আন্তর্জাতিক ডেস্ক:

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের সন্ত্রাসী হামলায় নিহত তিন বাংলাদেশির পরিচয় জানা গেছে। নিহতের মধ্যে লিংকন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক ড. আবদুস সামাদ ও তার স্ত্রী এবং হোসনে আরা ফরিদ নামের এক গৃহবধূ।
বাংলাদেশের অনারারি কনসাল ইঞ্জিনিয়ার শফিকুর রহমান তিন বাংলাদেশির মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমকে বলেন, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় আরও চার বাংলাদেশিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আরও একজন নিখোঁজ রয়েছেন বলে স্থানীয় বাংলাদেশি কমিউনিটির কাছ থেকে খবর পেয়েছি।

নিউজিল্যান্ডে বাংলাদেশের স্থায়ী দূতাবাস নেই, অনারারি কনসাল ইঞ্জিনিয়ার শফিকুর রহমান থাকেন অকল্যান্ডে। সেখান থেকে তিনি ক্রাইস্টচার্চের বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।

তিনি বলেন, “শুক্রবার অনেকেই জুমার নামাজ পড়তে আল নূর মসজিদে গিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে কযেকজন না ফেরায় পরিবারের সদস্যরা ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু না পেয়ে খোঁজ শুরু করেন। পরে হাসপাতালে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কয়েকজনের ভর্তি হওয়ার খবর পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে তিনজন মারা যান।”

শফিকুর রহমান বলেন, ষাটোর্ধ্ব আবদুস সামাদের বাড়ি ময়মনসিংহে, এক সময় তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন।

নিউ জিল্যান্ড সফররত বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কয়েকজন খেলোয়াড়রা হামলার সময় আল নূর মসজিদে গিয়েছিলেন জুমার নামাজ পড়তে। ভেতরে গোলাগুলির বিষয়টি জানতে পেরে তারা বাইরে থেকেই দ্রুত নিরাপদে সরে যান। গোলাগুলির ওই ঘটনার পর বাংলাদেশ-নিউ জিল্যান্ড তৃতীয় টেস্টটি বাতিল করা হয়। শনিবার ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালে ওই ম্যাচ শুরু হওয়ার কথা ছিল।

ক্রাইস্টচার্চ এলাকার আল নূর মসজিদ ও লিনউড মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার মধ্যে ‘ব্রেনটন টেরেন্ট’ একাউন্টের ১৭ মিনিটের ওই লাইভ ভিডিওটি ইতিমধ্যে ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে হামলাকারীকে মসজিদে ঢুকে মুসল্লীদের উপরে নির্বিচারে গুলি করতে দেখা গেছে। ফুটেজে দেখা যায় কালো পোশাক পড়ে অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে হামলা করা ওই হামলাকারী। হামলা শেষে হামলাকারী একটি গাড়িতে করে চলে যায়।

ঘটনার সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট দল ওই মসজিদে নামাজ আদায় করতে গিয়েছিল। একজন আহত মহিলা মসজিদে ঢুকতে সাবধান করায় প্রাণে বেঁচে যান তারা। নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে ঢুকে হামলার ঘটনায় এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ৪৯ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ৷

পুলিশ কমিশনার মাইক বুশ জানান, দুই মসজিদের হামলায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৯ জনে।সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় এক ব্যক্তিকে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ‘নজিরবিহীন’ এ পরিস্থিতিকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী আরডের্ন। তিনি বলেন, “নিশ্চিত ভাবেই পরিকল্পনা করে এ হামলা চালানো হয়েছে।”