সিবিএন ডেস্ক:
দর্শনার্থী প্রবেশে শৃঙ্খলা রক্ষায় রোববার (১৭ মার্চ) থেকে আবারো পাস গ্রহণের নিয়ম চালু করেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল প্রশাসন। এর আগে একাধিকবার এই নিয়ম চালু করলেও সেটি খুব বেশি দিন ধরে রাখতে পারেনি হাসপাতাল প্রশাসন।

কিছুদিন যেতে না যেতেই এই নিয়ম ভেঙ্গে পড়ে। এখন নতুন করে আবারো এই পাসের নিয়ম চালু করলো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আর নতুন নিয়ম বাস্তবায়নে ইতোমধ্যে ৫ হাজার পাস ছাপিয়েছে হাসপাতাল প্রশাসন।

এ তথ্য নিশ্চিত করে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসেন উদ্দীন আহমদ বলেন, হাসপাতালে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে দর্শনাথী বা রোগীর স্বজনদের প্রবেশের বিষয়টি আমরা একটি নিয়মের মধ্যে আনার চেষ্টা করছি। এ লক্ষ্যে পাসের নিয়ম চালু করা হয়েছে।

এখন জামানতের বিনিময়ে পাস সংগ্রহ করে হাসপাতালে প্রবেশ করবেন দর্শনার্থীরা। হাসপাতাল ভবনে প্রবেশের গেটগুলোতে আনসার সদস্যদের নিয়োজিত করা হয়েছে। পাস ব্যতীত কাউকে হাসপাতালে প্রবেশের সুযোগ না দিতে তাদের নির্দেশনা দেয়া আছে।

উন্মুক্তভাবে প্রবেশের সুযোগে প্রতিদিন অসংখ্য দর্শনার্থী হাসপাতালে ভিড় করেন বলে মনে করেন হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসেন উদ্দিন আহমদ। যার কারণে হাসপাতালের পরিবেশ অপরিচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। তাই বিশাল সংখ্যক দর্শনার্থীর প্রবেশ নিয়ন্ত্রণে আনতে নতুন করে পাসের নিয়ম চালু করার সিদ্ধান্ত হয় বলেও জানান হাসপাতাল পরিচালক।

হাসপাতাল প্রশাসনের তথ্য মতে- এখন থেকে ২০ টাকা জামানতের বিনিময়ে একটি পাস সংগ্রহ করতে হবে দর্শনার্থীকে। হাসপাতালের মূল প্রবেশ পথে (মাঝখানের গেটে) নিচতলায় ন্যায্যমূল্যের ওষুধের দোকানের পার্শ্ববর্তী তথ্য ও পরামর্শ কেন্দ্র থেকে এই পাস সংগ্রহ করতে হবে।

হাসপাতালে প্রবেশের ক্ষেত্রে সংগৃহীত পাস দেখাতে হবে গেটে নিয়োজিত আনসার সদস্যদের। একটি পাস নিয়ে একজন দর্শনার্থী হাসপাতালে প্রবেশের সুযোগ পাবেন। পাসটি ফেরতের সময় সংশ্লিষ্ট দর্শনার্থী তার জামানতের ২০ টাকা ফেরত পাবেন। পাস না থাকলে কোন দর্শনার্থী হাসপাতালে প্রবেশের সুযোগ পাবেন না।

উল্লেখ্য, আগেও জামানত নিয়ে পাসের বিনিময়ে প্রবেশের নিয়ম চালু ছিল হাসপাতালে। কিন্তু বেশ কয়বছর আগে ওই নিয়মটি বাতিল করে ফ্রি প্রবেশের সুযোগ করে দেয়া হয়।

২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে হাসপাতালে প্রবেশের ক্ষেত্রে বিনামূল্যে পাসের নিয়ম চালু করতে উদ্যোগ নেয় হাসপাতাল প্রশাসন। কিন্তু জনবল সংকটে সে উদ্যোগ আর গতি পায়নি। তাছাড়া পাসের বিনিময়ে কোন ধরণের জামানত না নেয়ায় পাসগুলো আর ফেরত পাওয়া যায়নি।

ওই সময় (২০১৭ সালের এপ্রিলে) প্রায় ৬ হাজার পাস সরবরাহ করা হলেও সবকয়টি পাস হারিয়ে গেছে বলে জানান তৎকালীন হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জালাল উদ্দিন।

পরবর্তীতে ২০১৭ সালের ১৮ নভেম্বর ফের জামানতের বিনিময়ে পাস সংগ্রহ করে প্রবেশের নিয়ম চালু করে হাসপাতাল প্রশাসন। তবে তাও বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। দুই মাস না যেতেই আবারো ওই নিয়ম বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকে হাসপাতালে উন্মুক্তভাবে প্রবেশের সুযোগ ছিল এতদিন। তবে দর্শনার্থী প্রবেশ নিয়মের মধ্যে আনতে ১৭ মার্চ থেকে তৃতীয় দফায় পাসের নিয়ম চালু করলো হাসপাতাল প্রশাসন।

এদিকে, সার্বিক নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আরো অন্তত ৫০ জন আনসার সদস্য চায় হাসপাতাল প্রশাসন। গরীবের চিকিৎসা সেবায় ভরসাস্থল হিসেবে পরিচিত এই হাসপাতালে বর্তমানে একশ জন আনসার সদস্য নিয়োজিত আছেন।

কিন্তু বিশাল সংখ্যক রোগী-দর্শনার্থীর বিপরীতে আনসারের এ সংখ্যা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে করেন চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহসেন উদ্দিন আহমদ। তাই বিদ্যমান একশ জনের বাইরে আরো ৫০ জন আনসার চেয়ে এরইমধ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চাহিদা অনুযায়ী এসব আনসার সদস্য পাওয়া গেলে নিরাপত্তার পাশাপাশি পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা ও হাসপাতালের সার্বিক সেবার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন হাসপাতাল পরিচালক।
-আজাদি