শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, কক্সবাজার সদর :

কক্সবাজার সদরের চৌফলদন্ডী-খুরুস্কুল সড়ক থেকে ধৃত ৪ ছিনতাইকারীকে রাতের অন্ধকারে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে চৌফলদন্ডী আর.এফ.এফ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সুবেদার হেলাল মিয়ার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ধৃতরা হল খুরুস্কুল রাস্তার পাড়া এলাকার সোহেল ও শাহজাহান। অপর দুইজনের নাম জানা যায়নি। তবে তারা আশ্রয়ন প্রকল্পে নিয়োজিত শ্রমিক এবং কুতুবদিয়া উপজেলার বাসিন্দা বলে জানা যায়।

এলাকাবাসী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আটককৃত সোহেল ও শাহজাহানের নেতৃত্বে আরো দুই জন পেশাধার ছিনতাইকারী ৩ মার্চ রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে চৌফলদন্ডী-খুরুস্কুল সড়কের মাঝামাঝি স্থানে ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে অবস্থান করছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালায় চৌফলদন্ডী আর.এফ.এফ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ হেলাল মিয়ার নেতৃত্বে একদল পুলিশ। এসময় ঘটনাস্থল থেকে চাকুসহ দুই ছিনতাইকারীকে হাতে নাতে আটক করে। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আরো দুইজন ছিনতাইকারী দ্রুত পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পরে সন্দেহভাজন আশ্রয়ন প্রকল্পে নিয়োজিত দুই নিরহ শ্রমিককে রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে আসে সুবেদার হেলাল মিয়া।

একই দিন রাত আনুমানিক ১২ টার দিকে প্রতিজন ৫ হাজার টাকা করে হাতিয়ে নিয়ে তাদেরকে ছেড়ে দেন বলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চৌফলদন্ডীর একাধিক ব্যক্তি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন। খুরুস্কুলের লোকজন জানান, সোহেল ও শাহজাহান পেশাদার ছিনতাইকারী। তারা প্রায় সময় সড়কে চলাচলর যানবাহন,সাধারণ পথচারীদের থামিয়ে ডাকাতি ছিনতাই করে থাকে। ঘটনাস্থল থেকে হাতে নাতে আটক করার পরও পুলিশ কিভাবে তাদের ছেড়ে দিল কারো বোধগম্য নয়।

অভিযোগ উঠেছে চৌফলদন্ডী আর.এফ.এফ পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ সুবেদার হেলাল মিয়া যোগদানের পর থেকে এলাকায় মাদক,ছিনতাই, চুরি,জুয়া বেড়ে চলছে। রাখাইন সম্প্রদায়ের চোলাই মদ ব্যবসায়ী,মাদক ব্যবসায়ী, জুয়ার আস্তান থেকে প্রতিনিয়ত মাসোহারা আদায়ে ব্যস্ত এ সুবেদার। শুধু তাই নয় চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী, চোরাচালানকারী,ওয়ারেন্টভুক্ত আসামীদের সাথে রয়েছে তার দহরম মহরম সুসম্পর্ক। ফলে এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হয়ে ওঠেছে বলে বিজ্ঞ মহলের ধারণা।

মোহাম্মদ আলম,জসিম উদ্দীন নামের দুই ভুক্তভোগী জানান,কিছুদিন আগে কক্সবাজার শহরে যাওয়ার পথে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখানোর পরও একটি সিএনজি,একটি বাইক ধরে নিয়ে ফাঁড়িতে নিয়ে যায় সুবেদার হেলাল মিয়া। পরে টাকা দিয়ে যানবাহন গুলো আনতে হয় তাদের। এভাবেই প্রতিনিয়ত সড়কে চলাচলরত মোটরসাইকেল, সিএনজি, ফার্ণিচার বোঝাই গাড়ী থামিয়ে চাঁদা আদায় করেন বলেও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

ধৃত দুই ছিনতাইকারী ও সন্দেহভাজন দুই যুবককে আটক এবং ছেড়ে দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ফাঁড়ির ইনচার্জ মোঃ হেলাল মিয়া বলেন, এ বিষয়ে এসপি এবং ওসির সাথে কথা বলেন। এসময় তিনি চৌফলদন্ডীর বাইরে আছে বলে জানালেও পরে ফাঁড়িতে বসে দফারফা করতে দেখতে পেরেছে স্থানীয় লোকজন। এমনকি এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানতে চাইলে তার অফিসে জেতে বলেন। অন্যান্য বিষয় গুলো এড়িয়ে যান সুবেদার হেলাল মিয়া।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি তদন্ত মোঃ খায়রুজ্জামান জানান, এ ধরনের কোন সংবাদ থানা পুলিশের কাছে আসে নাই। খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।