প্রেস বিজ্ঞপ্তি:
কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে ইন্টার্নি ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা সেবা বন্ধ ও তাদের প্রত্যাহার পূর্বক পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগ করে চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা ও সদর হাসপাতালে রোগী ও তার স্বজনদের নামে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং হাসপাতালে কথায় কথায় ধর্মঘট ও তালা মেরে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে গণস্বাক্ষরসহ স্বারকলিপি দিয়েছে জেলার অন্যতম সামাজিক সংগঠন “আমরা কক্সবাজারবাসী” সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবী জানানো হয়

সদর হাসপাতালে সৃষ্ট জঠিলতা দ্রুত সমাধান, জেলার বৃহত্তর চিকিৎসাসেবা প্রতিষ্ঠান সদর হাসপাতালে বার্ণ ইউনিট স্থাপন,পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগ, ইন্টার্ণ চিকিৎসকদের দৌরাত্ম্য বন্ধ, রোগীদের খাবার সরবরাহে অনিয়ম, সদর হাসপাতালে অচল মেডিসিন ল্যাব গুলো দ্রুত চালু, রোহিঙ্গাদের জন্য বিকল্প চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র চালু, হাসপাতালে সংগঠিত ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত পূর্বক মামলা প্রত্যাহার,একই কর্মস্থালে দীর্ঘদিন ধরে চাকরিরতদের বদলী, প্রাইভেট হাসপাতালের সাথে জড়িত ডাক্তার-কর্মকর্তা কর্মচারীদের চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ও হাসপাতালে অনুপস্থিত ডাক্তারদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবীতে উক্ত স্বারকলিপি প্রদান করেন আমরা কক্সবাজারবাসী সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।

নেতৃবৃন্দরা প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করে বলেন,কক্সবাজারে চলছে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মযজ্ঞ। দেশের বিভিন্ন  খাতের উন্নয়নের ধারাবাহিকতায় দেশের স্বাস্থ্য খাতেও ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তাই আপনার যোগ্য নেতৃত্বের প্রতি দেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। সম্প্রতি সময়ে আপনি বিভিন্ন পত্রিকা ও সোস্যাল মিডিয়া থেকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালের চিকিৎসা ক্ষেত্রে অব্যবস্থাপনা সম্পর্কে নিশ্চয় অবগত হয়েছেন। দুর্বল ব্যবস্থাপনার কারণে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ম শৃঙ্খলা প্রায় ভেঙ্গে পড়েছে। প্রতিদিন রোগীর সাথে ইন্টার্নি চিকিৎসকদের প্রায় কোন না কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে চলেছে। বর্তমানে রোগী ও রোগীর স্বজনদের সাথে ইন্টার্নি ডাক্তারদের দুর্ব্যবহার চরম পর্যায়ে পৌছেছে। মূলতঃ  দুর্বল ব্যবস্থাপনা কমিটির কারণে এসব ঘটনা ঘটছে।

নেতৃবৃন্দরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ইন্টার্নি ডাক্তার নিয়োগের আগে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ছিল রোগীর সেবার ক্ষেত্রে একটি আদর্শ হাসপাতাল। আর এখন কক্সবাজার সদর হাসপাতাল ভুল চিকিৎসা ও রোগীর স্বজনদের সাথে খারাপ আচরণের কারণে সাধারণ মানুষ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে ভয় পায়। তাই আমাদের কক্সবাজারবাসীর সংগঠনের দাবী কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে ইন্টার্নি চিকিৎসকদের প্রত্যাহার পূর্বক পর্যাপ্ত চিকিৎসক নিয়োগ করে সদর হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া ইন্টার্নি চিকিৎসক থাকায় কিছু কিছু চিকিৎসক ডিউটি সময়ও প্রাইভেট হাসপাতাল ও চেম্বারে রোগী দেখায় ব্যস্ত থাকেন, ফলে সিনিয়র ডাক্তারদের অনুপস্থিতির কারণে ইন্টার্নি ডাক্তারদের ভুল চিকিৎসা ও রোগীদের সাথে প্রায় সময় হাতাহাতি ঘটনা চলছে। যার জের ধরে হাসপাতালে তালা মেরে চিকিৎসা সেবা বন্ধ রাখার মত অমানবিক ঘটনাও ঘটেছে। ইতিমধ্যে ডাক্তারদের ধর্মঘটের কারণে চিকিৎসার অভাবে শিশুসহ কয়েকজন রোগীর মৃত্যুও হয়েছে। আমরা মনে করি, হাসপাতালে চিকিৎসকদের এ ধরনের ধর্মঘট মানবাধিকারের চরম লংঘন। কারণ চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার গুলোর মধ্যে অন্যতম। তাই আমরা মনে করি হাসপাতালের চিকিৎসা ব্যবস্থায় শৃংঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে হলে ইন্টার্নি ডাক্তারদের সদর হাসপাতাল থেকে প্রত্যাহার করে আগের মত হাসপাতালের চিকিৎসা সেবা ও সুনাম ফিরিয়ে আনতে আপনার দ্রুত হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

উক্ত স্বারকলিপিতে উল্লেখ করে সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয় কক্সবাজার সদর হাসপাতালের কিছু ডাক্তার, নার্স ও কর্মকর্তা-কর্মচারী দীর্ঘ দিন একই হাসপাতালে অবস্থান করার কারণে তাদের সাথে কিছু প্রাইভেট হাসপাতালের যোগাযোগ গড়ে উঠেছে। তাদের অনেকে প্রাইভেট হাসপাতাল ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছে। যার কারণে হাসপাতালে প্যাথলজি পরীক্ষার বিভিন্ন সরঞ্জাম পরিকল্পিত ভাবে অকেজো করে রাখা হয়েছে। যার ফলে রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা বাহির থেকে করিয়ে আনতে ডাক্তারা বাধ্য করছে। তাই সরকারি নিয়মে দীর্ঘ দিন অবস্থানকারী ডাক্তার, নার্স ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বদলীর আদেশ দেয়া হোক। একই সাথে রোহিঙ্গাদের কারণে সদর হাসপাতালে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত রোগী থাকায় স্থানীয়রা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। রোহিঙ্গারা তাদের শরীরে বিভিন্ন রকমের রোগ জীবানু বহন করে চলেছে। ফলে স্থানীয়রা মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। তাই আমাদের দাবী রোহিঙ্গাদের জন্য ক্যাম্পের মধ্যে পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে তাদেরকে সদর হাসপাতাল থেকে সরিয়ে নিয়ে স্থানীয়দের চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য আপনার নিকট দাবী জানান। তাছাড়াও সদর হাসপাতালে রোগীদের নি¤œমানের খাবার সরবরাহের অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘ দিন ধরে। এ ব্যাপারেও প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন।

উক্ত স্বারকলিপি প্রদানকালে আমরা কক্সবাজারবাসীর পক্ষে উপস্থিত ছিলেন,বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, সমির পাল, একে ফরিদ আহমদ, করিম উল্লাহ, নাজিম উদ্দিন, মহসিন শেখ, এইচ.এম. নজরুল ইসলাম, এম. জসিম উদ্দিন, আজিজ উদ্দিন, দেলোয়ার হোসেন চৌধুরী, নেজাম উদ্দিন, রফিক আহমদ, ফারুক আহমদ, ইব্রাহিম খলিল মামুন, আবছার উদ্দিন, জাহিদ আনোয়ার, মোঃ আমিন, আতাউর রহমান রোকন, কামাল উদ্দিন, কফিল উদ্দিন, জসিম উদ্দিন শাহরুখ, মোঃ রাসেল, হারুন-অর-রশিদ সহ বিপুল সংখ্যা নেতৃবৃন্দ।

উল্লেখ্য উক্ত স্বারকলিপিতে গণস্বাক্ষর করেন কক্সবাজার পৌর মেয়র মুজিবুর রহমানসহ রাজনৈতিক, পেশাজীবি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা।