অনলাইন ডেস্ক: সংসদে যাওয়া নিয়ে দোলাচলে থাকা সিলেট-২ আসনে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট থেকে নির্বাচিত মোকাব্বির খান শেষ পর্যন্ত শপথ নিয়েছেন। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) দুপুর সোয়া ১২টায় সংসদ ভবনে স্পিকারের কার্যালয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী তাকে শপথ বাক্য পাঠ করান।

জাতীয় সংসদের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান শপথ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। এ সময় সংসদ সদস্যের নির্বাচনী এলাকার নেতৃবৃন্দ ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মোকাব্বিরের শপথ নেয়ায় বিষয়ে তার দল গণফোরামের সায় রয়েছে কিনা সেটি নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে এক ধরণের ধোঁয়াশার।মোকাব্বির বলছেন, দলীয় প্রধান ড. কামাল হোসেনের সিদ্ধান্ত নিয়েই তিনি শপথ নিতে যাচ্ছেন। আর গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাহী সভাপতি বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের বক্তব্য হচ্ছে একাদশ নির্বাচন বর্জন ও এই সংসদে শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্তে অনড় গণফোরাম।দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে শপথ নিলে মোকাব্বিরকেও সুলতান মনসুরের পরিণতি বরণ করতে হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন গণফোরামের দুই শীর্ষ নেতা।

এদিকে মোকাব্বির খান দলীয় প্যাডে স্পিকারের কাছে শপথের ব্যবস্থা নিতে আবেদন করেছেন।গণফোরাম নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলছেন, মোকাব্বির দলীয় প্যাড চুরি করে স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন। দলের শীর্ষ নেতা এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য না দেয়ায় ধারণা করা হচ্ছে মোকাব্বিরের শপথে তার ব্যক্তিগত সায় রয়েছে। এসব নিয়ে গণফোরামে চলছে তোলপাড়।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শরিক দলগুলোও এ নিয়ে গণফোরামকে চাপে রেখেছে।পরিস্থিতি সামলাতে মোকাব্বিরকে দল থেকে বহিষ্কার করা ছাড়া গণফোরামের সামনে কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।না হয় গণফোরামের রাজনীতিই প্রশ্নবিদ্ধ হবে। কারণ যেই দোষে সুলতান মনসুরকে বহিষ্কার করা হয়েছে, একই ‘অন্যায়’ করে মোকাব্বির যদি পার পেয়ে যান তবে দলের ভাবমূর্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।সেই সুযোগ গণফোরাম দেবে না বলে মনে করছেন অনেকেই।

এসব বিষয়ে গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, গণফোরামের প্যাডেই মোকাব্বির চিঠি পাঠিয়েছেন। তবে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সেই প্যাড ব্যবহারের অনুমতি ও অধিকার রয়েছে কেবল সাধারণ সম্পাদকের। তিনি নিজে বা তার অনুমোদিত কোনো ব্যক্তি ওই প্যাড ব্যবহার করতে পারবেন। মোকাব্বির খান দলের সাধারণ সম্পাদককে না জানিয়ে যেভাবে ওই প্যাড ব্যবহার করেছেন, দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তিনি বেআইনি কাজ করেছেন।

তাকে বহিষ্কার করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সুব্রত চৌধুরী বলেন, তিনি (মোকাব্বির খান) দলের গঠনতন্ত্র ভঙ্গ করেছেন। আমরা এখন বসে সিদ্ধান্ত নেব। দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কারণেই আমরা সুলতান মনসুরকে বহিষ্কার করেছি। একই ঘটনা তিনিও ঘটিয়েছেন। তার ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত আসে, তা জানতে সামনের বৈঠক পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।