বিশেষ প্রতিবেদক:
কক্সবাজারের টেকনাফে পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ চারজন নিহত হয়েছেন। নিহতরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী বলে জানিয়েছে বিজিবি ও পুলিশ।

শুক্রবার ভোরে সাবরাং ইউপির পুরাতন মগপাড়া কাঁকড়া প্রজেক্ট এলাকা ও হ্নীলার নয়াপাড়ায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থল হতে লক্ষাধিক ইয়াবা, তিনটি এলজি ও ছয় রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও ডজনাধিক খালি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।

টেকনাফ ব্যাটালিয়ন ২ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আছাদুদ-জামান চৌধুরী ও টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ তথ্যগুলো নিশ্চিত করেছেন।

বিজিবির সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহতরা অজ্ঞাত পরিচয়ের। তবে অপর ঘটনায় নিহতরা হলেন, টেকনাফ সদর ইউনিয়নের চৌধুরীপাড়ার জানে আলমের ছেলে নজির আহমেদ (৩৮) ও হোয়াইকং নয়াপাড়ার বটতলীর মুহাম্মদ জাকারিয়ার ছেলে গিয়াস উদ্দিন (৩৫)। তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে মাদক, অপহরণ, ডাকাতিসহ নানা অপরাধে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ওসি।

টেকনাফ ব্যাটালিয়ন (২ বিজিবি) অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. আছাদুদ-জামান চৌধুরী জানান, গোপন তথ্যে জানা যায় শুক্রবার ভোরে সাবরাং ইউপির পুরাতন মগপাড়া কাকঁড়া প্রজেক্ট এলাকা দিয়ে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা বাংলাদেশে প্রবেশ করছে এমন খবরে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন ২ বিজিবির নায়েব সুবেদার মো. শাহ আলমের নেতৃত্বে টহলদল ওই এলাকায় যায়। ভোর সোয়া ৫টার দিকে টহলদলের উপস্থিতি লক্ষ্য করা মাত্রই ইয়াবা পাচারকারীরা টহলদলের উপর গুলি বর্ষণ এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে আক্রমণ করে। এতে বিজিবির এক সদস্য আহত হন। এ সময় বিজিবি পাল্টা গুলি চালায়।

গুলির শব্দ থামার পর টহল দলের সদস্যরা এলাকা তল্লাশি করে ২ জন অজ্ঞাত নামা ব্যক্তিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। তাদের টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঘটনাস্থল থেকে আনুমানিক ১ লাখ পিস ইয়াবা ও ১টি দেশীয় বন্দুক ও ১টি খালী কার্তুজ উদ্ধার করা হয়।

অন্যদিকে টেকনাফ থানা পুলিশের ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে টেকনাফের হ্নীলা নয়াপাড়া এলাকায় দু’দল ইয়াবা কারবারির গোলাগুলির খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় পুলিশও কয়েক রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এতে বন্দুকযুদ্ধ থেমে যায়। তখন ঘটনাস্থল থেকে ডাকাত নজির ও গিয়াসের গুলিবিদ্ধ মরদেহ পাওয়া যায়। ঘটনাস্থল থেকে দুটি এলজি, ৬ হাজার পিস ইয়াবা, ৬ রাউন্ড তাজা কার্তুজ ও ১৩টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়।

তবে এ ঘটনা নিয়ে ভিন্ন বক্তব্য দিয়েছেন হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই দীপাংঙ্কর রায়। তার মতে, হোয়াইক্যং নয়াপাড়ায় একদল ডাকাত ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ডাকাতদল গুলি ছোড়ে। এতে পুলিশও পাল্টা গুলি চালালে ডাকাতদল পিছু হটে। তখন ঘটনাস্থল থেকে দু’জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ৷ পরে টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। এতে টেকনাফ থানা পুলিশের তিন পুলিশ সদস্য আহত হন বলে দাবি করেন তিনি।

এদিকে নিহত গিয়াস উদ্দিনের স্বজনদের দাবি তাকে বেশ কয়েকদিন আগে আটক করা হয়। নানা দেনদরবার শেষে শুক্রবার ভোরে গুলি করে মেরে বন্দুকযুদ্ধের গল্প সাজানো হয়েছে।