চকরিয়া সংবাদদাতা:

সরকারের ঘোষিত সিদ্ধান্তের আলোকে সারা দেশে একযোগে মাদক বিরোধী অভিযানে নামেন র‍্যাব, পুলিশ, বিজিবিসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। কক্সবাজার জেলায় এ অভিযানে ইতিমধ্যে অনেক মাদক ব্যবসায়ী মারা গেছেন এবং অনেকে আত্মসমর্পন করেন। কিন্তু অভিযানের ফাকে অধরা থেকে যায় কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ২নম্বর ওয়ার্ডের দিগরপানখালী গ্রামের শামসুল হুদা ছেলে চিহ্নিত ইয়াবা ব্যবসায়ী ও ফাসিয়াখালী ইউনিয়ন শ্রমিকদলের বহিস্কৃত সদস্য সচিব জালাল উদ্দিন। তার ইয়াবা ব্যবসার মূল টার্ণিং পয়েন্ট ছিল ফাসিয়াখালী হাসেরদীঘি ষ্টেশনস্থ তার মালিকানাধীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান মেসার্স শাহ জালাল টায়ার হাউস। ইয়াবা ব্যবসায় অল্প সময়ে আঙ্গুল ফুলে কলাগাছ বনে গেছেন ইয়াবা জালাল। সর্বশেষ চকরিয়া থানা পুলিশের অভিযানে ১৪মার্চ দুপুর ১২টার দিকে ইয়াবাসহ গ্রেফতার হয়েছেন জালাল উদ্দিন। থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে সংগীয় পুলিশ উপজেলার হাসেরদীঘি ষ্টেশনস্থ তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এ অভিযান চালায়।

অভিযোগে জানা গেছে, প্রশাসন ও লোক চক্ষুকে ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন কৌশলে ইয়াবা ব্যবসা করে আসছে অভিযুক্ত জালাল উদ্দিন ওরফে ইয়াবা জালাল। ইয়াবা ব্যবসার মূলহোতা জালাল হলেও তার সহযোগি হিসেবে ইয়াবার চালান সরবরাহ করেন তার আপন বড় ভাই আবুল হাসেম (প্রকাশ টুটটেং হাসেম)কে দিয়ে ।

ইয়াবার চালান নিয়ে ঢাকায় গেলে বিগত ২০১৫সনের ৬ সেপ্টেম্বর ডিএমপি’র (ঢাকা) শাহজাহানপুর থানায় ৪০০০ (চার হাজার) পিস ইয়াবা ট্যাবলেটসহ পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন আবুল হাসেম। এনিয়ে শাহজাহানপুর থানায় মাদকদ্রব্য আইনের ১৯৯০ সনের ১৯(১)এর ৯ (খ) ধারায় মামলা হয় ধৃত আবুল হাসেমের বিরুদ্ধে। ওই মামলায় দীর্ঘ ১৬ মাস কারাভোগ থাকার পর জামিনে বের হয়ে ছোট ভাই জালালের নিয়ন্ত্রিত ফের ইয়াবা ব্যবসা শুরু করেন। ফাসিয়াখালী দিগরপানখালী গ্রামে ইয়াবা ব্যবসায় বাধা দেওয়ায় স্থানীয় ফাসিয়াখালী ২নং ওয়ার্ড এমইউপি মুজিবুল হক আজিজের বিরুদ্ধে চকরিয়া আদালতে নারী নির্যাতন, মারধরসহ মানহানীর ২টি মামলা করেছে ইয়াবা ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিন। একইভাবে ইয়াবা ব্যবসা নিয়ে পত্রিকায় বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচার করায় চকরিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি আবদুল মজিদসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকজন সংবাদ কর্মীর বিরুদ্ধে মানহানী ও চাঁদাবাজীর অভিযোগে ২টি কথিত ভিত্তিহীন মামলা করেছে ওই ইয়াবা ব্যবসা জালাল উদ্দিন। বর্তমানে একটি মামলা (নং সিআর ৬২১) সিআইডি পুলিশের কাছে তদন্তাধীন, আরেকটি মামলা (নং সিআর ৭২২/১৮) সহকারী কমিশনার (ভূমি) চকরিয়া’র কাছে তদন্তাধীন রয়েছে।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ইয়াবা জালালের পুরো পরিবার অবৈধ ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে স্থানীয় ইউপি সদস্য মুজিবুল হক আজিজ বাদী হয়ে ইয়াবা ব্যবসার অভিযোগে চকরিয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মামলা (নং সিআর ৬৩১/১৮) দায়ের করেছেন। ওই মামলাটি সিআইডি পুলিশের কাছে তদন্তাধীন রয়েছে।

চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ফাসিয়াখালী হাসেরদীঘিস্থ একটি টায়ারের দোকানে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ইয়াবা ব্যবসায়ী জালাল উদ্দিনকে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে থানায় মামলা রুজু হয়েছে এবং ধৃত ইয়াবা ব্যবসায়ী জালালকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আরো বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।