জয়নাল আবেদীন টুক্কু, নাইক্ষ্যংছড়ি : বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা: মাহফুজুর রহমানকে আটকে অভিযান চালিয়েছে পুলিশ।

গত ১৫এপ্রিল সকালে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা ও ঈদগাও ফাড়ি পুলিশ হাসপাতালের কোর্টার এলাকায় যৌথ অভিযান চালায়। তবে পুলিশ তাঁর সন্ধান পাননি। স্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এই অভিযান চালানো হয় বলে থানা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে।

কক্সবাজার পুলিশ সুপার বরাবর গত ৮এপ্রিল দেওয়া অভিযোগে বলা হয়েছে- অভিযোগকারী ফারহানা নিগারের সাথে ২০১৬ সনে বিয়ে হয় ডা: মাহফুজুর রহমানের। পরের বছর ৬ নভেম্বর তাদের একটি মেয়ে সন্তান জম্ম নেয়। বিয়ের পর কক্সবাজারের ঈদগাও বাজার এলাকায় ‘ঈদগাও ট্রমা সেন্টার ও ডক্টর ল্যাব’ নামে দুটি ব্যবসায়িক ল্যাব চালু করেন মাহফুজ এবং সেখানে বাসা ভাড়া নিয়ে স্ত্রীসহ থাকতেন। এক পর্যায়ে ল্যাব চালানোর জন্য স্ত্রী ফারহানার কাছে ৪০লক্ষ টাকা যৌতুক দাবি করে নানা ভাবে নির্যাতন করে তার স্বামী।
নির্যাতন সইতে না পেরে ১৭ মাস বয়সের শিশুকে নিয়ে ভৈরবে পিতার বাড়িতে আশ্রয় নেন ফারহানা। ৪এপ্রিল ডা: মাহফুজ সেখানে গিয়ে কৌশলে ১৭ মাসের শিশুটি নিয়ে পালিয়ে যান। আর তখন থেকে তিনি কর্মস্থল হাসপাতালে অনুপস্থিত রয়েছেন।

এদিকে সন্তানের শোকে কাতর ফারহানা নিগার গত ৮এপ্রিল কক্সবাজার পুলিশ সুপার বরাবর দুগ্ধজাতক শিশুকে উদ্ধারের জন্য মানবিক আবেদন করেছেন। ওই অভিযোগটি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য ঈদগাও ফাড়ি ইনচার্জকে নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার। এদিকে ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে সোমবার সকালে নাইক্ষ্য্যংছড়ি হাসপাতালের কোর্টারে অভিযান চালায় পুলিশ।

নির্যাতিতা গৃহবধূ ফারহানা নিগার মুঠোফোনে জানান, ‘আমার দুগ্ধ শিশুকে নিয়ে মাহফুজ আত্মগোপন করে আছে। কোনভাবে তার সাথে যোগাযোগ করছে না’। এই ঘটনায় শিশু সন্তানকে উদ্ধার এবং আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি পুলিশ বাহিনীর সহযোগিতা চেয়েছেন।

এই প্রসঙ্গে নাইক্ষ্যংছড়ি থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান- ফারহানা নিগার কক্সবাজারে অভিযোগ করেছেন। মূলত অভিযানে ঈদগাও পুলিশকে সহযোগিতা করা হয়েছে।

অন্যদিকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও প: প কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা: মাহমুদ আল ফারাবি জানান- বিনা ছুটিতে ডা: মাহফুজ হাসপাতালে অনুপস্থিতির বিষয়টি গত ৪ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। পুলিশ ডা: মাহফুজকে সন্ধানের বিষয়টি তিনি স্বীকার করেন।

প্রসঙ্গত, ডা: মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে স্ত্রী নির্যাতন ছাড়াও অনিয়ম, দূর্নীতি ও রোগীদের সাথে অশালীন আচরণের অভিযোগ রয়েছে। তিনি যখন যে কর্মস্থলে থাকেন সেখানে প্রাইভেট ক্লিনিক খুলে ব্যবসা চালুর অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।