ইমাম খাইর, সিবিএন

রামু উপজেলার গর্জনিয়া ১ নং ওয়ার্ডের বড়বিল উত্তর পাড়ায় খালের গতিপথ বন্ধ ঘরে বাঁধ নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় প্রভাবশালীর বিরুদ্ধে। স্বাভাবিক পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খালের পানি আশপাশের বাসা বাড়িতে উঠে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি ও ক্ষেত-খামার।
ইতোমধ্যে পানিতে ডুবে গেছে এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের চলাচলের পথ। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে শিক্ষার্থীদের। গত এক সপ্তাহ ধরে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে পুরো এলাকা। কঠিন অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চায় স্থানীয়রা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ করেছে, মাহমুদুল হাসান নামের এক ব্যক্তি বহমান খালের উপর বাঁধ নির্মাণ করে হাজারো মানুষকে পানিবন্দি করে রেখেছেন। তিনি প্রভাবশালী হওয়ায় এলাকাবাসী প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছে না। যারা প্রতিবাদ করে তাদের উপর নেমে আসে নানাভাবে হুমকি-ধমকি। তবে, মাহমুদুল হাসান কি কারণে, কার স্বার্থে চলমান খালের উপর বাঁধ নির্মাণ করেছেন? তা কারো অজানা।
অভিযুক্ত মাহমুদুল হাসান আল নজির ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলে জানা গেছে। যদিওবা ফাউন্ডেশনটির ব্যাপারেও নানা প্রশ্ন রয়েছে এলাকাবাসীর।
অভিযোগ পাওয়ার পর সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, বড়বিল উত্তরপাড়া নামক গ্রামের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া খালের উপর মাটির বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। যে কারণে ফুলে গেছে পানি, ডুবে যাচ্ছে আশপাশের বসতবাড়ি। বন্ধ হয়ে গেছে চলাচলের পথ। বিভিন্ন স্কুল, মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী কোমর পানিতে চলাচল করছে। সাঁকো দিয়ে কোন রকম পারাপারের চেষ্টা করছে এলাকাবাসী।
দেখা গেছে, স্থানীয় নুরানী একাডেমীসহ বেশ কয়েকটি বসত বাড়ির ভেতরে পানি ঢুকে পড়েছে। নুর মোহাম্মদ নামের এক ব্যক্তির বসতঘর ইতোমধ্যে পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। তার পেছনে রয়েছে নুরুল আফসার নামের এক মুক্তিযোদ্ধার বসতবাড়ি। তাও যেকোন সময় ডুবে যেতে পারে পানিতে। ক্ষতির সম্মুখীন মাটির ঘরগুলো।
Mohammed Sarwar Jahan নামের ফেসবুক আইডিতে এই সংক্রান্ত একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে গেছে। যেখানে এলাকাবাসীর দুর্ভোগ ও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার চিত্র ফুটে উঠেছে স্পষ্টভাবে।
ভুক্তভোগীরা জানিয়েছে, বাঁধ নির্মাণের প্রতিবাদে এলাকার শত শত মানুষ বিক্ষোভ করেছে। জনপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়ে প্রতিকার চেয়েছে। কিন্তু কোন কাজ হয়নি। এখন ক্ষোভে ফুঁসে উঠছে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো। যেভাবে হোক তারা পানি বন্দিদশা থেকে মুক্তি চায়।
গর্জনিয়ার একমাত্র অবহেলিত এলাকা বড়বিল। যেখানে উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি বললে চলে। যোগাযোগের রাস্তার করুণ দশা। বর্ষার মৌসুমে পানিবন্দি জীবন যাপন করতে সেখানকার বাসিন্দাদের। জনপ্রতিনিধিরা থেকেও নেই অবস্থা।
স্থানীয় বাসিন্দা সরওয়ার জাহান জানিয়েছেন, স্বাধীনতার পর থেকে এই পর্যন্ত রাস্তার কোন উন্নয়ন কার্যক্রম হয়নি। এখানকার সাধারণ মানুষ জানে না তাদের চেয়ারম্যান কে, এমপি কে? সঠিক জানেনা তারা আদৌ বাংলাদেশের নাগরিক কিনা? মানুষের এমন সহজ সরলতাকে পুঁজি করছে প্রভাবশালীরা।
অভিযুক্ত মাহামুদুল হাসানের সাথে কথা বলতে তার মুঠোফোনে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোঃ লুৎফুর রহমান খোঁজখবর নিয়ে খুব দ্রুততার সাথে ব্যবস্থা নেবেন বলে সিবিএনকে জানিয়েছেন।

চলাচলের জন্য সাঁকো নির্মাণ করছে স্থানীয়রা।