বার্তা পরিবেশক:

কক্সবাজার জেলা বাস-মিনিবাস মালিক ও শ্রমিকদের জিম্মি করে রেখেছে একটি ‘চাঁদাবাজ’। মালিক ও শ্রমিকদের জিম্মি করে লাখ লাখ টাকা চাঁদা হাতিয়ে নিচ্ছে। সময়মতো এবং দাবিকৃত চাঁদা না দিলে শুরু হয় নির্যাতন এবং নানা অত্যাচার। এতে কক্সবাজার জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির আওতাভুক্ত কর্মকর্তাসহ সদস্য মালিক ও সদস্যরা বছরের পর বছর জিম্মি অবস্থায় রয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার (১২ মার্চ) কক্সবাজার শহরের এক হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেছেন কক্সবাজার জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়, কক্সবাজার জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির কক্সবাজারের একটি ঐতিহ্যবাহী পরিবহণ সংগঠন। ১৯৯৯ সাল থেকে এই সংগঠনটি নিয়ন্ত্রণে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কে বাস ও মিনিবাস চলাচল করে আসছে। কক্সবাজার বাসটার্মিনালে সমিতির নিজস্ব কাউন্টারও রয়েছে। সমিতির নিয়ন্ত্রণে প্রায় ৭০টি গাড়ি রয়েছে। কিন্তু অবৈধভাবে এই সমিতির আওতাভুক্ত মালিক ও শ্রমিকদের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে নূর মোহাম্মদ প্রকাশ খুইল্যা মিয়া, খোরশেদ আলম, রফিকুল ইসলাম, আবুল কালামসহ একটি চক্র। এই চক্রটিকে নেতৃত্বে দেন জহিরুল ইসলাম সিকদার।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এই সমিতির আওতাভুক্ত প্রায় দুই হাজার পরিবহণ শ্রমিক রয়েছে। বিভিন্ন সময় ওই চাঁদাবাজ চক্রটি শ্রমিকদের কাছ থেকে জোর করে অবৈধভাবে চাঁদা আদায় করেছে। এভাবে মালিক ও শ্রমিকদের কাছ থেকে এই পর্যন্ত চক্রটি ৬/৭ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। সম্প্রতি আরো পাঁচ লাখ টাকা দাবি করে চক্রটি। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি মোহাম্মদ প্রকাশ খুইল্যা মিয়া, খোরশেদ আলম, রফিকুল ইসলাম, আবুল কালামসহ একদল লোক কক্সবাজার বাস টার্মিনালস্থ সমিতির কাউন্টারে হামলা চালায়। এসময় তারা হামলাকারীরা কাউন্টারে দায়িত্বরত কর্মচারী লোকমান হাকিম ও মাহমুদকে মারধর কওে এবং ভাংচুর চালিয়ে ৬৫ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়। সেই থেকে কাউন্টারটি তারা জবর-দখল করে রেখেছে। জহিরুল ইসলাম সিকদারের নেতৃত্বে এই ঘটনা হয়েছে দাবি করা হয়। এই ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, এভাবে জোর করে অবৈধ চাঁদা আদায়ের পরিবহণ শ্রমিক ও মালিকেরা অসহায় হয়ে পড়েছে। এতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়ে যেকোনো সময় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। তাই চাঁদাবাজাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়ে অবৈধভাবে দখল করে রাখা কাউন্টারটি উদ্ধার করে দেয়ার জন্য প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন কক্সবাজার জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির আওতাভুক্ত পরিবহণ মালিক ও শ্রমিকেরা। ব্যবস্থা না নিলে ওই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে বৃহত্তর কঠোর আন্দোলন-কর্মসূচী ঘোষণা হবে।

উক্ত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবদুস ছালাম কোম্পানি। বক্তব্য রাখেন- মালিক সমিতির সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মাঈনুদ্দিন কোং। উপস্থিত ছিলেন- মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ শাহাজাহান, শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) দিদারুল ইসলাম কাজল, সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) জাহেদুল ইসলাম, মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমানসহ আরো কয়েকজন।