জসিম সিদ্দিকী, কক্সবাজার :

গত কিছু দিন ধরে কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরুশকুল এলাকায় একজন মৎস্য শ্রমিক নিখোঁজ হওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে নানা অভিযোগ উঠে আসছিল বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়। এনিয়ে ৪ এপ্রিল ভুক্তভোগি পরিবার একটি দুষ্ট চক্রের সাথে হাত মিলিয়ে বোট মালিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ এনে থানায় একটি এজাহার দায়ের করে। এজাহার দায়ের করার পর থেকে ওই চক্রটি ফিশিং বোট মালিককে থানা কোর্টসহ নানাভাবে হয়রানি করে আসছিলো। শুধু তাই নয়, বোট মালিক ২০ বছর ধরে সুনামের সাথে ফিশিং বোটের ব্যবসা চালিয়ে আসছে। তার সুনাম এবং জীবন বিপন্ন করতে ওই চক্রটি থানা কোর্টে এবং পত্র-পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে নানাভাবে অপ-প্রচার চালিয়ে আসছিলো।

অবশেষে ৯ এপ্রিল সকাল ১০টার দিকে খুরুশকুল দক্ষিণ রাস্থার পাড়াস্থ চৌ-রাস্তায় বটগাছ তালা থেকে ৯ দিন ধরে নিখোঁজ থাকা ওই মৎস্য শ্রমিককে হাতে-নাতে ধরে চেয়ারম্যানের কাছে হস্তান্তর করে বোট মালিক। এ ঘটনায় পুরো খুরুশকুলজুড়ে ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা চলছে। সবার একটাই প্রশ্ন ছিলো মৃত মানুষ কিভাবে জীবিত হয়ে বাড়ি ফিরলো! কার জন্য থানায় হত্যা মামলা! কারা এগুলো করলো! তবে তাদের খুঁজতে আইন-শৃংখলা বাহিনী তৎপর রয়েছে বলে একটি সুত্র দাবী করেছে।

জানাগেছে, খুরুশকুল এলাকার বিশিষ্ট বোট ব্যবসায়ী মৃত. ফয়েজ আহমদের ছেলে নুরুল কবির বহদ্দারের একটি ফিশিং বোট ১ এপ্রিল মাছ ধরার উদ্দেশ্য সাগরে যায়। ওই ফিশিং বোটে একই এলাকার মৃত এনামুল হকের ছেলে আরিফুল ইসলামও ছিলো। কিন্তু আরিফুল ইসলাম অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে ওই ফিশিং বোট থেকে নেমে কুলে ফিরে আসে। পরে ওই বোটের মাঝি-মাল্লারা আরিফের সন্ধান না পাওয়ায় বোট মালিককে বিষয়টি অবগত করে। পরে আরিফকে খোঁজ করতে বোট মালিক আরেকটি ফিশিং বোট নিয়ে সাগরে যায়। কিন্তু আরিফকে খোঁজে পাওয়া যায়নি।

টানা ৯ দিন ধরে নিখোঁজ আরিফের পরিবার আরিফকে না খুঁজে উল্টো থানা কোর্টে ব্যস্ত ছিলো বোট মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। তাদের দাবী ছিলো আরিফকে পরিকল্পিতভাবে বোট মালিকের নিদের্শে বোট থেকে সাগরে ফেলে দেয়া হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন সমাজিক গণমাধ্যম ও স্থানীয় পত্র-পত্রিকায় বোট মালিকের বিরুদ্ধে বানোয়াট ও ষড়যন্ত্রমূলক একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু অবশেষে মৎস্য শ্রমিক আরিফ ফিরে আসায় তাদের উদ্দেশ্য সফল হয়নি।

এ ঘটনা নিয়ে ৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ১১টার দিকে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার বোট মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দরা কক্সবাজার সদর থানায় ওসি সাথে বৈঠক করেন। উক্ত বৈঠকে ঘটনা পর্যালোচনা করে নিখোঁজ থাকা আরিফুল ইসলাম ও তার মা হাত জোর করে বোট মালিকের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

এব্যাপারে ফিশিং বোট মালিক নুরুল কবির বহদ্দার জানিয়েছেন, ঘটনা পরিকল্পিতভাবে হয়েছে। তবে মহান আল্লাহ যা করেন তা ভালোর জন্য করেন। আরিফ ফিরে এসেছে এজন্য আল্লাহ’র কাছে শোকরিয়া জ্ঞাপন করছি।