সিবিএন ডেস্ক:
শর্ত সাপেক্ষে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্যারোলে মুক্তি দিতে পারে সরকার। যদি দলটির পক্ষ থেকে প্যারোলে মুক্তি চেয়ে আবেদন করা হয় কিংবা খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় নিয়োজিত মেডিক্যাল বোর্ড মুক্তির সুপারিশ করে, সরকার তা বিবেচনা করবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিশ্বস্ত একটি সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। সূত্রটি আরও বলছে, বিএনপি থেকে নির্বাচিত পাঁচ জন সংসদ সদস্য শপথ নিতে চান। তারা স্পিকারের সঙ্গে দেখাও করেছেন। আগামী ২০ এপ্রিল নাগাদ তারা শপথ নিতে পারেন।

যদিও আওয়ামী লীগ নেতারা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়া দণ্ডিত আসামি। তাকে রাজনৈতিকভাবে মুক্তি দেওয়ার সুযোগ নেই। একজন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শুধু তখনই প্যারোলে মুক্তি পেতে পারেন, যখন তার কোনও নিকট আত্মীয়—স্বজন মারা যান, কিংবা তিনি নিজে অসুস্থ হন।

এই প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে রাজনৈতিকভাবে প্যারোলে মুক্তি দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। যেসব পরিস্থিতিতে প্যারোলে কাউকে মুক্তি দেওয়া হয়, সেগুলোর কোনোটাই তার জন্য প্রযোজ্য নয়। তাকে আইনি প্রক্রিয়াতেই মুক্তি পেতে হবে। তবে বিএনপির পক্ষ থেকে তার অসুস্থতার ব্যাপারে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে এবং বারবার ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির দাবি করা হচ্ছে, তার জবাবে বলতে চাই- একজন দণ্ডিত আসামির জন্য জেলকোড অনুযায়ী যে চিকিৎসার সুযোগ রয়েছে, সেটার সর্বোচ্চটাই করছে কারা কর্তৃপক্ষ। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় ও হাসপাতাল দেশের সেরা হাসপাতাল। সেখানে তার চিকিৎসা চলছে। তারপরও বিএনপি নেতারা যদি তাদের চেয়ারপারসনের উন্নত চিকিৎসার স্বার্থে প্যারোলে মুক্তির আবেদন করেন এবং যদি তার চিকিৎসার্থে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড মুক্তির সুপারিশ করেন, সেক্ষেত্রে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন যে- সেটা বিবেচনাযোগ্য।’

যদিও বিএনপির পক্ষ থেকে প্যারোলে নয় বরং খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ মুক্তি দাবি করা হচ্ছে। রবিবার (৭ এপ্রিল) দলটির একটি কর্মসূচিতে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা বলেছি যে, নিঃশর্তভাবে দেশনেত্রীকে (খালেদা জিয়া) মুক্তি দিতে হবে। আমরা কোনও প্যারোলের কথা বলিনি। আমরা খুব পরিষ্কারভাবে বলছি, জামিন পাওয়া তার অধিকার। যে মিথ্যা মামলায় তাকে জোর করে সাজা দেওয়া হয়েছে, সেই মামলায় অন্যান্য ব্যক্তিরা সবাই জামিনে রয়েছেন।’ ওই বক্তব্যে খালেদার মুক্তির জন্য আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে নেতাকর্মীদের আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল।

এর আগে, শনিবার (৬ এপ্রিল) জামালপুরে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ‘খালেদা জিয়া প্যারোলে মুক্তির আবেদন করলে বিষয়টি বিবেচনা করবে সরকার’। এরপরই খালেদা জিয়ার প্যারোলে মুক্তির বিষয়টি আলোচনায় আসে। রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে যে, সরকার ও বিএনপির বোঝাপাড়ার ভিত্তিতে প্যারোলে মুক্তি পেতে যাচ্ছেন খালেদা জিয়া।

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হয়ে কারাবাস করছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। কারাগারে অসুস্থ হলে তাকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।