আলমগীর মানিক, রাঙামাটি:

বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মধ্যে শক্তিশালী বন্ধুত্বপূর্ন সম্পর্ক রয়েছে,যার ফলশ্র“তিতে দুই দেশের মধ্যে খুবই শক্তিশালী আকারে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সংগঠিত হচ্ছে মন্তব্য করে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রার্ন্তিক পর্যায়ে স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য অব্যাহত রাখার কথা পুনঃব্যক্ত করেছেন।

তিনি আজ (বৃহস্পতিবার) পার্বত্য জেলা রাঙামাটি সফরের দ্বিতীয় দিনে বরকল উপজেলার বেগেনাছড়ি ন-ভাঙ্গা গ্রাম পরিদর্শণকালে স্থানীয় পাহাড়ী গ্রামবাসীদের উদ্দেশ্যে এ কথা বলেন। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে উচ্চ শিক্ষা অর্জনে মেধাবী যুবক-যুবতীদেরকে মার্কিন সরকার স্কলারশীপ প্রদান করে আসছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষেত্রেও অত্রাঞ্চলের ছেলেমেয়েদের উচ্চ শিক্ষা অর্জনে সহযোগিতা করবে তার সরকার। যেমনি আগে থেকেও করে আসছে মার্কিন সরকার।

প্রার্ন্তিক বাসিন্দাদের আত্মসামাজিক উন্নয়নে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকার যথেষ্ট আন্তরিক বলেও জানান প্রথমবারের মতো রাঙামাটি সফরে আসা মার্কিন রাষ্ট্রদূত রবার্ট মিলার। এ সময় ইউএস আইডির প্রধান পরিচালক ডেরিক ব্রাউন, রাষ্ট্রদূতের সহধর্মীনি মিসেল এ্যাডেল মিল, ইউএনডিপির প্রসেঞ্জিত ত্রিপুরা সহ ইউএস ও ইউএনডিপির অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রাষ্ট্রদূত বেগেনাছড়ি গ্রামের অধিবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং ইউএসআইডির অর্থায়নে বাস্তবায়িত ওয়ার্টার সাপ্লাই, প্রাকৃতিক বন সহ অন্যান্য আর্থ সামাজিক প্রকল্প পরিদর্শন করেন। স্থানীয় গ্রামবাসী ইউএসআইডির প্রকল্প অব্যাহত রেখে তা সম্প্রসারণের জন্য রাষ্ট্রদূতের নিকট অনুরোধ জানান। রাষ্ট্রদূত এলাকার মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়নে তার দেশের সহায়তা অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি দেন। পরে রাষ্ট্রদূতকে পাহাড়ীদের বিভিন্ন সামগ্রী উপহার দেয়া হয়।

এদিকে, দুপুরে কাপ্তাই হ্রদের ওপারে স্থানীয় রেষ্টুরেন্ট পেদা টিং টিং এ সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে রাষ্ট্রদূত জানান, পার্বত্যাঞ্চলের প্রাকৃতিক দূর্যোগ মোকাবেলায় স্থানীয়দের দক্ষতা বৃদ্ধিসহ প্রার্ন্তিক জনগোষ্ঠিকে বনায়নের আওতায় সম্পৃক্ত করে সামাজিক বনায়ন সৃষ্টির মাধ্যমে জীবনমানোন্নয়নের পাশাপাশি অত্রাঞ্চলের জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র সরকার সহায়তা অব্যাহত রাখবে।

পার্বত্য চট্টগ্রামে বনায়ন, বন ধ্বংস পরবর্তী অত্রাঞ্চলের বনগুলোকে নতুনভাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে যেসকল উন্নয়ন কর্মকান্ডগুলো চলমান রয়েছে সেগুলোর সার্বিক অবস্থা সরেজমিনে দেখতে প্রথমবারের মতো রাঙামাটি সফরে এসে রাষ্ট্রদূত আরো জানান, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের উন্নয়নে ‘চট্টগ্রাম হিল ট্র্যাক্টস ওয়াটারশেড কো-ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্টিভিটি (সিএইচটিডব্লিউসিএ)’ নামে ৬ বছর মেয়াদের একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ২০১৩ সালে শুরু হওয়া প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে চলতি বছরের শেষের দিকে। এতে জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) মাধ্যমে ৬৭.২ কোটি বাংলাদেশী টাকার অনুদান দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের উন্নয়নে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তা অব্যাহত থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় যেসব প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে, সেগুলোতে এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক ভারসাম্য ও সৌন্দর্য্য রক্ষায় গুরুত্ব পাবে। সেই লক্ষ্যে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলাসহ সামাজিক বনায়ন প্রকল্পে অর্থায়ন করা হচ্ছে।