৩৬ কোটি টাকার সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প 

শাহেদ মিজান, সিবিএন:

কক্সবাজার শহরের প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী তিন দীঘির সৌন্দর্য্য বর্ধনের উদ্যোগ নিয়েছে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)। পুকুর তিনটি হলো শহরের লালদীঘি, গোলদীঘি ও বাজারঘাটাস্থ নাপিতা পুকুর। এই তিন পুুকুরকে ঘিরে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে ৩৬ কোটি টাকার সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প। সম্প্রতি এই প্রকল্পের কার্যাদেশও প্রদান করা হয়েছে। সৌন্দর্য্য বর্ধন হলে এই পুকুর তিনটি হবে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের নতুন বিনোদনের স্পট। কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকদের বাড়তি বেড়ানোর স্থান হবে এই তিনি পুকুর। সেই সাথে শহরবাসীর সুন্দর ও স্বস্তিদায়ক অবসর সময়ও কাটবে সেখানে। এমন পরিকল্পনা নিয়ে এই তিন পুকুরের সৌন্দর্য্য বর্ধন প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)। কউক’র চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদ এমনটি জানিয়েছেন।

কউক সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজার শহরকে একটি পরিকল্পিত পর্যটন নগরী হিসেবে গড়তেই শহরের লালদীঘি, গোলদীঘি ও বাজারঘাটাস্থ নাপিতা পুকুরকে কেন্দ্র করে সৌন্দর্যবর্ধন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এসব পুকুর পুনঃখননসহ ভৌত সুযোগ সুবিধার উন্নয়ন ঘটিয়ে আধুনিক ও পর্যটনবান্ধব হিসাবে গড়ে তোলা হবে। ইতোমধ্যে সরকারিভাবে ই-টেন্ডারের মাধ্যমে ৩৬ কোটি টাকার তিনটি প্রকল্পের কার্যাদেশ তিনটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়েছে। ২০২০ সালের জুনের দিকে প্রকল্প তিনটির কাজ শেষ হবার কথা রয়েছে। এসব প্রকল্পের আওতায় পুকুর তিনটি ঘিরে সবুজ বেষ্টনী, সাইকেল স্ট্যান্ড, পুকুরের পাড় বাঁধাই, ওয়াকওয়ে নির্মাণ, রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ, আলোকসজ্জা, বিদ্যুতায়ন, পয়:নিষ্কাশন ও পানি সরবরাহ ব্যবস্থা রয়েছে। প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে শহরের চিত্রই পাল্টে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কউক চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ বলেন, বিশে^র দীর্ঘতম সৈকতের নগরী হিসেবে কক্সবাজারের প্রতি বিশ^বাসীর আলাদা টান রয়েছে। এখানে তবে শহরের ভেতর সৈকত ছাড়া বেড়ানো আর তেমন কোনো স্পট নেই। এতে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা শহরের ভেতর ঘুরতে পারে না। এতে তারা অনেক ক্ষেত্রে বিরক্তি ও সংকীর্ণতায় ভোগেন। একই সাথে মূল শহরটি ইট-কংক্রিটসহ নানা স্থাপনায় জঞ্জাল হয়ে গেছে। এতে শহরবাসীর স্বস্তির নি:শ^াস নেয়ার মতো কোনো স্থান নেই। এসব বিবেচনায় কক্সবাজারে প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী এই তিন পুকুরের সৌন্দর্য্য বর্ধন প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বের নিয়ে বাস্তবায়ন করছি। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে এই তিন পুকুর হবে অত্যন্ত আনন্দদায়ক বিনোদনের স্পট। যেটা পুরো দেশজুুড়ে পর্যটকসহ সর্বসাধারণের নজর কাড়বে।

ক্রমান্বয়ে কক্সবাজারকে সাজানো কথা জানিয়ে কউক চেয়ারম্যান আরো বলেন, কক্সবাজারকে সাজাতে কউক গঠনের পর তিন বছর পার করছি। প্রথম বছর পুরো জেলার সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলো সনাক্ত করেছি। ২য় বছরে এগুলোর প্রকল্প তৈরি ও একনেকে অনুমোদনের জন্য সম্ভাব্য বাজেট চেয়ে মন্ত্রনালয়ে প্রস্তাবনা দেয়া হয়েছে এবং কিছু কিছু প্রকল্প পাশও হয়েছে। অনুমোদন ও বাজেট পাওয়া প্রকল্পগুলোর কিছু কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। চলমান প্রকল্পের মাঝে রয়েছে কউকের বহুতল ভবণ। আর তিন পুষ্করিণী আধুনিকায়ন। এর পরের প্রকল্প তিনি পুকুরের সৌন্দর্য্য বর্ধন। এভাবে ক্রমান্বয়ে কক্সবাজার সৌন্দর্য্যের একটি নগরী হিসেবে সাজিয়ে তোলা হবে।

কউক চেয়ারম্যান লে. কর্নেল (অব.) ফোরকান আহমদ বলেন, ‘খুব শীঘ্রই পুকুরগুলো পুন:খননের মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ শুরু হবে। শহরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও দীঘি তিনটির আধুনিকায়নের স্বার্থেই দীঘি তিনটির আশপাশে অবৈধভাবে গড়ে উঠা স্থাপনাগুলো সরিয়ে বা সরকারি জমি পুনরুদ্ধার করেই কাজ শুরু করা হবে। ইতোমধ্যে মসজিদ ও রাজনৈতিক দলের অফিসগুলো সমঝোতার মাধ্যমে অন্যত্র সরিয়ে নিতে দায়িত্বশীলদের সাথে কয়েকবার বৈঠক হয়েছেও জানান তিনি।’