রিয়াজ উদ্দিন, পেকুয়া:

পেকুয়ায় বেড়িবাঁধ নেই করিমদাদ মিয়া জেটিঘাট পয়েন্টে। উপজেলার উপকুলবর্তী উজানটিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম উজানটিয়া করিমদাদ মিয়া চৌধুরী জেটিঘাট থেকে ফেরাসিঙ্গাপাড়া পাউবোর স্লুইচ গেইট পর্যন্ত প্রায় ২ কিলোমিটারে পাউবোর বেড়িবাঁধ অরক্ষিত। উজানটিয়া নদীর প্রচন্ড ¯্রােতের আঘাতে পাউবোর নিয়ন্ত্রনাধীন ৬৪/২বি পোল্ডারের বেড়িবাঁধ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সম্প্রতি বেড়িবাঁধের জেটিঘাট মোকামে সবচেয়ে ক্ষতির মধ্যে পতিত হয়েছে। এতে করে উজানটিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম উজানটিয়া ও মধ্যম উজানটিয়াসহ বিপুল জনগোষ্টী ভবিষ্যত ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হওয়ার শংকা দেখা দিয়েছে। পাউবো বান্দরবান নিয়ন্ত্রিত বেড়িবাঁধের করিমদাদ মিয়া চৌধুরী জেটিঘাট ও ফেরাসিঙ্গাপাড়া স্লুইচ গেইট মোকাম পর্যন্ত প্রায় চর ও বেড়িবাঁধ একাকার হয়েছে। ওই পয়েন্টে বেড়িবাঁধ সংষ্কার কাজ থেকে বঞ্চিত রয়েছে প্রায় ২৭/২৮ বছর পর্যন্ত। পাউবো এ অংশের বেড়িবাঁধ পুন:সংষ্কারের জন্য ওই সময় থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কোন ধরনের প্রকল্প ব্যয়ে অর্থবরাদ্ধ দেননি। স্থানীয় সুত্র জানায়, ১৯৯১ সালের প্রলয়ংকরী ঘুর্ণিঝড় ও সর্বকালের ভয়াবহ সামুদ্রিক জলোচ্ছাসে এ ইউনিয়নের পাউবোর মালিকানাধীন বেড়িবাঁধের বিশাল অংশ সাগরগর্ভে বিলীন হয়েছিল। জলোচ্ছাস পরবর্তী সময়ে ১৯৯২ সালে উজানটিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম উজানটিয়ায় বেড়িবাঁধ সংষ্কার কাজ বাস্তবায়ন করে। সৌদি সরকারের অর্থায়নে সে সময় পশ্চিম উজানটিয়া ঘোষালপাড়া থেকে করিমদাদ মিয়া জেটিঘাট হয়ে ফেরাসিঙ্গাপাড়া তোফাজ্জল করিমের বাড়ি পর্যন্ত বেড়িবাঁধ সংষ্কারকাজ বাস্তবায়ন করে। টেকসই ও সুউচ্চ, প্রশস্তকরনের মাধ্যমে বেড়িবাঁধ ওই পয়েন্টে নির্মিত হয়েছিল। তবে ওই সময় থেকে বেড়িবাঁধের এ অংশটি সংস্কারকাজ আওতায় আসেনি। এতে করে বেড়িবাঁধের মাটি নি:সরিত হয়ে খর¯্রােতা উজানটিয়া নদী ও বঙ্গোপসাগরের ত্রিমৌহনী পয়েন্টে বিলীন হয়েছে। বর্তমানে ফেরাসিঙ্গা পাড়া থেকে করিমদাদ মিয়া জেটিঘাট পর্যন্ত নদীর চর ও বেড়িবাঁধ প্রায় একাকার। ফেরাসিঙ্গাপাড়ার আবদুল গফুর মিয়াপাড়ার আজিজুল হক ও ফেরাসিঙ্গাপাড়া জামে মসজিদের খতিব মৌলানা মাহামুদুল করিম জানায়, আমরা খুবই আতংকগ্রস্ত। বর্ষায় জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করবে। বেড়িবাঁধের মাটি নদীতে বিলীন হয়েছে। আর কয়েক দিনের মধ্যে দ্রুত সময়ে বাঁধ সংষ্কার করা না হলে পানি উজানটিয়ায় প্রবেশ করবে। এতে কোন সন্দেহ নেই। উজানটিয়া ইউপির ৩ নং ওয়ার্ড সদস্য আবদু রহিম জানায়, আমরা খুবই শংকিত। যে কোন মুহুর্তে পানি এলাকায় ঢুকে যেতে পারে। এর আগেও আমরা উজানটিয়াবাসী বেড়িবাঁধের চরম দুর্ভোগ ভোগ করেছি। এখন আর সেই দুর্দশা দেখতে চাইনা। উজানটিয়া ইউনিয়ন আ’লীগ সভাপতি এম, তোফাজ্জল করিম জানায়, বেড়িবাঁেধর অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। আমরা এমপি মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করব। আমার উজানটিয়াবাসী অনেকবার দুর্ভোগের শিকার হয়েছে। মানবিক বিপর্যয় হয়েছে এ ইউনিয়নে। দ্রুত সময়ে বেড়িবাঁধ সংস্কার কাজ বাস্তবায়নের জন্য জোর দাবী জানাই। উজানটিয়া ইউপির চেয়ারম্যান এম,শহিদুল ইসলাম চৌধুরী জানায়, ফেরাসিঙ্গাপাড়া জেটিঘাট পয়েন্ট ছাড়াও নুরীর বাজার থেকে আতর আলীপাড়া পর্যন্ত আরও ভয়াবহ চিত্র বেড়িবাঁধের। পাউবোর নজরদারীর প্রয়োজন। পাউবো বান্দরবানের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মো: রাশেদুল হক জানায়, যে সব স্থানে বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত আমরা সে গুলি সার্ভে করেছি। উর্ধতন মহলে রিপোর্ট প্রেরন করেছি। বরাদ্ধ না পাওয়া পর্যন্ত কাজ বাস্তবায়ন নিশ্চিত দিতে পারছিনা। পাউবো বান্দরবানের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসানের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়। ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া যায়নি।