রামু প্রতিনিধি :

রামু উপজেলা পরিষদের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে (৩য় ধাপ) সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে কেন্দ্রে যেতে বাধা দেয়ার প্রতিবাদে এবং উপজেলার ১৫ টি কেন্দ্রে পূন নির্বাচন দেয়ার দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ও উপজেলা যুবলীগ সভাপতি রিয়াজ উল আলম।

রবিবার (৩১ মার্চ) দুপুরে রামু বাইপাসস্থ নিজস্ব কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনে রিয়াজ উল আলম লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেছেন, ৩য় ধাপে (২৪ মার্চ) অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। এ নির্বাচনে তাঁর প্রতিদ্বন্ধি প্রার্থী সোহেল সরওয়ার কাজল লাটিয়াল বাহিনী দিয়ে এবং প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাকে পরাজিত করা হয়েছে। নির্বাচনে বিভিন্নস্থানে তাঁর কর্মীদের মারধর, হুমকী-ধমকী দেয়া হয়েছে। এ কারণে উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের বিভিন্ন কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের ভোটাররা ভোট দিতে পারেনি।

এতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, ২৪ মার্চ অনুষ্ঠিত নির্বাচনে উপজেলার কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তিতারপাড়ায় সোহেল সরওয়ার কাজলের লাঠিয়াল বাহিনীর ভয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভোটাররা ভোট কেন্দ্রে যেতে পারেনি। সদর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের বড়–য়াপাড়ায় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের লোকজনও একই কারনে ভোট দিতে পারেনি। আবার অনেক কেন্দ্রে প্রশাসনের অতি-উৎসাহী কতিপয় কর্মকর্তা ভোট কেন্দ্রে প্রভাব বিস্তার করে নৌকা প্রতীককে পরাজিত করতে ভুমিকা রেখেছে। এসব অনিয়মের ফলে রামুতে বিপুল জনপ্রিয়তা থাকা সত্ত্বেও তাকে হারিয়ে দেয়া হয়েছে। তাঁর প্রতিদ্বন্ধি সোহেল সরওয়ার কাজল সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে এই মর্মে হুমকী দেন যে, ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রামুতে মন্দির পুড়েছে, ভবিষ্যতে তাদের বসত ঘরও পুড়বে।

সংবাদ সম্মেলনে বৌদ্ধ নেতা পলক বড়–য়া আপ্পু জানান, নির্বাচনের দিন তার এলাকার বড়–য়াপাড়ার বৌদ্ধ সম্প্রদায় আনারস প্রতীকের প্রার্থীর ভয়ভীতি ও প্রশাসনের বাড়াবাড়ির কারনে ভোট দিতে পারেনি। এমনকি ওই কেন্দ্র এলাকা থেকে তাকে প্রশাসনের জনৈক কর্মকর্তা হুমকী-ধমকী দিয়ে বাড়িতে চলে যেতে বলেন।

জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়নের বাসিন্দা হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা উত্তম মহাজন জানিয়েছেন, রামুর কচ্ছপিয়া ইউনিয়নের তিতার পাড়া এবং জোয়ারিয়ানালা ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন এলাকার একাধিক কেন্দ্রে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনকে এ নির্বাচনে ভোট দিতে বাধা দেয়া হয়েছে। আবার অনেকে হুমকী-ধমকীর কারনে ভোট দিতে যায়নি।

সংবাদ সম্মেলনে রিয়াজ উল আলম বৌদ্ধ-হিন্দু সম্প্রদায়কে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভোট দিতে বাধা দেয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন কেন্দ্রে প্রশাসনের অতি-উৎসাহী কতিপয় কর্মকর্তাদের অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্ত এবং অনিয়মের কারণে উপজেলার ১৫ টি কেন্দ্রে পূণ: নির্বাচন দেয়ার জোর দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে, চাকমারকুল ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সিকদার, ঈদগড় ইউপি চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমদ ভূট্টো, খুনিয়াপালং ইউপি চেয়ারম্যান সাংবাদিক আবদুল মাবুদ, গর্জনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইউনুচ ভূট্টো, রাজারকুল ইউপি চেয়ারম্যান মুফিজুর রহমান, রশিদনগর ইউপি চেয়ারম্যান এমডি শাহ আলম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি এডভোকেট মোজাফ্ফর আহমদ হেলালী, সাধারণ সম্পাদক তপন মল্লিক, রামু উপজেলা যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক নীতিশ বড়–য়া, সহ সভাপতি ওসমান সরওয়ার মামুন, আওয়ামীলীগ নেতা হাবিব আহমদ হাবিব, উপজেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি শফিকুল আলম কাজল, উপজেলা তাঁতীলীগ সভাপতি নুরুল আলম জিকু, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমদ, বঙ্গবন্ধু সৈনিকলীগ সভাপতি মিজানুল হক রাজা, সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল হক বাবু, ফতেখাঁরকুল ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকলীগ সভাপতি আজিজুল হক আজিজ, যুবলীগ নেতা ছৈয়দ নুর মেম্বার, এম সেলিম, রামু উপজেলা বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ সভাপতি একেরামুল হক ইয়াছিন সহ উপজেলা ি প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।