মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, লামা (বান্দরবান)

বান্দরবানের লামায় ২০ শতক জমিতে চাষ হওয়া গাঁজার ক্ষেত ধ্বংস করল পুলিশ। শনিবার (২০ এপ্রিল) সকাল ১১টা হতে বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত লামা পৌর শহরের কাছাকাছি সদর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড রোয়াজা ঝিরি এলাকায় এই অভিযান চালানো হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন লামা থানায় সদ্য যোগদানকৃত পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আমিনুল হক।
অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) আমিনুল হক জানিয়েছেন, বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার জাকির হোসেন মজুমদারের পরামর্শ ও নির্দেশে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমি সঙ্গীয় পুলিশ অফিসার, সদস্য ও মহিলা সদস্য নিয়ে আমরা অভিযান পরিচালনা করি। এসময় ২০ শতক জমিতে করা ৫৫৩টি গাঁজা গাছের চারা উপড়ে ফেলা হয়েছে এবং যা ওজন মাপলে ৮৫ কেজি হয়। এছাড়া গাঁজা চাষ করার জন্য আনা কিছু বীজও জব্দ করা হয়। গাঁজা ক্ষেতের মালিক মো. ইয়াহিয়া মিন্টুর স্ত্রী খুরশিদা বেগমকে ঘটনাস্থল থেকে গাঁজা গাছ পরিচর্যা করার সময় হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। সে থানা হেফাজতে রয়েছে। গাঁজা গাছ গুলো পরে আদালতের নির্দেশে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হবে। ক্ষেতের মালিক মো. ইয়াহিয়া মিন্টু কয়েকদিন যাবৎ লামায় না থাকায় তাকে আটক করা যায়নি।
অভিযানে আরো উপস্থিত ছিলেন, লামা থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক কৃষ্ণ কুমার দাশ, আসাদুজ্জামান, আয়াত, এএসআই সুজন ভৌমিক, রাম প্রসাদ দাশ সহ প্রমূখ।
সরেজমিনে দেখা যায়, রোয়াজা ঝিরি এলাকার লোকমানের বাড়ির পূর্ব পাশে পাহাড়ের কোল ঘেষে লামা পৌরসভার ছাগলখাইয়া এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে আব্দুস ছালাম লেদু হতে ৬০ শতক জমি বর্গা নিয়ে বিভিন্ন প্রজাতির শাক-সবজি চাষাবাদ করে মো. ইয়াহিয়া মিন্টু। তার স্ত্রী খুরশিদা বেগম (৩২) ক্ষেতের কাজে সহায়তা করে। আব্দুস ছালাম লেদুর কাছ থেকে ১ বছরের জন্য ১৫ হাজার টাকা দিয়ে জমি বর্গা নেয় মিন্টু। সেখানে ভুট্টা, সীম, পেঁপে, বেগুন, মরিচ সহ নানা রকম সবজির চাষাবাদ করা হয়েছে। পাশের চলাচলের রাস্তা হতে ক্ষেতের দিকে তাকিয়ে দেখলে এইসব ক্ষেত দেখা যায়। এইসব ফসলের ভিতরে লুকিয়ে প্রায় ২০ শতক জমিতে নেশাদ্রব্য গাঁজার চাষ করছে সে।
রোয়াজা ঝিরি পাড়ার মুরুব্বী লোকমান হোসেন (৬১) ও নেজবর আলী (৬৫) বলেন, এই এলাকায় কখনো গাজা চাষ হয়নি। তাই কেউ গাজা গাছটি চিনে না।
এই বিষয়ে জানতে মো. ইয়াহিয়া মিন্টুর সাথে মুঠোফোনে কল দিলে ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। তার স্ত্রী খুরশিদা বেগম কে জিজ্ঞাসা করলে তিনি কিছু না বলে এড়িয়ে যান। তিনি এগুলো গাঁজা গাছ বলে স্বীকার করেন।
পৌরসভার হরিণঝিরি এলাকার কয়েকজন বলেন, মিন্টু দীর্ঘদিন যাবৎ গাজা বিক্রি করে। এইকাজে তার স্ত্রী খুরশিদা বেগম ও তার বোন জামাই পার্শ্ববর্তী রুপসীপাড়া ইউনিয়নের মাষ্টার পাড়া এলাকার মো. ইকবাল এবং ইকবালের স্ত্রী জামিলা আক্তার জড়িত রয়েছে। ইকবাল মাষ্টার পাড়া এলাকায় তার তামাক ক্ষেতে কিছুদিন আগে গাঁজার চাষ করেছিল। জানাজানি হলে সে গাছগুলো তুলে ফেলে।
লামা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন বলেন, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে প্রশাসন ও পুলিশকে অনুরোধ করছি। একই সাথে তিনি বান্দরবান পুলিশ সুপার ও লামা থানা পুলিশকে ধন্যবাদ দেন।