আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
নিউজিল্যান্ডে মসজিদে হামলাকারী অস্ট্রেলিয়ান বংশোদ্ভূত ‘ব্রেনটন টেরেন্ট’ ফেসবুকে লাইভ চালু করে এই সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটায়। বর্ণবাদী অস্ট্রেলিয়ান এই হামলাকারী তার টুইটার একাউন্টে হামলার ভিডিও সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়। নিজেকে সে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক বলেও দাবি করেছে।
ব্রেন্টন টেরেন্ট ২৮ বছর বয়সী একজন অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের গ্রাফটন শহরের অধিবাসী সে। হামলার আগে সে টুইটারে ‘দ্য গ্রেট রিপ্লেসমেন্ট’ শিরোনামে ৮৭ পৃষ্ঠার দীর্ঘ একটি মেনোফেস্টো প্রকাশ করে।

সেখানে সে উল্লেখ করে, ব্যক্তিগতভাবে সে মুসলিম বিদ্বেষী এবং মুসলমানদের প্রচন্ড রকম অপছন্দ করে। এবং অন্য ধর্ম থেকে মুসলমানে পরিণত হওয়াকে সে রক্তের সাথে বেইমানী করা বলে উল্লেখ করে।

মেনোফেস্টোতে আরও আছে, ২০১১ সালে নরওয়ের অসলোতে ৭৭ জনকে হত্যাকারী আন্ডারস ব্রেভিকের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে বলে জানা গেছে।

ব্রেন্টন টেরেন্ট আরও জানিয়েছে, ২০১৭ সালে স্টকহোমে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা দ্বারাও সে এই হামলা চালানোতে প্রভাবিত হয়েছে।

হামলাকারী নিজেকে ‘শেতাঙ্গ’ বলে পরিচয় দিয়ে টেরেন্ট আরও বলে, সে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সাপোর্ট করে, কারণ ট্রাম্প শেতাঙ্গদের প্রতিনিধিত্ব করে।

নিজের পারিবারিক অবস্থা ও শৈশবের বেদনা উল্লেখ করে সে জানায়, আমি নিন্মবিত্ত পরিবারের জন্মেছি, তার বাবা-মা স্কটিশ, আইরিশ এবং ইংলিশ ছিল, আমার কোন নিয়মিত শৈশব ছিল না।

ক্রাইস্টচার্চ এলাকার আল নূর মসজিদ ও লিনউড মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার মধ্যে ‘ব্রেনটন টেরেন্ট’ একাউন্টের ১৭ মিনিটের ওই লাইভ ভিডিওটি ইতিমধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।

ভিডিওতে হামলাকারীকে মসজিদে ঢুকে মুসল্লীদের উপরে নির্বিচারে গুলি করতে দেখা গেছে। ফুটেজে দেখা যায় কালো পোশাক পড়ে অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে হামলা করা ওই হামলাকারী। হামলা শেষে হামলাকারী একটি গাড়িতে করে চলে যায়।

ঘটনার সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ওই মসজিদে নামাজ আদায় করতে গিয়েছিল। একজন আহত মহিলা মসজিদে ঢুকতে সাবধান করায় প্রাণে বেঁচে যান তারা। তবে ওই হামলার ঘটনায় নিহতদের মধ্যে দু’জন বাংলাদেশির পরিচয় পাওয়া গেছে।

একজন ড. আব্দুস সামাদ, তিনি কৃষিবিদ ও নিউজিল্যান্ডের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। আরেকজন হোসনে আরা, তিনি গৃহবধু ও ক্রাইস্টচার্চের স্থানীয় বাসিন্দা।