সংবাদদাতাঃ
কক্সবাজার পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের রোজিনা আক্তার (২৭) নামের এক নারীকে ঘিরে বিতর্কের কোন শেষ নাই। প্রতিদিন কোন না কোন মানুষকে নানাভাবে হয়রানি করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তার হয়রানী থেকে বাঁচতে পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছে স্থানীয় বাসিন্দারা।
রোজিনা আক্তার পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের পূর্ব কুতুবদিয়া পাড়া ফদনার ডেইল এলাকার মোহাম্মদ ইলিয়াছের স্ত্রী। তার বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর মডেল থানা, জেলা পুলিশসহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ ও মামলা রয়েছে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।
কুতুবদিয়া পাড়ার আয়েরা বেগম নামের এক মহিলা ৬ ফেব্রুয়ারি রোজিনা আকতারের বিরুদ্ধে মামলা করে। মামলা নং-২৯/১৪৯। এ মামলায় এজাহারভুক্ত ৫ আসামির মধ্যে রোজিনা ৩ নম্বর আসামি।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি বহুল আলোচিত রোজিনাকে মামলায় গ্রেফতার করেছিল সদর থানা পুলিশ।
মামলার বাদী আয়েরা বেগম পূর্ব কুতুবদিয়া পাড়ার ফদনার ডেইল এলাকার মৃত নুরুল কাশেমের স্ত্রী।
ওই মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ ফেব্রুয়ারি সকালে রোজিনা তার স্বামী ইলিয়াছসহ একদল সন্ত্রাসী আয়েরা বেগমের বসত ঘরে ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
চিহ্নিত দুর্বৃত্তদের ব্যাপক মারধরে আয়েরা বেগম মারাত্মক আঘাতপ্রাপ্ত হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। ঘটনার অন্যতম নায়ক রোজিনা আক্তার বলেও দাবি করেছে ভিকটিম।
ভুক্তভোগী স্থানীয় বাসিন্দা সাজেদা বেগম জানিয়েছেন, রোজিনা আক্তার একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি। তার বিষয়ে এলাকার সবার কাছে জানাশোনা রয়েছে।
প্রশাসনকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে সে এলাকার সাধারণ মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে হয়রানি করে আসছে। রাঘব বোয়ালদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে থাকায় রোজিনার বিরুদ্ধে প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা নেয় না।
একই অভিযোগ স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ রফিক, নুরুল আফসারসহ অনেকের।
তারা জানিয়েছে, রোজিনার নানামুখী হয়রানি ও নির্যাতনে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। প্রশাসনের কাছেও প্রতিকার পাচ্ছে না ভুক্তভোগীরা।
সাজেদা বেগম জানিয়েছে, রোজিনার দায়ের করা মিথ্যা ও সাজানো মামলায় (জিআর-১৯৮/১৯) উচ্চ আদালত থেকে তারা জামিন নেয়। এই খবরের পর নানাভাবে হুমকি ধমকি দিতে থাকে রোজিনা ও তার লোকজন। আরো মিথ্যা মামলা করতে থাকে। এমনকি নিজের মেয়েকে নিজে মেরে আহত করে, ভিকটিম সাজিয়ে মামলাও করেছে রোজিনা। এরক অসংখ্য নির্লজ্জ ঘটনার প্রমাণ রয়েছে। যা সরেজমিন নিরপেক্ষ তদন্ত করলে বের হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে রোজিনা আক্তারকে মুঠোফোনে পাওয়া যায়নি।
তবে, স্বামী ইলিয়াছের দাবী, তার স্ত্রী একজন মানবাধিকার কর্মী। অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় এলাকার কিছু চিহ্নিত অপরাধী তার বিরুদ্ধে উঠেপড়ে লেগেছে। ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা চান তিনি।


এদিকে, অভিযুক্ত রোজিনা আক্তারের একটি ভয়েস রেকর্ড সমিতি পাড়া, কুতুবদিয়া পাড়া, ফদনার ডেইলসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষের হাতে হাতে।
রেকর্ডে রোজিনা বলেছে, ‘আমাকে গ্রেফতার করা হলে আরো ১০০ জন গডফাদার গ্রেফতার হবে।’ প্রশ্ন জাগে, ওই গডফাদার কারা?
রেকর্ডটি প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে। পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরেও এই রেকর্ডটি ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছে।
কক্সবাজার সদর মডেল থানা পুলিশের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রোজিনা আক্তারের বিরুদ্ধে অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগে একজন মহিলা মামলাও করেছে। এসব অভিযোগের তদন্ত চলছে।