বিদেশ ডেস্ক:

ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে নির্বিচার হামলার দায়ে ‘শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী’ ব্রেন্টন ট্যারান্টের বিরুদ্ধে ৮৯ টি অভিযোগ আনছে নিউ জিল্যান্ডের পুলিশ। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স পুলিশ সূত্রে জানিয়েছে, ৫ এপ্রিল (শুক্রবার) আদালতে হাজির করা হবে তাকে। সেখানে তার বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ডের দায়ে ৫০টি আর হত্যাপ্রচেষ্টার দায়ে ৩৯টি অভিযোগ আনা হবে। পরবর্তীতে ট্যারান্টের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ আনার বিষয়টিও বিবেচনাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সূত্র।

১৫ মার্চ (শুক্রবার) ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলীয় নাগরিক ব্রেন্টন ট্যারান্ট নামের সন্দেহভাজন হামলাকারীর লক্ষ্যবস্তু হয় নিউ জিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদ। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, গুলি চালিয়ে ৫০ জন মুসল্লিকে হত্যা করে ট্যারান্ট। উগ্র মুসলিমবিদ্বেষী এ হামলাকারী এর আগে অনলাইনে ১৬ হাজার ৫০০ শব্দের কথিত এক ইশতেহারে নৃশংস এ হামলার পেছনে নিজের অবস্থান তুলে ধরে। এতে নিউ জিল্যান্ডের ইতিহাসের নৃশংস ওই খুনি দাবি করে, শ্বেতাঙ্গরা গণহত্যার শিকার। যুক্তরাষ্ট্রে গৃহযুদ্ধ ছড়িয়ে দেওয়ার আগ্রহের কথাও জানায় সে।

১৫ মার্চের ওই হত্যাকাণ্ডের পরদিন ট্যারান্টকে হামলার পরদিন টেরান্টের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ এনে তাকে ক্রাইস্টচার্চ ডিস্ট্রিক্ট আদালতে হাজির করা হয়েছিল৷ সে সময় তার বিরুদ্ধে একটি খুনের অভিযোগ এনে তাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোনো সুযোগ না দিয়েই রিমান্ডে নিয়েছিল পুলিশ। শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ১টায় ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে ট্যারান্টকে ক্রাইস্টচার্চ হাই কোর্টে হাজির করার কথা রয়েছে। ঘটনার ভয়াবহতা বিবেচনায় নিয়ে এবার তাকে হাই কোর্ট নেওয়া হচ্ছে৷

দ্বিতীয়বারের মতো তাকে আদালতে হাজির করা হলেও ২৮ বছর বয়সি ট্যারান্ট এবারও আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ পাচ্ছে না৷ শুক্রবার আদালতে কেবল হামলাকারীর আইনি প্রতিনিধিত্ব নিয়ে সংক্ষিপ্ত শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন বিচারক ক্যামেরন ম্যান্ডার৷ এর আগে আদালতে তার জন্য একজন আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হলেও নিজেই মামলা লড়ার কথা জানিয়েছে ট্যারান্ট৷ শ্বেতাঙ্গ জাতীয়তাবাদকে আবারও সামনে আনতে তার এমন পরিকল্পনা বলে ধারণা করা হচ্ছে৷

ট্যারান্ট বর্তমানে কোন কারাগারে বন্দি আছে, তা নিয়ে সুষ্পষ্ট কোনও তথ্য দেয়নি নিউজিল্যান্ডের কারা কর্তৃপক্ষ৷ তারা জানিয়েছে, বর্তমানে টেলিভিশন দেখা, রেডিও শোনা এবং কারো সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পাচ্ছে না সে। এদিকে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী গ্রেফতারের পর থেকে তাকে অকল্যান্ডের হাই-সিকিউরিটি কারাগারে রাখা হয়েছে।

ক্রাইস্টচার্চ হামলায় আহত ২৪ জন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বলে চলতি সপ্তাহে জানিয়েছে নিউজিল্যান্ডের স্বাস্থ্য বিভাগ৷ তাদের মধ্যে এক শিশুসহ ৪ জনের অবস্থা গুরুতর৷