ডেস্ক নিউজ:
সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে ভারতের লোকসভা নির্বাচন শেষ হবে- এমন প্রত্যাশা বিএনপির। সম্প্রতি দলটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ‘ভারতে যারাই সরকার গঠন করুক বাংলাদেশের সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলোতে তারা আরও সচেতন হবেন- এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

ভারতের চলমান সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচন নিয়ে জানতে চাইলে জাগো নিউজকে তিনি আরও বলেন, ‘ভারত আমাদের সর্ববৃহৎ প্রতিবেশী রাষ্ট্র। আমরা তিন দিক দিয়েই ভারত দ্বারা পরিবেষ্টিত। সুতরাং একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের নির্বাচন লক্ষ্য রাখব, সেটাই স্বাভাবিক এবং সেটা আমরা রাখছিও।’

“ভারতের জনগণই ঠিক করবে তারা কাকে নির্বাচিত করবে। সেখানে আমাদের বক্তব্যের কিছু নেই। ভারতের সঙ্গে আমাদের অনেক অমীমাংসিত বিষয় আছে। আমি আশা করব, যে সরকারই আসুক, তারা আমাদের সঙ্গে অমীমাংসিত বিষয়গুলোর ওপর দৃষ্টি দেবে। যেমন- পানি একটা বড় ইস্যু। এছাড়া ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ সাত হাজার ৭৪৮ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আসামে ‘বাঙালি তাড়াও’ নামে মুসলমানদের তাড়ানোর যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে সে বিষয়ে নতুন সরকার আরও সচেতন হবে এবং বাংলাদেশের স্বার্থ দেখবে”- এমন আশা ব্যক্ত করেন তিনি।

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের (ভারত) বহু নিজস্ব স্বার্থ রয়েছে। তাদের আমরা ট্রানজিট দিয়েছি, বাণিজ্যিকভাবে সুবিধায় আছে তারা। সুতরাং দুই দেশের পারস্পরিক আস্থা বজায় রেখে তারা যেন সরকার চালায়- এটাই আমার প্রত্যাশা।’

ভারতের নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে পর্যবেক্ষণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভারতের নির্বাচনী পরিবেশ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না। আমি দেখেছি, ভারতের অতীতের নির্বাচনগুলো প্রমাণ করেছে যে, সেখানকার নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত শক্তিশালী। কিন্তু আমাদের (বাংলাদেশ) নির্বাচন কমিশন ঠাট্টায় পরিণত হয়েছে। সেখানে ভারতের নির্বাচন কমিশন শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে।

‘আমরা দেখেছি, নির্বাচন কমিশনের হাতকে আদালত সবসময় শক্তিশালী করে। ভারতের যেসব প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেসব প্রতিষ্ঠান দেশটার নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ভূমিকা রাখে।’

বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘দেশটিতে নির্বাচন চলছে। ফলাফল পেতে দেরি হবে। এছাড়া নির্বাচনে এখন পর্যন্ত যে অবস্থা, তা বিচার-বিশ্লেষণের মতো নয়। এখন পর্যন্ত পর্যালোচনার সময় আসেনি। রেজাল্ট হোক তারপর দেখা যাবে।’

ভারতের লোকসভা নির্বাচন নিয়ে বিএনপির প্রত্যাশার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের নাগরিক, ভারতের নির্বাচনে আমাদের আবার কী প্রত্যাশা?’

এ বিষয়ে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘আমি ঠিক খেয়াল করছি না…। এ বিষয়ে আমার ব্যক্তিগত কোনো মন্তব্যও নেই।’

গত ১১ এপ্রিল ভারতের জাতীয় নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। দেশটার সংসদের নিম্ন কক্ষ বা লোকসভার নতুন সংসদ গঠনের উদ্দেশ্যে সাত ধাপের এ ভোট উৎসব চলবে ১৯ মে পর্যন্ত। ভোট গণনা হবে ২৩ মে। সেদিনই জানা যাবে, কে যাচ্ছেন দিল্লির মসনদে।

ভারতে লোকসভায় মোট ৫৪৩টি আসন রয়েছে। সরকার গঠন করতে কোনো দল বা জোটের কমপক্ষে ২৭২টি আসনের প্রয়োজন।

সর্বশেষ ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) ঐতিহাসিক বিজয় লাভ করে।