেকেও স্বীকার উক্তি হিসাবে বেরিয়ে এসেছে। নজীরবিহীন সন্ত্রাস, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ সর্বপরি নির্বাচন কমিশনের পক্ষপাতিত্বের মাধ্যমে ভোটের দিনের আগের রাতেই ভোটের ফলাফল একতরফা ভাবেই তাদের পক্ষে সাজিয়েছে সরকার। আমরা সংগত কারণেই ভোটাধিকার বঞ্ছিত জনগণের ক্ষোভের ধারাবাহিকতায় এই নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছিলাম এবং জাতীয় সংসদে আমাদের মনোনীত বিজয়ী প্রার্থীদের শপথ গ্রহণ না করার জন্য আহŸান করেছিলাম।
আমাদের দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি একটি উদারপন্থী গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। আমরা বিশ^াস করি নির্বাচনই ক্ষমতা পরিবর্তনের একমাত্র পথ। কিন্তু ক্ষমতাসীন মহল নির্বাচনী ব্যবস্থাকে আজ এমনভাবে দলীয় করণ করেছে যে, গোটা নির্বাচনী প্রতিষ্ঠান আজ ক্ষমতাসীনদের ক্ষমতা প্রলম্বিত করার একটি হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার অন্য সকল পদ্ধতিও সংকীর্ণ হয়ে গিয়েছে। বিশ^বাসীর কাছে এই সরকার তার গ্রহণযোগ্যতার জন্য ভোটারবিহীন এই সংসদকে সচল দেখাতে চায়। এইটুকুই কেবল আজ গণতান্ত্রিক অধিকার চর্চার নুন্যতম সুযোগ হিসাবে বিরোধী জনমতের জন্য অবশিষ্ট আছে।
আমরা বরাবরের মতই দাবী করছি, দল নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে পুনরায় নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটে জনগণের সংসদ নির্বাচন করাই এই সংকট সমাধান করার একমাত্র পথ। তাই একদিকে নতুন নির্বাচনের দাবি ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াসহ সকল রাজবন্দীদের মুক্তি এবং মামলা প্রত্যাহারের অব্যাহত দাবি অন্যদিকে দেশের চলমান অর্থনৈতিক, আইন-শৃংখলা ও সামাজিক চরম সংকট যথাক্রমে রাষ্ট্রীয় দুর্নীতি, শেয়ার বাজার কেলেংকারী, ব্যাংক লুট, নারী নির্যাতন, গুম-খুন, গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ-এর বিরুদ্ধে একটি কার্যকরী ও জোরালো গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য আমাদেরকে নতুনভাবে উদ্দীপ্ত হতে হবে ।
ভোটাধিকার ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং দেশনেত্রীর মুক্তির দাবিতে সংসদে কথা বলার সীমিত সুযোগকে কাজে লাগিয়ে সংসদ ও রাজপথের সংগ্রামকে যুগপৎভাবে চালিয়ে যাওয়াকে আমরা যুক্তিযুক্ত মনে করছি। জাতীয় রাজনীতির এই সংকটময় জটিল প্রেক্ষিতে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসা, মুক্তি এবং গণতন্ত্র পুনুরুদ্ধারের সংগ্রামের অংশ হিসাবে আমাদের দল সংসদে অংশ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আশা করি দেশবাসীকে সাথে নিয়ে আমাদের এই সিদ্ধান্তের ধারাবাহিকতায় অবিলম্বে একটি অবাধ জাতীয় নির্বাচন আদায় করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার ও দেশনেত্রীসহ সকল রাজবন্দীকে মুক্ত করে আমরা আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ঘোষিত জাতীয় ঐক্যমতের বাংলাদেশ গড়ে তুলব।”