ঢাকা সংবাদদাতা:
পেশাগত ক্ষেত্রে ডিজিটাল সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ে সাংবাদিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশ এনজিও’স নেটওয়ার্ক ফর রেডিও এন্ড কমিউনিকেশনের (বিএনএনআরসি) এর উদ্যোগে ও ইন্টারনিউজের সহায়তায় সাভারের সিসিডিবি হোপ ফাউন্ডেশনে শেষ হলো “সাংবাদিকদের জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা এবং শারীরিক সুরক্ষা ” শীর্ষক তিন দিনব্যাপী এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা ।
২৪ এপ্রিল অনুষ্ঠিত প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্য ছিল-বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকগণ যেন পেশাগত দায়িত্ব পালনের সাথে সাথে দক্ষতার সাথে নিজেদের সুরক্ষা করতে পারে এবং গণমাধ্যমে সংবাদকর্মীরা যেন তাদের অধিকার ও ঝুঁকি হ্রাস করে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধি এবং শারীরিক সুরক্ষার বিষয়ে আরো সক্রিয় হন সে ব্যাপারে তাদের দক্ষতা বৃদ্ধি করা।
বর্তমান ডিজিটালাইজেশন-এর যুগে খাপ খাইয়ে শারীরিক ও পেশাগত সুরক্ষার সাথে সাথে আধুনিক মানসম্মত সাংবাদিকতা এখন যুগের চাহিদা। তবে গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ডিজিটাল ও শারীরিক সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ক পেশাদারী প্রশিক্ষণ ও নতুন নতুন প্রযুক্তিতে তাদের অভিগম্যতার অভাব একদিকে যেমন একটি পেশাদার ও স্থায়িত্বশীল গণমাধ্যমের ক্ষেত্র প্রস্তুত করা অসম্ভব করে তুলেছে অন্যদিকে তেমনি সাংবাদিকদের ঠেলে দিচ্ছে ঝুঁকির মুখে। বলা বাহুল্য, এক্ষেত্রে সাংবাদিকরা আরো পিছিয়ে আছেন। এমাতাবস্থায়, বিএনএনআরসি এবং ইন্টারনিউজ ঢাকায় এবং ঢাকার বাইরে কর্মরত জাতীয় দৈনিক পত্রিকা এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য উক্ত প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
উক্ত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় জাতীয় পর্যায়ের ইংরেজি ও বাংলা পত্রিকা এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া মোট ১০ জন জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক অংশগ্রহণ করেন।
উক্ত প্রশিক্ষণে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ইন্টারনিউজের কান্ট্রি ডিরেক্টর সৈয়দ জেইন আল-মাহমুদ। তিনি বলেন- ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য এই কর্মশালা একটি বড় সুযোগ। এখান থেকে সাংবাদিকগণ পেশাগত বাধা বা হুমকি থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখার কৌশল সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন। ডিজিটাল নিরাপত্তা আসলে একটি মাইন্ডসেট। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বর্তমান ডিজিটাল যুগে এই প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি একটি সংঘাত সংবেদী ইস্যুতে সাংবাদিকদের ডিজিটাল নিরাপত্তা ও সুরক্ষা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে’।

প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের মোবাইল ও কম্পিউটার সংক্রান্ত সুরক্ষা, মোবাইলে তথ্য উপাত্ত নিরাপদে সংরক্ষণ, মোবাইল ফোনে আড়ি পাতা, কল ধরা, মেসেজ দেওয়া, অ্যাপস ব্যবহারের ঝুঁকি ইত্যাদি সম্পর্কে হাতে কলমে ধারণা প্রদান করা হয়। এছাড়া ফোন কল, মেসেজ ও সোর্স বা উৎসকে সুরক্ষিত করার কৌশল শেখানো হয়। পাশাপাশি ‘ইনক্রিপশন’ এর দুর্বলতা ও সমাধান, ডিজিটাল নিরাপত্তার হুমকিগুলো এবং এগুলো মোকাবলোয় করার উপায়, ডাটা চুরি হওয়া, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরীর উপায় এবং পাসওয়ার্ড ও স্ইুফট কোড, পিন, আঙুলের ছাপের মধ্যকার পার্থক্য এবং পিজিপি, প্রোটনমেইল এবং মেইলভেলোপ সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। তাছাড়া ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়াও প্রশিক্ষক অংশগ্রহণকারীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
গণমাধ্যমের সামর্থ্য বৃদ্ধি ও গণমাধ্যম সাক্ষরতা নিয়ে কাজ করা অভিজ্ঞ পরামর্শক জনাব ব্রায়ান কনলি প্রশিক্ষণটি কর্মশালাটি পরিচালনা করেন। বিশ্বব্যাপী তিনি ইন্টারনেট শাসন, সাইবার সুরক্ষা, সামাজিক যোগাযোগ, বহুমুখী অংশীদারির অংশগ্রহণ, ইন্টারনেট স্বাধীনতা এবং মানবাধিকার নিয়ে কাজ করে থাকেন।
প্রশিক্ষণ কর্মশালা শেষে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সার্টিফিকেট বিতরণ করা হয়।

-ইমাম খাইর/সিবিএন