বিশেষ প্রতিবেদক:
মঙ্গলবার ৩নং সতর্ক সংকেত ঘোষণার পর বুধবার সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ চলেনি। তবে দ্বীপে আটকা পড়া হাজারখানেক পর্যটককে আনতে ঝুঁকি নিয়ে বৃহস্পতিবার সেন্টমার্টিন যায় পর্যটকবাহী চারটি জাহাজ। ঝুঁকি রয়েছে জেনেও জাহাজগুলো চার শতাধিক পর্যটক নিয়ে প্রবাল দ্বীপে যায় বলে অভিযোগ উঠেছে।

অনুমতি ছাড়া জাহাজগুলো পর্যটক নিয়ে কীভাবে দ্বীপে গেল তার উত্তর কেউ দিতে পারেননি। তবে স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, দ্বীপে আটকা পড়াদের ফেরত আনার জন্য যাত্রীছাড়া জাহাজ যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছিল। কোনো জাহাজ দ্বীপে যাওয়ার সময় যাত্রী নিয়েছে প্রমাণ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সূত্র জানিয়েছে, দ্বীপে ভ্রমণে গিয়ে আটকা পড়া দেড় হাজার পর্যটককে ফেরত আনার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে জেলা প্রশাসকের অনুমতি নিয়ে চারটি জাহাজকে খালি যেতে দেয়ার অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে চলাচলকারী এমভি আটলান্টিক ক্রুজ, বে-ক্রুজ, কেয়ারি সিন্দাবাদ, এলসিটি কাজল পর্যটকদের নিয়ে দমদমিয়া জেটিঘাট থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। বিকেল সাড়ে ৩টায় দ্বীপে পৌঁছে। এসব জাহাজে চার শতাধিক পর্যটক দ্বীপে গেছেন বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

পরে সেখান থেকে বিকেল ৪টায় টেকনাফের উদ্দেশে রওনা দেয় জাহাজগুলো। সন্ধ্যা ৭টার দিকে জাহাজগুলো দমদমিয়া ঘাটে পৌঁছায়। তবে কোনো জাহাজ কর্তৃপক্ষই সেন্টমার্টিন যাবারকালে যাত্রীপরিবহনের বিষয়টি স্বীকার করেননি। কথা বলতেও রাজি হননি কেউ।

সতর্ক সংকেত বলবৎ থাকায় বুধবার এ রুটে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় দ্বীপে বেড়াতে এসে দেড় হাজারের মতো পর্যটক আটকা পড়েছিলেন।

কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন, বজ্রমেঘের ঘনঘটা বৃদ্ধির কারণে সমুদ্র উত্তাল রয়েছে। এ জন্য ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত জারি আছে। ফলে বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত সমুদ্রবন্দরগুলোকে সবধরনের নৌযান বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

তিনি বলেন, ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত থাকা অবস্থায় যেকোনোভাবেই টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজসহ সকল নৌযান চলাচল বিপজ্জনক। এই রুটে কোনো জাহাজ চলাচল করলে, যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা রয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) টেকনাফ অঞ্চলের পরিদর্শক (পরিবহন) মোহাম্মদ হোসেন বলেন, ৩ নম্বর সতর্ক সংকত থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে টেকনাফ-সেন্টমাটিন নৌরুটে পর্যটকবাহী জাহাজসহ সকল প্রকার নৌযান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবুও কীভাবে পর্যটক বহন করে চারটি জাহাজ সেন্টমার্টিন গেল, বিষয়টি রহস্যজনক।

তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে শুনেছি জাহাজগুলো স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে দ্বীপে গেছে। তবে যাওয়ার সময় যাত্রীপরিবহনের বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

টেকনাফ উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রবিউল হাসান বলেন, টেকনাফ থেকে খালি জাহাজ যাওয়ার অনুমতি দেয়া হয়েছে। তবে কোনো জাহাজ যদি চুরি করে যাত্রী বহন করে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। শুক্রবারও এই রুটে জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকতে পারে বলে জানান তিনি।