সিবিএন ডেস্ক:

সমুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র ব্রুনাই এর সঙ্গে রাজনৈতিক সম্পর্ক বাড়াতে দেশটি সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চলমান এপ্রিল মাসের চতুর্থ সপ্তাহে দেশটিতে তিনদিনের সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে তার।

এই সফরে জ্বালানি সহযোগিতা, কৃষি সহযোগিতা, কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের ভিসা ছাড়সংক্রান্ত চুক্তিসহ আরও কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর হতে পারে।

এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা একটি ভালো সফর আশা করছি। এ সফরে জ্বালানি ও অভিবাসন ক্ষেত্রে বড় কিছু হতে পারে।’

প্রধানমন্ত্রী ব্রুনাই এর সুলতান হাসানাল বলকিয়ার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক ছাড়াও অন্যান্য অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।

জ্বালানি সহযোগিতা

ব্রুনাই তেল ও গ্যাস সমৃদ্ধ দ্বীপ রাষ্ট্র। দেশটি প্রতি বছর প্রচুর পরিমাণে তেল ও গ্যাস উৎপাদন করে থাকে। সাগর থেকে তেল ও গ্যাস আহরণে ব্রুনাইয়ের অভিজ্ঞতাও ব্যাপক। দেশটি অর্থনৈতিকভাবেও সমৃদ্ধশালী। এ কারণে সরকার চাইছে জ্বালানি বিষয়ে দু’ দেশের মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ক একটি সমঝোতা চুক্তি করতে। ব্রুনাইয়ের সুলতানের সঙ্গে বৈঠকে এ ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের সাগরতলা থেকে গ্যাস ও তেল সম্পদ আহরণের জন্য ব্রুনাইকে প্রস্তাবও দেবেন তিনি।বাংলাদেশ সরকার মনে করছে, জ্বালানি ক্ষেত্রে সমঝোতা হলে উভয় দেশই লাভবান হবে।

এ বিষয়ে সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেন, ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্র সীমানাসংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তির পরে বঙ্গোপসাগরে আমরা বিশাল একটি অঞ্চলের ওপর সার্বভৌমত্ব পেয়েছি। এই সমুদ্র সম্পদ আহরণের জন্য আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিচ্ছি। ব্রুনাই এর সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তি সেখানকার সম্পদ আহরণ।

তিনি বলেন, যদি ব্রুনাই এর কোনও কোম্পানি এখানে বাপেক্স বা পেট্রোবাংলার সঙ্গে যৌথভাবে বঙ্গোপসাগরের সম্পদ আহরণে কাজ করে তবে সবার জন্য লাভজনক একটি কাজ হবে।

অভিবাসন

ব্রুনাইতে বর্তমানে প্রায় ১৬ হাজার বাংলাদেশি কর্মরত আছে। সেখানে নার্সের প্রচুর চাহিদা আছে। বাংলাদেশ সেখানে প্রশিক্ষিত আরও নার্স পাঠাতে আগ্রহী। এ বিষয়ে ব্রুনাইয়ের সুলতানকে প্রস্তাব দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার।

এর সম্ভাবনা সম্পর্কে সরকারের আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘আমাদের এখানে অনেকগুলো ভালো নার্সিং ট্রেনিং ইনস্টিটিউট আছে। ব্রুনাই আগ্রহী হলে আমরা সেখানে ভালো ইংলিশ জানা নার্স পাঠাতে পারবো।’

প্রচলিত অভিবাসনের পাশাপাশি নার্স পাঠানোর জন্য এ প্রস্তাবে নতুন সহযোগিতা ক্ষেত্র তৈরি হতে পারে বলে তিনি জানান।

কৃষিখাতে বিনিয়োগ

ব্রুনাই কৃষিখাতে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। কারণ, তারা কৃষিজাত পণ্যের জন্য আমদানির ওপর নির্ভরশীল। সফরে কৃষিখাতে বিনিয়োগের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রুনাই সরকার ও দেশটির বেসরকারি উদ্যোক্তাদের আহ্বান জানাবেন।

সরকারের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘তারা বাংলাদেশে গরুর খামার এবং প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী। এজন্য তারা স্থানীয় বেসরকারি উদ্যোক্তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে।’

প্রধানমন্ত্রীর এই সফরে কৃষি সহযোগিতার বিষয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি সই হওয়ার ব্যাপারেও বাংলাদেশ আশাবাদী বলেও তিনি জানান।

আসিয়ান সদস্যভুক্ত দেশ ব্রুনাই দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় অবস্থিত। বোর্নিও দ্বীপের উত্তর উপকূলে অবস্থিত ব্রুনাইয়ের উত্তরে দক্ষিণ চীন সাগর, বাকি তিন দিকে মালয়েশিয়া। এটি একটি রাজতান্ত্রিক ইসলামী দেশ।