অনলাইন ডেস্ক :
২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস আজ। ৪৮ বছর আগে স্বাধীনতার এ দিনে দেশের জন্য যে বীর সন্তানরা আত্মদান করে গেছেন, তাদের বিনম্র শ্রদ্ধায় স্মরণ করছে বাঙালি জাতি।

মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন এবং জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে জাতি আজ ৪৯তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করবে। আজ সমগ্র জাতি আনন্দ-উচ্ছ্বাসে উদ্বেলিত হবে।

ফুলে ফুলে ভরে উঠবে জাতীয় স্মৃতিসৌধসহ দেশের সব স্মৃতির মিনার। দিনটি উপলক্ষে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার বাণীতে ত্রিশ লাখ শহীদের আত্মত্যাগে অর্জিত স্বাধীনতাকে আরও অর্থবহ করতে দলমত নির্বিশেষে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহবান জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, অনেক ত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত মহান স্বাধীনতা। বঙ্গবন্ধু সব সময় রাজনৈতিক স্বাধীনতার পাশাপাশি একটি সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ার স্বপ্ন দেখতেন। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নে বর্তমান সরকার নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে অসামান্য সাফল্যের ফলে বাংলাদেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিবেচিত।

মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশবাসী এবং প্রবাসে বসবাসকারী বাঙালিদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। দিবসটি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী তার বাণীতে বলেন, ২৬ মার্চ বাঙালির আত্মপরিচয় অর্জনের দিন। পরাধীনতার শিকল ভাঙার দিন। শেখ হাসিনা মহান মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদ এবং ২ লাখ সম্ভ্রমহারা মা-বোনকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন।

তিনি বলেন, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা বাঙালি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। এই অর্জনকে অর্থপূর্ণ করতে সবাইকে মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ইতিহাস জানতে হবে, স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করতে হবে।

এ দিনেই বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। সেদিন এ দেশকে পাকিস্তানিদের দখলদারিত্ব ও শোষণ থেকে মুক্ত করতে সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু।

পাক হানাদার বাহিনী ৭১র ২৫ মার্চ রাতে যখন এ ভূখণ্ডে হত্যালীলায় মেতে ওঠে, তখন ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে নিজ বড়িতে গ্রেপ্তার হওয়ার আগে পূর্ব বাংলার স্বাধীনতা ঘোষণা করে বার্তা পাঠান শেখ মুজিবুর রহমান।

এতে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন ও সার্বভৌম একটি রাষ্ট্র। একে যে রকম করেই হোক শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করতে হবে।’

সে সময় চট্টগ্রামে থাকা বাঙালি সেনা কর্মকর্তা মেজর জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধুর এ ঘোষণা তাঁর পক্ষে বেতারে পাঠ করেন। পরে দেশের মানুষ স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হওয়ার খবর জানতে পারে। সেদিনের পর পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামে দেশের বীর সন্তানরা। দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি পায় একটি নতুন পতাকা নতুন এক মানচিত্র, একটি বাংলাদেশ।

এদিকে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে তারা স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে এক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।