সিবিএন ডেস্কঃ

ডাকসুর ভিপি পদে নিজের পরাজয় মেনে নিয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভন।

একইসঙ্গে তিনি নবনির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নূরের পাশে থেকে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

মঙ্গলবার দুপুরে ঢাবি ভিসির বাসভবনের সামনে আন্দোলনরত নিজ সংগঠনের কর্মীদের উদ্দেশে ছাত্রলীগ সভাপতি এসব কথা জানান।

তিনি সবপক্ষকে আন্দোলন তুলে নিয়ে ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানান।

এরপর ভিসির বাসভবনের সামনে থেকে ছাত্রলীগের কর্মীরা তাদের অবস্থান কর্মসূচি তুলে নেয়।

শোভন বলেন, ‘ছাত্রলীগ দেশের সবচেয়ে বড় সংগঠন। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট করতে চাই না। ডাকসু নির্বাচন যারা পরিচালনা করেছেন, তারা আমাদেরই শিক্ষক। তাদের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমি আমার পরাজয় মেনে নিচ্ছি। তারা যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, মাথা পেতে নিচ্ছি।’

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘তোমরা আমার পরাজয়ে ব্যথিত হয়েছো। আমার জন্যই আন্দোলন করতে চাও। আমিই তোমাদের বলছি— তোমরা হলে ফিরে যাও। ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নাও।’

প্রিয় নেতার আহ্বানে এ সময় ছাত্রলীগের আন্দোলনরত নেতা-কর্মীরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।

শোভন বলেন, ‘ভোটাররা ভিপি পদে নুরুল হক নূরকে বেছে নিয়েছেন। তাদের রায়ের প্রতি আমি সম্মান জানাচ্ছি। তার সঙ্গে আছি, তাকে নিয়েই শিক্ষার্থীদের যে কোনো অধিকার আদায়ে কাজ করব।’

উল্লেখ্য, দীর্ঘ ২৮ বছর পর গতকাল সোমবার ডাকসুর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোট শুরুর পর দুপুরেই মধ্যেই নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে ছাত্রলীগ ছাড়া সব প্যানেলের প্রার্থী এই নির্বাচন বর্জন করে।

পরে ফলাফলে দেখা গেছে, বেশিরভাগ হল সংসদে ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল বিজয়ী হয়েছে। আর কেন্দ্রীয় সংসদের ভিপি হয়েছেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের সংগঠন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম-আহ্বায়ক নুরুল হক নূর।

তিনি ছাত্রলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রেজওয়ানুল হক শোভনকে ১ হাজার ৯৩৩ ভোটে পরাজিত করেছেন।

নূর পেয়েছেন ১১ হাজার ৬২ ভোট। আরতার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী শোভন পেয়েছেন ৯ হাজার ১২৯ ভোট।

নূর ছাড়া তার প্যানেল থেকে সমাজসেবা সম্পাদক পদে আখতার হোসেন ৯ হাজার ১৯০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

এর বাইরে জিএস, এজিএসসহ বাকি ২৩ পদেই জয় পেয়েছে ছাত্রলীগ প্যানেল। এর মধ্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী জিএস পদে ১০ হাজার ৪৮৪ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। আর এজিএস পদে সাদ্দাম হোসেন সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৩০১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন।

তবে, ভিপি পদ হারানোর পরে ছাত্রলীগ রাত থেকে ভিসির বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে এই নির্বাচন বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে থাকে।

এই নির্বাচন বাতিলের দাবিতে এদিন ছাত্রদল, বাম প্রগতিশীল জোট এবং অন্যান্য সব প্যানেলের প্রার্থীরাও পৃথক স্থানে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছে।