বিবিসি  :   হাসপাতালের কর্মকর্তারা বলছেন, এক যুবকের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের সময় তারা তার পেটের ভেতরে ১১ প্যাকেট ইয়াবা পেয়েছেন। একেকটি প্যাকেটে ৩০ থেকে ৩৫টি ইয়াবা ট্যাবলেট ছিল। কোন কোন প্যাকেটের ইয়াবা গলে গেছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে শনিবার সকালে ৩৫ বছর বয়সী ওই যুবকের ময়নাতদন্তের এসময় এসব ইয়াবা পাওয়া যায়।

ফরেনসিক বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সোহেল মাহমুদ বিবিসি বাংলাকে জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় জুলহাস নামের এই যুবকের মৃতদেহ তাদের কাছে পাঠানো হয়েছিল ময়নাতদন্তের জন্যে। পরে আজ সকালে যখন ময়নাতদন্ত করা হয় তখন তাদের পেটের ভেতরে ‘এসব পোটলা’ পাওয়া গেছে।

“পুলিশ আমাদেরকে জানিয়েছে মুগদার একটি হাসপাতালে রক্তবমি হয়ে নাকি ওই তরুণের মৃত্যু হয়েছে। তার মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ থাকার কারণে পুলিশ ময়নাতদন্তদের জন্যে তার মৃতদেহটি আমাদের কাছে পাঠিয়েছিল,” বলেন তিনি।

সাধারণত কারো অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে কিম্বা মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ থাকলে পুলিশ পোস্টমর্টেমের জন্যে তার মৃতদেহ ফরেনসিক ডাক্তারদের কাছে পাঠিয়ে থাকে।

এই যুবকের কিভাবে মৃত্যু হয়েছে জানতে চাইলে সোহেল মাহমুদ বলেন, ইয়াবার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে তারা ধারণা করছেন।

“ইয়াবার যেসব পোটলা সে গিলে খেয়েছিল সেগুলোর একটা দুটো বিস্ফোরিত হয়ে সে মারা গেছে বলে আমরা ধারণা করছি,” বলেন তিনি।

এতোগুলো ট্যাবলেটের প্যাকেট গিলে খাওয়া সম্ভব কীনা জানতে চাইলেন তিনি বলেন, ‘সম্ভব বলেই তো ট্যাবলেটগুলো তার পেটে পাওয়া গেছে।’

ওই যুবকের পেটের ভেতরে ইয়াবা পাওয়ার কথা মতিঝিল থানার পুলিশকে জানানো হয়েছে ।

মতিঝিল থানার পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, জুলহাস মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিল বলে তারা তাদের প্রাথমিক তদন্তে জানতে পারছেন।

মতিঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওমর ফারুক বলেন, শুক্রবার ভোরে অসুস্থ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করার পর সে মারা গেছে।

তিনি বলেন, “শুক্রবার ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে কমলাপুরে বিশ্বাস টাওয়ারের সামনে সে রাস্তার উপরে বমি করছিল। স্থানীয় লোকজন তখন পুলিশকে জানায় যে এক ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে রাস্তায় পড়ে আছে। পুলিশ গিয়ে দেখেন যে লোকজন তার মাথায় পানি ঢালছে। তখন পুলিশ তাকে মুগদা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। এবং দুপুর ১১টার দিকে সে মারা যায়।”

মি. ফারুক বলেন, নেত্রকোনা থেকে জুলহাসের এক ভাই এসেছিল তার মৃতদেহ নিয়ে যাওয়ার জন্যে। কিন্তু তাদের সন্দেহ হওয়ার কারণে মরদেহ পোস্টমর্টেমের জন্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল।

“হাসপাতাল থেকে আমাদের জানানো হয়েছে যে তার পেটের ভেতরে প্লাস্টিকের যেসব প্যাকেট ছিল তার মধ্যেই ছ’টি প্যাকেট গলে গেছে,” বলেন তিনি।

পুলিশ বলছে, ওই যুবকের নামে নেত্রকোনা থানায় মাদকের দুটো মামলা রয়েছে।

তারা সন্দেহ করছেন, পাচারের জন্যেই তিনি হয়তো এসব ইয়াবা তার পেটে করে বহন করছিলেন।