মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

বুধবার ১৭ এপ্রিল চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গত ১৮ মার্চ স্থগিত হওয়া পালাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের ভোটগ্রহন করা হবে। এটি নিতান্তই নিয়ম রক্ষার একটি নির্বাচন। গত ১৮ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে চকরিয়া উপজেলার ৯৯ টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ৯৮ টি ভোটকেন্দ্রে শান্তিপুর্ণভাবে ভোট গ্রহন করা হলেও চকরিয়া পৌরসভার পালাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গোলযোগপুর্ণ পরিস্থিতির কারণে রিটার্নিং অফিসার ওইদিন এই কেন্দ্রে ভোটগ্রহন স্থগিত ঘোষনা করেন। ১৮ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৩ জন প্রার্থীর মধ্যে ৯৮ টি কেন্দ্রে জেসমিন হক জেসি কলস প্রতীক নিয়ে পেয়েছিলেন-৩৪২৯৪ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাফিয়া বেগম সম্পা ফুটবল প্রতীক নিয়ে পেয়েছিলেন-২৯৯০৩ ভোট। দু’জনের মধ্যে জেসমিন হক জেসি ৪৩৯১ ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। পালাকাটা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ভোটার সংখ্যা ৪৭৬৮ জন। সে হিসাবে জেসমিন হক জেসি এগিয়ে থাকা ব্যবধানকৃত ভোটের চেয়ে উক্ত কেন্দ্রে মাত্র ৩৭৭ টি ভোট বেশী থাকায় কর্তৃপক্ষকে বাধ্য হয়ে নিয়ম রক্ষার এই নির্বাচন করতে হচ্ছে। কারণ নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী সাফিয়া বেগম সম্পাকে জিতলে হলে আরো কমপক্ষে ৪৩৯২ ভোট পেতে হবে। যা উক্ত ভোট কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যার শতকরা ৯২ ভাগ। কিন্তু সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হওয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দেশের কোথাও শতকরা সর্বোচ্চ ৪০ ভাগের বেশী ভোট কাস্ট হয়নি। তাই ৯২% ভোট কাস্ট করা যেমন সম্ভব নয়, তেমনি কাস্টিং ভোটের শতভাগও সাফিয়া বেগম সম্পার অনুকূলে পড়বে-এমন আশা করা একেবারেই ভূল। সুতারাং সব হিসাব নিকাশে নিয়মরক্ষার এই নির্বাচনে জেসমিন হক জেসি জিতছেন-এটা নিশ্চিত করে বলা যায়। তৃতীয় যিনি প্রার্থী জাহানারা পারভিন হাঁস প্রতীকে মাত্র ২১৮০৭ ভোট পাওয়ায় বুধবারের পালাকাটা সরকারি প্রাইমারী স্কুল ভোটকেন্দ্রের হিসাব নিকাশে তাঁকে আনার কোন দরকার নেই।
এদিকে, এই ভোট কেন্দ্রে প্রশাসন ‘মশা মারতে কামানদাগা’-র মতই প্রস্তুতি নিয়েছেন। কক্সবাজার জেলা নির্বাচন অফিসার ও চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ বশির আহমেদ সিবিএন-কে জানান, পালাকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে বুধবার ভোট গ্রহনের জন্য চকরিয়া চৌকি আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব কুমার দেব কে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার রেজাউল করিমকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এক প্লাটুন বিজিবি ভোট কেন্দ্রের নিরাপত্তায় সার্বক্ষণিক কাজ করবে। এছাড়া ১২ জন পুলিশ ভোট কেন্দ্রে অবস্থান, ১১ জন পুলিশ ভ্রাম্যমাণ ও ৮ জন পুলিশ স্ট্রাকিং ফোর্স হিসাবে দায়িত্বপালন করবেন বলে সহকারী রিটার্নিং অফিসার ও চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন সিবিএন-কে জানিয়েছেন। চকরিয়া উপজেলার বরইতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আবছার উক্ত ভোট কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার হিসাবে দায়িত্বপালন করছেন। মঙ্গলবার বিকেলেই ব্যালট পেপার, শীল, অমোচনীয় কালি, বিভিন্ন ফরম সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ভোটগ্রহনের সামগ্রী নিয়ে প্রিজাইংডি অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসার ও নিরাপত্তারক্ষীরা ভোটকেন্দ্রে চলে গেছেন। এই ভোটকেন্দ্রে ১০ বুথ রয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ মার্চ অনুষ্ঠিত চকরিয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে ফজলুল করিম সাঈদী ও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে মকছুদুল হক ছুট্টো নির্বাচিত হয়েছেন এবং তাঁদের নামে ইতিমধ্যে গত ৪ এপ্রিল গেজেট প্রকাশিত হয়েছে। তাঁরা দু’জন আগামী ২৫ এপ্রিল শপথ গ্রহন করবেন।