বাংলা ট্রিবিউনঃ

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভেতরে কিংবা বাইরে শিক্ষার্থীদের সামনে ধূমপান না করতে শিক্ষকদের প্রতি নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর (মাউশি)।একই নির্দেশনায় শিখন-শিখানো কার্যক্রম পরিচালনার সময় কিংবা শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে শিক্ষকদের পান, জর্দা ও গুল গ্রহণ না করার জন্য বলা হয়েছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস তৈরির জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের পরামর্শে খাদ্য তালিকা তৈরি দেওয়া হয়েছে এবং বিদ্যালয়ের আশেপাশে ভ্যানগাড়ি বা দোকানে যেসব খাবার বিক্রি হয় তা তদারকির আওতায় আনার জন্য প্রতিষ্ঠান প্রধানদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিদ্যালয়ের সহশিক্ষা কার্যক্রমে পুরস্কার হিসেবে ক্রোকারিজ সামগ্রী না দেওয়ার বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বুধবার (২৪ এপ্রিল) মাউশি এই সংক্রান্ত তিনটি নির্দেশনা জারি করে।

ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য পরিহার সংক্রান্ত মাউশির নির্দেশনায় বলা হয়, কোনও কোনও শিক্ষক বিদ্যালয় কিংবা বিদ্যালয়ের বাইরে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে ধূমপান করেন। বিষয়টি শিক্ষকসুলভ আচরণ ও জনস্বাস্থ্য পরিপন্থী। এজন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের বিদ্যালয়ের ভেতরে ও বাইরে শিক্ষার্থীদের সামনে ধূমপান থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। এই আদেশে আরও বলা হয়, কোনও কোনও শিক্ষক প্রচুর পরিমাণে পান, জর্দা ও গুল গ্রহণ করে ক্লাসরুমে যান কিংবা শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে কথা বলেন। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। তাই এসব কর্মকাণ্ড থেকে পুরোপুরি বিরত থাকতে নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি।

পুরস্কার হিসাবে বই কিংবা শিক্ষা সংক্রান্ত উপকরণ দেওয়া সংক্রান্ত নির্দেশনাপুরস্কার হিসাবে বই কিংবা শিক্ষা সংক্রান্ত উপকরণ দেওয়া সংক্রান্ত নির্দেশনাঅন্য আরেকটি আদেশে বলা হয়, বিদ্যালয়গুলোর সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রমে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ক্রোকারিজ সামগ্রী দেওয়া হয়। এ ধরনের পুরস্কার শিখন-শেখানো কার্যক্রমের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এই পরিপ্রেক্ষিতে গুণগত শিক্ষা অর্জনের জন্য অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পুরস্কার হিসেবে বয়স উপযোগী মানসম্মত বই অথবা শিক্ষা উপকরণ দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হলো।

খাদ্য সংক্রান্ত আদেশে বলা হয়েছে, শিক্ষার্থীদের সুস্বাস্থ্য গঠনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের জন্য খাদ্য তালিকা নির্ধারণ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের ওই তালিকা অনুযায়ী খাদ্যাভাস তৈরির জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হলো। তালিকাটি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে বিতরণ করতে হবে।

স্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশন সংক্রান্ত আদেশস্বাস্থ্যসম্মত খাবার পরিবেশন সংক্রান্ত আদেশবিদ্যালয়ের গেটে ও আশেপাশে খাবার বিক্রিকারী ভ্যানগাড়ি বা দোকানগুলোকেও খাদ্য তালিকা সম্পর্কে অবহিত করতে হবে এবং সময়ে সময়ে তদারকিও করতে হবে। প্রধান শিক্ষক/শিক্ষকরা এ বিষয়ে অভিভাবক সমাবেশ বা মতবিনিময়ে আলোচনা করবেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগের খাদ্য তালিকার নির্দেশনায় বলা হয়েছে, চানাচুর, আচার, মুড়ালি, চটপটি, চিপস, আইসক্রিম, কেক, কোমল পনীয়, জুস, এনার্জি ড্রিংক, জাংকফুড, ফাস্টফুড, ইত্যাদি মুখরোচক খাবারে চর্বি ও শর্করার মাত্রা বেশি থাকে। যা পরবর্তীতে অসংক্রামক রোগ যেমন— স্থূলতা, হৃদরোগ, কিডনিরোগ, লিভাররোগ ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়। এছাড়া খাদ্য ও পানিবাহিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাড়ায়। তাই স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার তাগিদ দিয়ে শিক্ষার্থীদের সারাদিন কী ধরনের  খাবার খেতে দিতে হবে সেই তালিকাও দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগ।