‘শকুনের থাবায় তেতৈয়া এবতেদায়ী মাদ্রাসা, নিস্তার চায় রোজিনা’ শিরোনামে ১৬ এপ্রিল কক্সবাজারের একটি স্থানীয় পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণ মিথ্যা, ষড়যন্ত্রমূলক ও রোজিনার সাজানো গল্প বলে দাবী মাদরাসা কর্তৃপক্ষের। সংবাদে মাদরাসার সভাপতি আবু সৈয়দ, তৎকালীন প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর ছিদ্দিক থেকে শুরু করে প্রায় সব শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আলেমদের ব্যক্তিগত চরিত্র হননের চেষ্টা করা হয়েছে। সংবাদে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে অর্থ আত্নসাতের যেসব অভিযোগ তুলা হয়েছে, তা ডাহা মিথ্যা।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কক্সবাজার সদরের খুরুশকুলের সম্ভাবনায় একটি দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানামুখি ষড়যন্ত্র শুরু করেছে এলাকার চিহ্নিত একটি চক্র। চারিত্রিক স্খলনের কারণে এক সময় অব্যাহতি দেয়া এক নারী শিক্ষিকার নেতৃত্বে চিহ্নিত কয়েকজন লোক বর্তমান শিক্ষকদের কর্মস্থলে যেতে বারণ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এলাকার সর্বসাধারণ সহযোগিতায় ২০১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় তালিমুল কুরআন স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসা। বর্তমানে মাদরাসাটিতে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী ও ৮ জন শিক্ষক রয়েছে। অজপাড়ায় এই প্রতিষ্ঠান আলোর মশাল হিসেবে ভূমিকা রেখে চলছে।
শুরুতে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন মাওলানা আবু বক্কর ছিদ্দিক। দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরের মাথায় তিনি পেশাগত প্রয়োজনে সৌদিয়া যান। পরে তৎকালীন কর্মরতদের মধ্য থেকে সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে রোজিনা আকতারকে ভারপ্রাপ্ত প্রধানের দায়িত্ব দেয়া হয়।
দুঃখের বিষয়, দায়িত্ব পাওয়ার পর বদলে যায় সেই আগের রোজিনা। অভিযোগ আসতে থাকে চারিত্রিক স্খলনসহ নানা অভিযোগ। মাদরাসা সময়ের পরে বিভিন্ন বখাটে ছেলেদের নিয়ে অফিসেই আড্ডা জমাতেন। ক্লাস সময়েও চলে যেতেন অজানা ঠিকানায়। শুরু করেন আপত্তিকর চলাফেরা। প্রতিদিন অভিযোগ আসতে থাকে কর্তৃপক্ষের কাছে। এভাবে চলতে চলতে ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল খবর এলো, ১ বখাটের সাথে চম্পট দিয়েছে রোজিনা। এরপর দীর্ঘদিন নিরোদ্দেশ। খোঁজখবর নেই। যাওয়ার সময় নিয়ে যায় মাদরাসার ভবন করার জন্য রক্ষিত আড়াই লাখ টাকা। সেই সাথে সরিয়ে নেয় মাদরাসার রেজুলেশন খাতা ও মূল্যবান কাগজপত্র। এমনকি, এই সময় কাউকে দায়িত্ব দিয়ে যায়নি রোজিনা। প্রতিষ্ঠান রক্ষার স্বার্থে এলাকাবাসীর পরামর্শে মাওলানা আনসার উল্লাহকে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দেয় মাদরাসা কমিটি। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি সুন্দরভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে।
মাদ্রাসা সংশ্লিষ্টদের দাবি, ১ বছর পালিয়ে থাকার পর আচমকা উদয় হন রোজিনা আকতার। আবারো প্রধান শিক্ষক পদ নিতে নানামুখি তদবির শুরু করেছেন। তার পিতা মোহাম্মদ আলম, ভাই মকসুদ উল্লাহ, রফিক উল্লাহসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র নানাভাবে চাপ দিতে থাকেন। তাতে শেষ নয়, বর্তমান কমিটি ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছেন। ওই পদ ফিরিয়ে না দিলে প্রাণ নাশের হুমকি ধমকি দিচ্ছে।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, গত এক বছর আত্নগোপনে থাকলেও রোজিনা এখনো তাকে বিয়ে করেনি। অবৈধ সম্পর্কে দিন কাটাচ্ছে ৩০ বছর বয়সী রোজিনা আকতার। তার কারণে যেমন এলাকার বদনাম হচ্ছে, তেমনি বর্তমানে কর্মরত শিক্ষকরাও আত্নসম্মান হানির আশঙ্কা করছে। বিশেষ করে কর্মরত ৮ শিক্ষকের মধ্যে ৬ জন্য নারী। তারা অবিবাহিত। রোজিনা আকতারকে পুনর্বহাল করলে একযোগে সকল শিক্ষক পদত্যাগ করবে বলে জানিয়েছেন। এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি আবু সৈয়দের কাছে লিখিত আবেদনও দিয়েছে তারা।
প্রকাশিত সংবাদে কোন মহলকে বিভ্রান্ত না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সদস্যরা। সেই সাথে সংবাদকর্মীদের সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে আরো নিরপেক্ষ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে তারা।