মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

রাষ্ট্রের প্রদত্ত সুযোগ গ্রহন করে যেসব ইয়াবাবাজ ও হুন্ডিবাজ আগামী আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে আত্মসমর্পণ করবেনা তাদেরকে নিঃশেষ করে তাদের অবৈধ বাণিজ্য চুরমার করে দেয়া হবে। যেসব জনপ্রতিনিধি ইয়াবাবাজী, হুন্ডাবাজীতে জড়িত কিংবা তাদের সহায়তা করে থাকে, সেসব স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের বিষয়ে অনুসন্ধান করে তাদেরকে জনপ্রতিনিধির পদে আর বসতে দেয়া হবেনা। সেসব জনপ্রতিনিধিকে তাদের পদ থেকে সরানোর জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে জোরালোভাবে লেখা হবে। একইভাবে ইয়াবাবাজী ও হুন্ডিবাজীর সাথে পরোক্ষভাবেও যাদের জড়িত থাকার প্রমান পাওয়া যাবে তাদেরকে আইনশৃঙ্খলা কমিটি, চোরাচালান প্রতিরোধ কমিটি, উন্নয়ন সমন্বয় কমিটি সহ প্রশাসনের কোন কমিটিতে থাকতে দেয়া হবেনা। শুধু তাই নয়, হুন্ডিবাজ ও ইয়াবাজদের কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটিতেও থাকতে দেয়া হবেনা। সমাজের প্রতিটি স্থরে স্থরে রাষ্ট্রের এসব জগন্য শত্রুদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে ইনশাল্লাহ। এ ম্যাসেজ ইয়াবাবাজ ও হুন্ডিবাজদের পৌঁছে দিতে হবে। শুক্রবার ১২ এপ্রিল বিকেলে টেকনাফ বাসষ্টেশন চত্বরে মাদক, দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গী বিরোধী এক সমাবেশে ইয়াববাজ ও হুন্ডিবাজের ‘মূর্তিমান আতংক’ বলে পরিচিত কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। গণমাধ্যম কর্মীদের অধিকাংশই ইয়াবাবাজ ও হুন্ডিবাজের বিরুদ্ধে লিখছেন এবং এবিষয়ে জনমত সৃষ্টিতে অপরিসীম ভূমিকা রাখছেন। তাদের এ ভূমিকা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তবে গুটি কয়েক গণমাধ্যম কর্মী কিছু ভাল মানুষকে ইয়াবাবাজ বানানোর অপচেষ্টা করছে। যেটা কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়। এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম উদ্দ্যেশমূলক ভাবে কারো বিরুদ্ধে নালিখে যাচাই বাছাই করে সঠিক তথ্য উপাত্ত সহ প্রকৃত ইয়াবাবাজ ও হুন্ডিবাজদের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমে লেখার জন্য গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানান। এতে রাষ্ট্রও সহজে সঠিক তথ্য পাবে। সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ইয়াবাবাজ ও হুন্ডিবাজদের সাক্ষাত ‘আজরাইল’ হিসাবে খ্যাতি পাওয়া টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বিপিএম-বার বলেন, টেকনাফের ভাত খাই, তাই টেকনাফে ইয়াবার দুর্গন্ধমুক্ত নির্মল অক্সিজেনের শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে চাই। আগামীতে কোন ইয়াবাবাজ ও হুন্ডিবাজ আত্মসমর্পণ নাকরলে স্থানীয় জনগণই তাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে তাদের নিঃশ্বাস বন্ধ করে দেবে। টেকনাফের নব নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আলম ইয়াবাবাজ ও হুন্ডিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোরভাবে অবস্থান নেয়ায় তাঁকে স্বাগত জানিয়ে টেকনাফ মডেল থানার সফল ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বিপিএম-বার আরো বলেন, ইয়াবাবাজ ও হুন্ডিবাজদের বিরুদ্ধে এই অভিযানে এখন পুলিশ শুধু একা নয়, সমগ্র টেকনাফের সাধারণ জনগণ ও বিবেকবান মানুষেরা ইয়াবাবাজীর বিরুদ্ধে যোদ্ধা হিসাবে জেগে উঠেছে। তিনি সেই ঐতিহাসিক গানের সুরে বলেন-‘তোরা সব জয়ধ্বনি কর, ঐ নতুনের কেতন উড়ে কাল বৈশাখের ঝড়, তোরা সব জয়ধ্বনি কর,-।’ সাহসিকতায় বাংলাদেশ পুলিশের রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন সম্মাননা একাধিকবার বিপিএম পদক পাওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বলেন-টেকনাফবাসীকে যেকোন মূল্যে মাদকবাজীর অভিশাপ থেকে মুক্ত করে ছাড়বো। এজন্য রাষ্ট্রের পক্ষে পুলিশের যা যা করা দরকার, তার সবই করা হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন-ইয়াবাবাজদের ভাতে মারা হবে, পানিতে মারা হবে, তাদের স্বপ্নের সবকিছু ভেঙ্গে চুরমার করে দেয়া হবে। ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বিপিএম কবিতার সুরে বলেন-‘যাবনা ভাই ঘরে, আর যাবনা ভাই ঘরে, ঘরে ফিরব তবে, টেকনাফকে মাদকমুক্ত করে।
ইউএনডিপি’র কমিউনিটি রিকভারি এন্ড রেসিলেন্স প্রজেক্ট (সিটুআরপি) এর সহায়তায় কক্সবাজার জেলা পুলিশ আয়োজিত এ সমাবেশে অন্যানের মধ্যে টেকনাফ উপজেলা পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান নুরুল আলম, টেকনাফ জামেয়ার মুহতামিম মুফতি মাওলানা কিফায়াতুল্লাহ শফিক, টেকনাফ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শফিক মিয়া, সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন, টেকনাফ উপজেলা কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি নুরুল হুদা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। ‘মাদক ও জঙ্গীবাদকে না বলুন’-এই প্রতিপাদ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে শিক্ষক, গণমাধ্যম কর্মী, ব্যবসায়ী, আলেম ওলামা, জনপ্রতিনিধি, পেশাজীবী, প্রচুর মহিলা সহ সর্বস্তরের লোকের সমাগম ঘটে।