ইমাম খাইর, সিবিএন:
সুবিধা বঞ্চিত প্রতিবন্ধী ও অটিস্টিক শিশুদের জন্য শিক্ষা ও চিকিৎসার স্থায়ী আশ্রয়স্থল অরুণোদয়।
কক্সবাজার হিলটপ সার্কিট হাউজ পাহাড়ের পশ্চিম পাদদেশে ৬৭ ডেসিমেল খাস জমিতে নির্মিত হচ্ছে প্রতিবন্ধী সংস্থানমূলক এই প্রতিষ্ঠানটি।
‘পিছিয়ে পড়া আর নয়, করব মোরা বিশ্বজয়’ প্রতিপাদ্যে ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর থেকে নির্মাণ কাজ শুরু হয় প্রতিবন্ধীদের প্রতিষ্ঠান অরুণোদয়ের। নির্মাণ কাজের ৮০ শতাংশ ইতোমধ্যে সমাপ্ত হয়েছে। অবশিষ্ট কাজ খুব দ্রুততার সাথে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সুইস রেডক্রস-এর সহযোগিতায় ‘অরুণোদয়’ বাস্তবায়ন করছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ও বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি।
যেখানে থাকবে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশু বিদ্যালয়, ছিন্নমূল শিশু বিদ্যালয় ও প্রবীণ স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র।
সুত্র মতে, কক্সবাজার জেলায় বিভিন্ন বয়সের প্রায় ৩৬ হাজার প্রতিবন্ধী মানুষ রয়েছে। এর মধ্যে শুধু কক্সবাজার শহরে ১৮ বছরের নিচে ৬০০ শিশু-কিশোর আছে।
দেশের ইতিহাসে প্রতিবন্ধীদের জন্য এই ধরনের আবাসিক ভবন এই প্রথম বলে জানা গেছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেনের আন্তরিকতায় এটি একটি ব্যতিক্রমী উদ্যোগ বলে জানিয়েছে কক্সবাজারের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এজন্য প্রতিবন্ধীবান্ধব জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে সাধুবাদ জানিয়েছে প্রতিবন্ধী ও তাদের পরিবারের সদস্যরা।
সমাজসেবা অধিদপ্তর বিভিন্নভাবে সেবা দিয়ে আসছে। কিন্তু ব্যক্তি উদ্যোগে কোন প্রতিবন্ধীদের জন্য প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেনি এখনও। জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসনের মত একটি কমপ্লেক্স সত্যি প্রশংসার দাবিদার মনে করে কক্সবাজারবাসী।
এরই মধ্য দিয়ে কক্সবাজার জেলার নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্রতিবন্ধী এক জায়গায় সেবা পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সাম্প্রতিক সময়ে দেশ-বিদেশে অটিস্টিক শিশুদের লেখাপড়া, পরিচর্যাসহ এসব শিশুদের যথারীতি স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনার মানবিক প্রচেষ্টার যথেষ্ট গুরুত্ব বেড়েছে। বাংলাদেশেও অটিস্টিক শিশুদের বিশেষভাবে যত্ন নেওয়ার তাগিদ উঠেছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তনয় সায়মা ওয়াজেদ পুতুল বাংলাদেশসহ বিশ্বব্যাপী অটিস্টিক শিশুদের নিয়ে মানবতার আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, আমাদের অ্যাসেসমেন্ট মতে কক্সবাজার শহরে শুধু ৫০০ এর উপরে ছিন্নমূল শিশু রয়েছে। তাদেরকে আমরা স্কুলে যাওয়ার মত করে তুলতে চাই। যে পরিবার গুলো দুঃসহ কষ্টে আছে; স্কুলিং নাই, তাদের কোন থেরাপি সেন্টার বা ট্রিটমেন্ট সেন্টার নেই।
তিনি বলেন, সারা কক্সবাজারে ৬ থেকে ৭ হাজার এই ধরনের বিভিন্ন বয়সের মানুষ রয়েছে। তাদের জন্য সরকারি যে ব্যবস্থা রয়েছে তা এখনো পর্যাপ্ত নয়।
জেলা প্রশাসক বলেন, প্রতিবন্ধী শিশু এবং তাদের পরিবারকে যদি আমরা শাস্তি দিতে চায়, তাদের সাধ্য আছে সবার সহযোগিতায় এগিয়ে আসা দরকার। সমাজের পিছিয়ে থাকা এই মানুষগুলোকে মূলস্রোতে নিয়ে আসা দরকার বলে মনে করেন জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন।
তিনি আশা করেন, এই অরুণোদয় একদিন কক্সবাজারের অন্ধকারকে আলোকিত করতে পারে।